ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনতিবিলম্বে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। সংগঠনটির দাবি, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত করে পুনরায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম এবং অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোর কর্তৃক প্রচারিত অনুসন্ধানী রিপোর্টে ডাকসু নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির যে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপিত হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। কেননা ওই প্রতিবেদনে যে ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সুনামকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করেছে। এছাড়া ডাকসু নির্বাচনে গুরুতর অনিয়মের এই অভিযোগ ঢাবির গৌরবময় ঐতিহ্য এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চার কেন্দ্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ডাকসু নির্বাচনে যেসব ক্ষেত্রে কারচুপির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে সেসব বিষয়ে ঢাবি প্রশাসনকে অনতিবিলম্বে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে। অভিযোগগুলোকে ভুল প্রমাণ করা সম্পূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহির থেকে মনোনীত সদস্যদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। কমিটির রিপোর্টে নির্বাচনে কারচুপি ও জালিয়াতি প্রমাণিত হলে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এছাড়া বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত করে পুনরায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আর তা না হলে এই নির্বাচনটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। তাই ঢাবি সাদা দল মনে করে, ফ্যাসিবাদের আমলে অনুষ্ঠিত অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে যেমন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের মূলে কুঠারাঘাত করা হয়েছে, ঠিক তেমনি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ২০২৫ সালের ডাকসু নির্বাচনটিও ঢাবি শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার হরণের একটি প্রহসনমূলক ও কলঙ্কিত নির্বাচন হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই পাবে।