নেত্রকোনায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক ও মার্কসবাদী তাত্ত্বিক অধ্যাপক যতীন সরকারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ১টায় নেত্রকোনা মহাশ্মশানে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এর আগে মরদেহ রাত সোয়া আটটায় নেত্রকোনায় পৌঁছায়। এসময় সর্বজনের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ নেত্রকোনা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। এরপর রাত নয়টায় জেলা উদীচীর কার্যালয়ে ও পরে রাত দশটায় সাতপাই নিজ বাসা বাণপ্রস্থে নেওয়া হয়।
শহীদ মিনারে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, উদীচীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
বুধবার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরলোক গমন করেন অধ্যাপক যতীন সরকার। ময়মনসিংহে উদীচী কার্যালয়ে বিকেল পাঁচটায় তার সহকর্মী, ছাত্র ও ভক্তরা তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এরপর সন্ধ্যার দিকে নেত্রকোনার বাসায় নিয়ে আসা হয়।
রংপুরে জামাই-শ্বশুরকে পিটিয়ে হত্যা: ৮ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
যতীন সরকার ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট কেন্দুয়া উপজেলার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। এরপর কিছুদিন কেন্দুয়ার আশুজিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বারহাট্টা উচ্চ বিদ্যালয় ও গৌরীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। পরে ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এমএ পাস করে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে বাংলা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
অবসর গ্রহণের পর তিনি নেত্রকোনায় ফিরে আসেন। তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংসদের দুইবার সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও ময়মনসিংহের উদীচী, মুক্তবাতায়ন পাঠচক্র, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ফোরাম, শব্দ আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, অনুপ্রাস, চরৈবেতি, জলদ প্রভৃতি সংগঠনের সক্রিয় কর্মী, সংগঠক এবং অভিভাবক ছিলেন।
যতীন সরকারের লেখা প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে। প্রথম বইয়ের নাম ‘সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা’। এরপর অন্তত আরও ৭০টি বই লেখেন। যতীন সরকার স্বাধীনতা পদক (২০১০), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০০৭), ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক (১৯৬৭), খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৭), প্রথম আলোর বর্ষসেরা বই পুরস্কারসহ (২০০৫) অসংখ্য পুরষ্কার-খ্যাতি পেয়েছেন।