মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল কেন জরুরি

রাজীব চক্রবর্তী
  ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৩৮

শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, তারকা, রাজনীতিবিদদের অসুখ-বিসুখ, এমনকি রেগুলার চেকআপের জন্যও ব্যাংকক-সিঙ্গাপুর-ইউরোপ-আমেরিকা চলে যাওয়ার রেওয়াজ ইদানীং আরও গতি পেয়েছে। কিছু দিন আগে বিশ্ববরেণ্য ক্লাসিক্যাল আর্টিস্ট ওস্তাদ রাশিদ খান তাঁর নিজ দেশের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন, রজনীকান্ত, রাজনীতিবিদ সোনিয়া গান্ধীসহ অনেকেই নিয়মিত তাদের দেশের মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। ব্যতিক্রম শুধু আমাদের দেশে। মনে হচ্ছে, দেশের একটি শ্রেণি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। 

এর কিছু কারণ অবশ্যই আছে। বিশেষত জটিল ও দুরারোগ্য রোগের ক্ষেত্রে দেশে বড় হাসপাতাল থাকলেও এগুলো আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারছে না। ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণিও এখন জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছে। 
সচ্ছল শ্রেণির একটি অংশ দেশের বড় হাসপাতালগুলোতে ব্যয়বহুল চিকিৎসা করালেও, আরেকটি বড় অংশের রোগীর চিকিৎসা চলছে বেসরকারি ক্লিনিকে, যেগুলো চলছে মূলত নামকরা ডাক্তারের চেম্বারের ওপর ভর করে। তবে সেখানে শহরের রোগীর পাশাপাশি গ্রামগঞ্জের অসংখ্য রোগীর ভিড়। ফলে সহজে চিকিৎসক দেখানো সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই দুরূহ। অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। আবার চিকিৎসকের পূর্ণ মনোযোগ না পাওয়ার অভিযোগও অনেকে করেন।
জটিল ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা বরাবরই দীর্ঘমেয়াদি। তাই চিকিৎসা চলাকালীন রোগীর ওপর চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণ যেমন জরুরি, তেমনি চিকিৎসা চলাকালীন নিয়মিত বিরতিতে রোগীর যোগাযোগও জরুরি। এসব ক্ষেত্রে রোগীর ফলোআপের পাশাপাশি কেস হিস্ট্রি সংরক্ষণও প্রয়োজন, যা পরবর্তী সময়ে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু পুরো বিষয়টি চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারভিত্তিক ও রোগীর মর্জিমাফিক হওয়াতে নিয়মের কিছুটা ব্যত্যয় ঘটে। ফলে চিকিৎসার সুফল পেতে রোগীর দেরি হয়। তা ছাড়া মানুষের ধ্যান-ধারণা এখন এমন, সাধারণ রোগের জন্যও মানুষ সিনিয়র কনসালট্যান্টের কাছে যাচ্ছে। ফলে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকগণ চেম্বারে অত্যধিক রোগীর চাপে জটিল রোগীকে স্বাভাবিকভাবেই আলাদাভাবে যথেষ্ট সময় দিতে পারছেন না।