জ্যাকসন হাইটসে `বাংলাদেশ সোসাইটি' অফিস স্থানান্তরের পরিকল্পনা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪১

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটিকে আরো গণমুখী করতে সোসাইটির অফিস এলমহার্স্ট থেকে জনবহুল জ্যাকসন হাইটসে প্রতিষ্ঠার চিন্তা ভাবনা চলছে। এব্যাপারে সোসাইটির শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তারা ঐক্যমত বলে জানা গেছে। সোসাইটির বর্তমান অফিস ভাড়া দিয়ে সেই ভাড়ার অর্থেই জ্যাকসন হাইটসে সুন্দর অফিস পরিচালনা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা মনে কর ছেন।
জানা যায়, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সোসাইটি প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন তৎকালীন সভাপতি-সম্পদকের বাসার লিভিং রুম থেকেই সোসাইটির কর্মকান্ড পরিচালিত হতো। এরপর কুইন্সে ভাড়ায় অফিস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বছরের পর বছর সোসাইটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিলো। পরবর্তীতে ২০০১-২০০২ সালের দিকে ৮৬-২৪ উইটনী এভিনিউ, এলহার্স্ট, নিউইয়র্ক ঠিকানায় বেসমেন্ট সহ দ্বিতল ভবন ক্রয় করে বেসমেন্ট ও ফাস্ট ফ্লোর ভাড়া দিয়ে ভবনটির সেকেন্ড ফ্লোর অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে নির্ধারিত সভা-সমাবেশ ছাড়া সোসাইটি অফিস কার্যত বন্ধই থাকে। এক সময় উইকেন্ডে বাংলা স্কুল নিয়মিত পরিচালিত হলেও পরবর্তীতে তা বন্ধ হয়ে যায়। সোসাইটি ভবনটি লাভজনক সম্পত্তি হলেও সচেতন প্রবাসীদের মতে সোসাইটি অফিস যেভাবে সরগরম থাকা উচিৎ, কার্যত তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। আর অফিসটি এমন জায়গায় অবস্থিত যেখানে যাতায়াত আর পার্কিং সমস্যাও প্রকট। ফলে অনেকেই সোসাইটি অফিসে যাতায়াত করতে চান না। আবার সদস্যদের সোসাইটি অফিস মুখী করার তেমন কোন কার্যকর উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না। এনিয়ে কমিউনিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও লক্ষনীয়।
এব্যাপারে বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ১৯৯৮সাথে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রথম দায়িত্ব নেয়ার সময় শূন্য ফান্ড ছিলো। তখনকার সভাপতি ডা. মোহাম্মদ হামিদুজ্জামানের নেতৃত্বে আমরা নিউইয়র্ক সিটির লং আইল্যান্ড সিটিতে (এস্টোরিয়া) প্রথম অফিস ভাড়া নেই। পরবর্তীতে আমরা ‘বাংলাদেশ হাউজ প্রজেক্ট’ গ্রহণ করি সোসাইটির ভবন ক্রয়ের জন্য ৩৪ হাজার ডলারের ফান্ড সংগ্রহ করে বিদায় নেই। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ভবন ক্রয়ের জন্যই ‘বাংলাদেশ হাউজ প্রজেক্ট’ গ্রহণ এবং এর জন্য রেজুলেশন করে পৃথক হিসাব খোলা হয়। কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অনুদান আর ফান্ড রেইজ করে ঐ অর্থ সংগ্রহ করা হয়। ফখরুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ হাউজ প্রজেক্ট’-এর পথ ধরেই পরবর্তীতে এলমহার্স্টে সোসাইটি ভবন ক্রয় করা হয়।
ফখরুল আলম বলেন, সোসাইটি ভবন সংগঠনের জন্য অ্যাসেট। তবে ভবনটি সোসাইটির জন্য লাভজনক হলেও সোসাইটি অফিসটির সাথে কমিউনিটির যোগাযোগ বাড়ছে না। যে কারণে অনেকে মতে সোসাইটি গণমুখী হচ্ছে না। তিনি মনে করেন এলমহার্স্টের অফিসটি ভাড়া দিয়ে সেই অর্থে জনবহুল জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি অফিস ভাড়া নিয়ে পরিচালিত করলে সোসাইটি আরো গণমূখী হবে।
এ ব্যাপারে সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, সোসাইটির ভবন ক্রয় ভালো সিদ্ধান্ত এবং এটি এখন সোসাইটির অ্যাসেট। তবে সোসাইটি অফিস জমজমাট করতে বর্তমান কার্যকরী কমিটির কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। এজন্য বাংলা স্কুল জোরদারের পাশাপাশি নিয়মিত ইমিগ্রেশন আর জব সেমিনার আয়োজন করা যেতে পারে। প্রয়োজনে কোন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করে বা তাদের রিপ্রেজেন্টটেভিদের সাথে কথা বলে সোসাইটিকে কমিউনিটির দৌড়গোড়ায় নিতে হেলথ সার্ভিস দেয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে সোসাইটির অফিস ভাড়া দিয়ে জ্যাকসন হাইটসের ব্যস্ত এলাকায় একটি অফিস নেয়া যেতে পারে। এতে কমিউনিটির সাথে সোসাইটির যোগাযোগ আরো বাড়বে। কেননা, জ্যাকসন হাইটস এলাকা কমিউনিটির প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ২৪ ঘন্টাই জ্যাকসন হাইটস এখন সরগরম। নানা প্রয়োজনে হাজারো মানুষ প্রতিদিন জ্যাকসন হাইটসে আসনে, ফলে তারা প্রয়োজনে সোসাইটিসে যোগাযোগ করতে পারেন। এতে কার্যকরী পরিষদের কর্মকর্তাদের কর্ম তৎপরতাও বাড়বে।