
নিউইয়র্কের রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের কাজের গৌরবজনক ফলাফল পাওয়া গেছে। নব নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির হালনাগাদ ঘোষিত ট্রানজিশন টিমে ৯ জন বাংলাদেশির অন্তর্ভুক্তির খবর পাওয়া গেছে। মার্কিন রাজনীতিতে বাংলাদেশিরা কমিউনিটি হিসেবে এবারই এমন ধর্তব্যের স্বীকৃতি প্রথমবারের মতো পেয়েছেন।
তালিকায় বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছে নাগরিক আন্দোলনের নেত্রী কাজী ফৌজিয়া, জনসংগঠক আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল হক, জনসংগঠক মোহাম্মদ করিম চৌধুরী, ফারিরা আক্তার, আরমান চৌধুরী, শাহ রেহমান, তাজিন আজাদ এবং শ্যামতলী হক। ৪০০ জনের অধিক নামের তালিকায় অন্য কোনও বাংলাদেশি থাকলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের চিহ্নিত করা যায়নি। বাংলাদেশিরা নিজ নিজ যোগ্যতায় ট্রানজিশন টিমের গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোতে স্থান পেয়েছেন বলেই দেখা গেছে।
৪০০ জনের তালিকা ধরে বাংলাদেশি ও দক্ষিণ এশীয়দের নাম চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৯ জন বাংলাদেশি, ১১ জন পাকিস্তানি এবং ১৬ জন ভারতীয়কে চিহ্নিত করা গেছে। ভারতীয় এবং পাকিস্তানিদের মধ্যে রয়েছেন ১০ জন পাঞ্জাবি, ৪ জন ইন্ডো-কারিবিয়ান ছাড়াও ইমরান পাশা নামের একজন রয়েছেন।
মামদানির অফিসিয়াল টিমে ৯ জন বাংলাদেশি অন্তর্ভুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র স্বদেশীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও আনন্দ দেখা দিয়েছে। অন্তর্ভুক্ত টিমে পরিচিতজনদের তারা ব্যাপকভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক কাজী ফৌজিয়া তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, বাংলাদেশিরা খুশী হয়েছেন দেখে ভালো লাগছে। তবে যেসব লক্ষ্য নিয়ে মামদানি নির্বাচিত হয়েছেন, সেসব লক্ষ্য অর্জনে একজন কর্মি হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট থাকবেন বলে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানালেন। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল হক তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, নিজের পেশাগত অভিজ্ঞতা ও জনসম্পৃক্ততাকে কাজে লাগিয়ে নিউইয়র্ক সিটির মানুষের জীবন মান উন্নয়নে মেয়র মামদানির প্রয়াসে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেছেন। নিষ্ঠার সাথে এ দায়িত্ব পালনের সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
২৪ নভেম্বর জোহরান মামদানি এবং তার ট্রানজিশন টিম ঘোষণা করেছেন ৪০০ এর বেশি নিউইয়র্কবাসীর নাম। যারা আসন্ন প্রশাসনকে সিটির জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত করতে সহায়তা করবেন। এই চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে বাড়ির ভাড়া বৃদ্ধি, চাইল্ড কেয়ারের ব্যয়, পরিবহন সুবিধা, ব্যবসায় উন্নয়ন এবং জরুরি প্রস্তুতি। এই কমিটি সদস্যরা পার্সোনেল নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করবেন এবং নীতিমালা তৈরি, বাস্তবায়ন এবং এজেন্সি সেরা চর্চা সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবেন।
মামদানি বলেছেন, “কঠোর পরিশ্রমের প্রতি ভালোবাসা, নিউইয়র্ক সিটির সম্ভাব্যতায় গভীর বিশ্বাস এবং নিউ ইয়র্কবাসীর চাওয়া সাশ্রয়ী নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতি আমাদের ট্রানজিশন কমিটিগুলোর ৪০০ এর বেশি বিশেষজ্ঞকে একত্রিত করেছে। তারা আমাদেরকে শীর্ষ প্রতিভা নিয়োগে এবং বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ নীতি বিকাশে সহায়তা করবে, যাতে আমরা ১ জানুয়ারি থেকে কার্যক্রম শুরু করার সময় ফলাফলগুলিকে প্রতিশ্রুতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে পারি।”
