বাংলাদেশ সোসাইটির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিদায়ী কমিটির নানা গড়মিল 

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:২০

বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী কমিটি ও বোর্ড অব ট্রাস্টির যৌথ সভা গত ১২ জানুয়ারী রোববার দুপুরে সোসাইটির নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম। সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীর পরিচলনায় সভায় অন্যান্যের মধ্য উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টির অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ আক্তার হোসেন, আজিমুর রহমান বোরহান, মোহাম্মদ এমদাদুল হক কামাল, আব্দুল হাসিম হাসনু, ওয়াসি চৌধুরী, মোহাম্মদ শাহজাহান সিরাজী ও মোহাম্মদ আতরাউল আলম এবং  কার্যকরী কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডিউক খান, জনসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জামিল আনসারী, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটন, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান (জিলানী), কার্যকরি সদস্য জাহাঙ্গীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মোহাম্মদ সিদ্দিক পাটোয়ারী, মুনসুর আহমদ ও হাছান খান।
সভা শুরু হয় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে তেলাওয়াত করেন সমাজকল্যাণ সম্পাদক জামিল আনসারী। এ সময় সোসাইটির প্রয়াত সকল কর্মকর্তা ও প্রয়াত প্রবাসীদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।
সভায় কার্যকরী কমিটির উপস্থিত কর্মকর্তাদের বোর্ড অব ট্রাস্টির উপস্থিত সদস্যদের সাথে পরিচয়ে করিয়ে দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। এরপর উপস্থিত বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যদের কার্যকরী কমিটির সদস্যদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন সংগঠনের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম। এসময় একে অন্যের সাথে পরিচিত হন এবং সবাই সবার সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কুশল বিনিময় করেন।
পরিচয় পর্ব শেষে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম বলেন, আজকের এই যৌথ সভার মূল উদ্দেশ্য হলো নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের সাথে বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, আমরা দায়িত্বগ্রহণ করেছি অল্প দিন হলো। বিদায়ী কমিটির কাছ থেকে কি পেলাম এবং  বর্তমান পরিস্থিতি কি এর সবকিছু বোর্ড অব ট্রাস্টিকে অবহিত করা।
সভাপতির বক্তব্যের পর সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সিনিয়র সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান ছাড়াও কার্যকরী পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত সবাইকে বিদায়ী কমিটির (২০২৩-২০২৪) নানা কর্মকান্ডে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কার্যকলাপ পরিলক্ষিত হয়েছে তা অবহিত করেন। এছাড়া অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নানা গড়মিল পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বিদায় কমিটির কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণের সময় অনেক কিছু সঠিকভাবে বুঝে পাননি বলে তারা সবাইকে অবহিত করেন। একই সাথে নানা অসঙ্গতির কথাও সভায় তুলে ধরা হয়। কবর এবং ব্যাংক খাতে লেনদনে অনেক গরমিল রয়েছে বলেও সভাকে অবহিত করেন তারা।
সভায় বলা হয়যে, গত ১৬ ডিসেম্বর নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে বিদায়ী কোষাধক্ষ্য নওশাদ হোসেন তার দেয়া বক্তব্যে সবাইকে অবহিত করেন যে, ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ডলার সংগঠনের ফান্ডে রেখে যাচ্ছেন। তবে নতুন কোষাধক্ষের কাছে ব্যাংক ট্রান্সফার ও হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার সময় টাকার পরিমাণে ব্যাপক গরমিল পাওয়া যায়। বিশেষ করে গঠনতন্ত্রের তক্কা না করে বিদায়ী কমিটির কর্মকর্তারা অভিষেকের দিন ১৬ ডিসেম্বর ২ লক্ষ ৪০ হাজার ডলার ব্যয় করে ৩৬০ টি কবর কিনেন যা এখনো পর্যন্ত ব্যবহার উপযোগী নয়।
সভায় সোসাইটির শীর্ষ কর্মকর্তরা বলেন, সোসাইটির বিগত দিনের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। বর্তমান কমিটি যে গড়মিল পেয়েছে তার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হলে বিদায় কমিটি কাছ থেকে জানতে হবে।
পরবর্তীতে বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যরা এব্যাপারে তাদের বক্তব্য ও মতামত তুলে ধরেন এবং বলেন সোসাইটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বড় ধরনের কোন অর্থ খরচ করতে হলে অবশ্যই বোর্ড অব ট্রাস্টির মতামত এবং অনুমতি নিতে হয়। কবর ক্রয়ের বিষয়ে সে ধরনের কোন কিছুই বিগত কমিটি করেনি। তারা বলেন, সোসাইটিকে জবাবদিহিতামূলক সংগঠন করতে হলে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
পরবর্তীতে সকলের মতামতের ভিত্তিতে একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হয়। যে কমিটি আগামী ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে বিদায়ী কমিটির কাছ থেকে এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানতে চাইবে একই সাথে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে। কমিটির সদস্যরা হলেন- বোর্ড অব ট্রাস্টির অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ আক্তার হোসেন ও আজিমুর রহমান বোরহান এবং কার্যকরী কমিটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন দেওয়ান, আবুল কালাম ভুঁইয়া, মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া রুমি, রিজু মোহাম্মদ এবং পদাধিকার বলে সংগঠনের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী এ কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন।