নিউইয়র্কে মোতায়েন করা হচ্ছে অতিরিক্ত ইমিগ্রেশন এজেন্ট

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৩:৪৩

একজন অননুমোদিত অভিবাসীর গুলিতে এক ফেডারেল কাস্টমস কর্মকর্তা গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় নিউইয়র্কে অতিরিক্ত ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোএম ২২ জুলাই সোমবার এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই হামলা ছিল “সাংকচুয়ারি শহরের ব্যর্থ নীতির সরাসরি ফল”, যেখানে শহর প্রশাসন অভিবাসন সংক্রান্ত আটকাদেশ মানে না এবং অপরাধীদের জেল থেকে ছেড়ে দেয়।
ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার রাতে, জর্জ ওয়াশিংটন ব্রিজের পাশে হাডসন নদীর ধারে। সেখানে এক অফ-ডিউটি ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন কর্মকর্তা এক বন্ধুর সঙ্গে বসে ছিলেন। পুলিশ জানায়, হঠাৎ করেই দুইজন লোক স্কুটারে করে এসে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঐ কর্মকর্তা পাল্টা গুলি ছোড়েন, কিন্তু গুলিবিদ্ধ হন মুখ ও হাতে। পরে জানা যায়, সন্দেহভাজন হামলাকারী ২১ বছর বয়সী মিগুয়েল মোরাও গুলিতে আহত হয়েছেন এবং হাসপাতালে ভর্তি।
ক্রিস্টি নোএম জানান, মিগুয়েল মোরা একজন ডোমিনিকান নাগরিক যিনি ২০২৩ সালে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই চারবার গ্রেপ্তারি অভিযোগ রয়েছে—হামলা, ডাকাতি এবং অস্ত্রের মুখে ছিনতাইয়ের মতো গুরুতর অপরাধের জন্য। ২০২৪ সালের নভেম্বরে তার বিরুদ্ধে ডিপোর্টেশন আদেশও জারি হয়েছিল। কিন্তু নিউইয়র্ক সিটির ‘সাংকচুয়ারি’ নীতির কারণে তাকে আটক রাখা হয়নি। “এই ঘটনা এড়ানো যেত। এটা হয়েছে কারণ নিউইয়র্ক অপরাধীদের রাস্তায় ছেড়ে দেয়,”— বলেন নোএম।
নিউইয়র্ক সিটিতে ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে পাস হওয়া আইনের আওতায়, পুলিশ বা শহরের কোনো সংস্থা সাধারণত ফেডারেল ডিপোর্টেশন অনুরোধ মানে না—যদি না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিগত পাঁচ বছরে ১৭০টি গুরুতর অপরাধের মধ্যে অন্তত একটি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি ইত্যাদি।
এই নীতির উদ্দেশ্য ছিল অভিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভীতি না ছড়িয়ে সমাজে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এই নীতিই এখন জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
“আপনারা যদি আমাদের জেলে প্রবেশ করতে না দেন, তাহলে আমরা রাস্তায় গিয়ে অভিযানে নামব,”— বলেছেন প্রশাসনের সীমান্ত উপদেষ্টা টম হোম্যান। তিনি আরও বলেন, “আপনারা ভাবছেন আমরা চলে যাব, কিন্তু আমরা আরও বেশি কর্মকর্তা পাঠাব। ফলে ‘সাংকচুয়ারি শহরগুলো’ তাদের নিজস্ব নীতির কারণে আরও বেশি ফেডারেল নজরদারি পাবে।”
এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ১৫০ বিলিয়ন ডলারের নতুন সীমান্ত নিরাপত্তা বাজেট অনুমোদন করেছে। এতে রয়েছে ১০ হাজার নতুন অভিবাসন কর্মকর্তা নিয়োগ এবং দেশে আটক কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা।
নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এ নিয়ে বলেন, “আমাদের আইন অনুযায়ী, আমরা কী করতে পারি, তা স্পষ্ট। বিপজ্জনক অপরাধীদের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় সমন্বয় করে কাজ করি।” তবে ট্রাম্প প্রশাসন এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের মতে, অপরাধীকে আটক না করে ছেড়ে দিলে শেষমেশ সমাজই তার মূল্য চুকায়।