গ্রিনকার্ড, ট্রাভেল পাস, বাংলাদেশি পাসপোর্ট সবই আছে- এর পরও অনেক প্রবাসী ভয়ে দেশে যাচ্ছেন না। তাদের শঙ্কা- আমেরিকা থেকে বের হওয়ার পর যদি আর ফিরতে না পারেন। বিমানবন্দরে সেকেন্ড কোশ্চেনিংয়ের মুখে পড়লে যদি সব প্রশ্নের জবাব দিতে না পারেন, তাহলে বিপদ হতে পারে। এমনকি গ্রিনকার্ড বাতিলও হতে পারে। ফলে অন্যান্য বছরের চেয়ে চলতি বছর বাংলাদেশে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা কম হতে পারে। কারণ এখনো অনেকেই সামারের টিকিট কিনছেন না। অনেকেই দেশে কোরবানি ঈদ করার জন্য সামারের ছুটিতে যান। এবার এসব যাত্রীও কম হতে পারে।
অ্যাটর্নি ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা সত্য তথ্য দিয়ে নিয়ম মেনে বৈধভাবে গ্রিনকার্ড পেয়েছেন, তারা যদি কোনো অপরাধ ও আইন ভঙ্গ না করে থাকেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী অভিবাসীর মর্যাদা বজায় রাখেন, তাহলে তাদের কোনো সমস্যা হবে না। তারা যেকোনো সময় দেশে যেতে বা এ দেশে আসতে পারবেন। তবে কেউ অসত্য তথ্য দিয়ে গ্রিনকার্ড পেয়ে থাকলে এবং ধরা পড়লে তার সমস্যা হতে পারে। যারা এ দেশের অভিবাসী হওয়ার জন্য গ্রিনকার্ড পেয়েছিলেন কিন্তু সেটি পাওয়ার পর এখানে নিয়মিত না থেকে বছরে যখন তার প্রয়োজন এ দেশে আসেন এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেন, তারা বিপদে পড়তে পারেন। যারা কেবল গ্রিনকার্ডের স্ট্যাটাস ধরে রাখা ও সুবিধা নেওয়ার জন্য আসেন, তারা সেকেন্ড কোশ্চেনিংয়ের মুখে পড়তে পারেন। সঠিক উত্তর দিতে না পারলে গ্রিনকার্ড বাতিল হতে পারে।
এ ব্যাপারে বাংলা ট্রাভেলসের সিইও ও প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বি হোসেন বলেন, আমরা টিকিট কাটছি, কোনো সমস্যা হচ্ছে না। যারা অপরাধ করেছেন, তাদের কথা ভিন্ন। সাধারণ মানুষের কোনো সমস্যা নেই। তবে অনেকেই পরিস্থিতি বিবেচনা করছেন।
অ্যাটর্নি খায়রুল বাশার বলেন, একটা সময় ছিল যখন অনেক মানুষই মনে করতেন গ্রিনকার্ড আছে তিনি যেকোনো সময় আমেরিকায় আসতে পারবেন, দেশে ফিরতে পারবেন। এভাবেই স্ট্যাটাস ধরে রাখতে পারবেন। হয়তো বছরে এক-দুবার স্ট্যাটাস ধরে রাখার জন্য আসতেন। তাদেরকে এখন এই অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। এখানে তিনি স্থায়ী বাসিন্দা- এটা তাদেরকে প্রমাণ করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে থাকেন- সেটাও প্রমাণ করতে হবে। যারা অপরাধ করেছেন, যারা এ দেশে অ্যাসাইলাম কেসের মাধ্যমে গ্রিনকার্ড পেয়েছেন কিংবা ট্রাভেল ডকুমেন্ট রয়েছে- এসব স্ট্যাটাসের মানুষেরা যদি তার দেশে যান এবং ফিরে আসেন, তারা সমস্যায় পড়তে পারেন। কারণ তিনি বলেছেন নিজ দেশে তার জীবনহানির শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে এই দেশে আশ্রয় চেয়েছেন। আশ্রয় পাওয়ার প্রক্রিয়া চলাকালে কিংবা পাওয়ার পরপরই দেশে গিয়ে নিরাপদে ফিরে এলে এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, যিনি জীবনহানির কথা বলে গ্রিনকার্ড নিলেন, তিনি কীভাবে দেশে গিয়ে আবার নিরাপদে ফিরে এলেন।