শিক্ষা-স্বাস্থ্যে শিগগির বিশেষ বিসিএস, পদ সাড়ে ৩ হাজারের বেশি

প্রস্তুতি নিচ্ছে পিএসসি
শিক্ষা ডেস্ক
  ১২ মে ২০২৫, ২২:০০

দেশের ৬৬৩টি সরকারি কলেজে গড়ে ২৫ শতাংশ শিক্ষক পদ শূন্য। স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও প্রায় তিন হাজার শূন্যপদ রয়েছে। দুই খাতে জনবল সংকট প্রকট। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে লোকবল নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এরই মধ্যে বিশেষ বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এজন্য সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠান একটি নিয়োগ বিধি তৈরি করেছে। এ বিধি অনুমোদনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে শিগগির বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে।
পিএসসি সূত্র বলছে, এরই মধ্যে শূন্য পদের চাহিদা নেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার শূন্যপদের তথ্য পাওয়া গেছে। এ চাহিদা আরও বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে বিশেষ বিসিএসে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পদে প্রায় চার হাজার ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিশেষ বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের (ক্যাডার শাখা) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মাসুমা আফরীন। তিনি বলেন, যে কোনো নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন বিধি তৈরি করতে হয়। বিশেষ বিসিএসের ক্ষেত্রেও নিয়োগ বিধি করার প্রয়োজন হয়। আমরা এরই মধ্যে একটি বিধি করেছি।

মাসুমা আফরীন বলেন, সেটি (নতুন বিধি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর বিশেষ বিসিএসের কার্যক্রম শুরু করা হবে। তবে পদসংখ্যা কত হবে, তা নিয়ে এখনই জানাতে রাজি হননি পিএসসির এ কর্মকর্তা।

পদসংখ্যা কত হতে পারে
পিএসসির কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষা ক্যাডারে ৬৮৩ জন প্রভাষক নিয়োগের চাহিদা তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পেয়েছেন। এ সংখ্যা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে আরও বাড়তে পারে বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে।
একইভাবে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য তিন হাজার ৩০টি শূন্যপদের তথ্য পেয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জনপ্রশাসনে দেওয়া হয়েছে। পরে সেটি পিএসসিকে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেখানেও পরে পদসংখ্যা বাড়তে পারে বলে উল্লেখ রয়েছে।
পিএসসির সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত তিন হাজার ৭১৩টি শূন্য পদের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আমরা জেনেছি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় পর্যন্ত আরও কিছু চাহিদা আসতে পারে। সেই হিসাবে বিশেষ এ বিসিএসে প্রায় চার হাজার শূন্যপদে বিজ্ঞপ্তি হতে পারে।

৬ মাসে বিশেষ বিসিএস শেষ করার পরিকল্পনা
বিশেষ বিসিএসগুলো দ্রুততম সময়ে শেষ করা হয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের জন্য এ বিশেষ বিসিএস চলতি বছরের মধ্যেই শেষ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। জুনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারলে ছয়মাস সময় পাবে পিএসসি। এ সময়ের মধ্যে বিশেষ বিসিএসের সব প্রক্রিয়া শেষ করে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করার রোডম্যাপ তৈরি করা হচ্ছে।
পিএসসির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, এর আগে এক বছরের কম সময়েও বিশেষ বিসিএস শেষ করার নজির রয়েছে। আমরা ছয় মাসে সেটি করতে চাই। এটা সম্ভব। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগের বিধি চূড়ান্ত করে দিলে কমিশন সভায় বিশেষ বিসিএস শেষ করার রোডম্যাপ তৈরি করা হবে। প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে যে, চলতি বছরের মধ্যেই শেষ করা হবে, অর্থাৎ ছয় থেকে সাত মাস সময় প্রয়োজন হবে।