ট্রানজিশন কমিটি সমন্বয় করবেন লিনা খান, গ্রেস বোনিলা, মারিয়া টরেস-স্প্রিংগার এবং মেলানি হার্জগ। এই কো-চেয়াররা ৫০ বছরেরও বেশি সম্মিলিত অভিজ্ঞতা নিয়ে নিশ্চিত করবেন যে কমিটি প্রশাসনের মূল মান অনুযায়ী ফলাফল দিচ্ছে।
কমিটিগুলো বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে জরুরি বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দেবে—হাউজিং, চাইল্ডকেয়ার, পরিবহন—এবং সরকারের প্রয়োজনীয় কার্যাবলী সম্পাদন করবে। ১৭টি কমিটির মধ্যে দুটি সম্পূর্ণ নতুন: ওয়ার্কার জাস্টিস এবং কমিউনিটি অর্গানাইজিং কমিটি, যা প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।
কমিটি অন আর্টস অ্যান্ড কালচার: হিবা আবিদ, ডঃ এলিজাবেথ আলেকজান্ডার, সুরূশ আলভি, জেসিকা বেকার, অ্যালেক্সিস বিটার, রকি বুকানো, গনজালো কাসালস, ক্যারোলিন কনসেপশন, কলম ডিলেন, কিমবারলি ড্রু, আতিবা এডওয়ার্ডস, কামিলা ফরবস, লিসা গোল্ড, জেনা হামেদ, কেমি ইলেসানমি, ওয়েস জ্যাকসন, রুবা কত্রিব, কোকো কিলিংসওয়ার্থ, মিনো লোরা, প্যাট্রিসিয়া ম্যাকগ্রেগর, লিডিয়া পিলচার, ভিক্টোরিয়া রজার্স, হাল রোজেনব্লুথ, লেগ্যাসি রাসেল, কেনি সাবোকা, হান্না ট্রাওরে, দিয়া বিজ, ডেনিস ওয়ালকট।
কমিটি অন কমিউনিটি অর্গানাইজিং: শেরিফ আহমেদ, ইব্রাহিম আহমেদ, আব্দুল আজিজ, জিয়ানপাওলো বায়োক্কি, লুমুম্বা বানডেলে, মার্কো ক্যারিয়ন, কেটি ফায়ারম্যান, জোয়ান গ্রেল, জ্যাসমিন গ্রিপার, সুমাথি কুমার, জুয়ানিতা লুইস, আজি ফান্তা মারেনাহ, সান্তোষ নন্দবালান, অ্যানথোনিন পিয়েরে, আশার রস, ওয়ান্ডা সালামান, ওয়ালীদ শাহিদ, জাগপ্রিত সিং, সেলিনা সু, কেটি আঙ্গার, জুলি জু।
কমিটি অন কমিউনিটি সেফটি: কে বেইন, জনাহ বয়ারিন, জ্যাসমিন বাডনেলা, এরিকা ফোর্ড, কাসান্দ্রা ফ্রেডেরিক, রেভ. চার্লস গ্যালব্রেথ, ড্যানিয়েলা গিলবার্ট, এলিজাবেথ গ্লেজার, শামসুল হক, টম হ্যারিস, রডনি কে. হ্যারিসন, সুসান হারম্যান, রামা ইসা-ইব্রাহিম, জু-হিউন কাং, কেভিন লিভিংস্টন, জোসে লোপেজ, টামিকা ম্যালোরি, ম্যাক্স মার্কহাম, হাসান নাভিদ, জাস্টিন ওল্ডারম্যান, ডানা র্যাচলিন, মারিয়েলা রুইজ অ্যাঞ্জেল, মোরিস ভ্যান, অ্যালেক্স ভিটালে, জো-অ্যান ইউ, কেন জিমারম্যান।
কমিটি অন ক্রিমিনাল লিগ্যাল সিস্টেম: ড্যান অ্যাডেস, র্যাচেল বেডার্ড, আনা বারমুডেজ, সারিতা ডাফার্টি, মেগ ইগ্যান, অ্যালিস ফন্টিয়ার, বেঞ্জামিন হেলার, মাইকেল জ্যাকবসন, জাকারি ক্যাটজনেলসন, মাইকেল ক্লিঙ্গার, স্কট লেভি, মাইসুন লিনেন, ডেব লোলাই, জানোস মার্টন, লিসা ওহটা, মেঘনা ফিলিপ, অ্যাঞ্জেলো পিন্টো, মেগ রেইস, ভিনসেন্ট স্কিরাল্ডি, জর্ডান স্টকডেল।
কমিটি অন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ওয়ার্কফোর্স ডেভেলপমেন্ট: মার্গারেট আনাডু, ডেয়ানিরা ডেল রিও, মার্ক এগারম্যান, গুস্তাভো গর্ডিলো, জ্যাক গ্রস, ড্যারিক হ্যামিল্টন, রিড জর্ডান, স্টেফানি লুস, রিচ মারোকো, গ্রেগরি মরিস, রেজিনা মায়ার, লারিসা অর্টিজ, জেমস প্যাচেট, এমা পফোম্যান, ব্লন্ডেল পিনকক, জেফ লি, ইয়াসের সেলেম, অনিশা স্টিফেন, জুলি স্টেইন, ক্যাথি ওয়াইল্ড।
কমিটি অন ইমার্জেন্সি রেসপন্স: অ্যান্ডি আনসব্রো, অ্যান বিংক, জিল আইজেনহার্ড, পিটার গুদাইটিস, আয়ো হারিংটন, জনাথন লোগান, কেলি ম্যাককিনি, ড্যানিয়েল নিগ্রো, মাইকেল পার্টিস, জো পোটাসনিক, ক্রিস স্মিথ, জিলি স্টেফেন্স, ডরিন থোম্যান-হাউ, ভিনসেন্ট ভারিয়ালে, জ্যানেট টোরেস।
কমিটি অন ইমিগ্রান্ট জাস্টিস: জিসাস আগুয়াইস, ফাহদ আহমেদ, ফারিহাহ আখতার, ইমাম শামসি আলী, ডঃ ডেবি আলমন্টাসার, মোহাম্মদ কিউ আমিন, নাটালিয়া আরিস্টিজাবাল, মুরাদ আওয়াডে, আদামা বাহ, মেলিসা চুয়া, রোজা কোহেন-ক্রুজ, স্টেফানি ডেলিয়া, ইয়াসমিন ফারহ্যাং, এমিরা হাবিবি, মারওয়া জানিনি, আমাহা কাসা, জেসন ক্লেইন, পিটার মার্কোভিটজ কার্ডোজো, ইয়েসেনিয়া মাটা, জোসেলিন ম্যাকক্যলা, ক্রিস্টিন মেন্ডোজা, রুথ মেসিঞ্জার, ফ্র্যাঙ্কি মিরান্ডা, বিটা মোস্তফি, অ্যানেটা সীচারান, ছায়া সিডিসি, র্যাচেল টাইমনর।