তাজউদ্দীন কলেজের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল

শিক্ষা ডেস্ক
  ০২ জুন ২০২৫, ২২:১২

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ’-এর নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কলেজটির নাম ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’ হিসেবে পরিবর্তনের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তা আর কার্যকর হচ্ছে না।
নাম পরিবর্তনের খবরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সরব হন তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ। তিনি প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করেন। সোমবার (২ জুন) বিকেলে নাম পরিবর্তন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, গত কয়দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাজউদ্দীন আহমদ কলেজের নাম পরিবর্তন বিষয়ে আমাকে ট্যাগ করে পোস্ট দিয়েছেন, যদিও এটা আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয় না। মন্ত্রণালয়ের কাজে ট্যুরে থাকায় এই বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারিনি। আজকে শিক্ষা উপদেষ্টা আবরার ভাইয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার সুযোগ হয়। উনি স্পষ্ট বলেছেন, তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজের নাম পরিবর্তন না করার জন্য ইতোমধ্যেই নির্দেশনা দিয়েছেন। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে।
তিনি আরও লেখেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের নায়কদের ব্যাপারে আমাদের শ্রদ্ধাও সেরকমই। মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই কোনো বিপরীতধর্মী বিষয় না। যে গণতান্ত্রিক, জুলুমহীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেটা বাস্তবায়ন হয়নি বলেই জুলাই এসেছিল এ বাংলাদেশে।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পোস্টে উল্লেখ করেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ আর জুলাইকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায় তাদের উদ্দেশ্যই হলো মুক্তিযুদ্ধের আড়াল নিয়ে ১৬ বছরের অপকর্ম ঢাকা। কিন্তু সত্য হলো- এ মুক্তিযুদ্ধের চাদরে ঢাকা যাবে না গুমের শিকার শত শত পরিবারের আহাজারি, বিডিআর কার্নেজ, ব্যাংক লুট, ভোট, গুম, আর হাজারে হাজার সরকারি খুন।
কাপাসিয়ায় অবস্থিত এই কলেজটি তাজউদ্দীন আহমদের নামে নামকরণ করা হয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কলেজটির নাম পরিবর্তনের একটি প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করতে গেলে তা নিয়ে জনমত, রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে পুনর্বিবেচনার আওতায় রয়েছে এবং তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজের নাম পরিবর্তন আপাতত বাতিল করা হয়েছে।