জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রকাশ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এর প্রতিবাদে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। ২৯ অক্টোবর (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিলটি শুরু করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তামিম স্রোত। এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত-শিবির গণহত্যার সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করেছে। তেমনি আওয়ামী লীগ সরকারেরও অতীতে বিভিন্ন গণআন্দোলন দমনের ইতিহাস রয়েছে। তবে জামায়াত-শিবিরের হাতে ৭১ সালের রক্তের দাগ এখনো রয়ে গেছে, যা কোনোভাবে অস্বীকার করা যায় না। আশির দশকে শিবির বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়েছে। এখন আবার তারা পুনর্বাসিত হওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু এ দেশের ছাত্রসমাজ তা মেনে নেবে না।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় বলেন, যারা ১৯৭১ এবং ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সত্যকে অস্বীকার করবে, জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না। আজকের শিবিরের প্রেস রিলিজে মিথ্যাচার করা হয়েছে। অতীতে তারা দিপু-কবির হত্যাকাণ্ড ও সশস্ত্র আক্রমণের জন্য কখনো ক্ষমা চায়নি। শিবিরকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বা শ্রমিক অধিকারের জন্য আন্দোলনে দেখা যায় না। তারা বরং রাজনৈতিক বিভাজনের রাজনীতি করে।
তিনি আরও বলেন, যে কোনো সংগঠন যদি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হতে চায়, তাদের আগে বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসতে হবে। এই বিচার হতে পারে সামাজিক কিংবা আইনি। কিন্তু তাদের ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, জাকসু সচলসহ ক্যাম্পাসে সব দলের অংশগ্রহণে সুস্থধারার রাজনীতির দাবি জানিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রশিবির। এতে প্রায় ৩৫ বছর পর জাবিতে ফের প্রকাশ্যে এল সংগঠনটি। সর্বশেষ ১৯৮৯ সালে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে রাজনীতি করেছে ছাত্রশিবির।