আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছে একদল পরীক্ষার্থী। এ দাবি আদায়ে তারা আন্দোলনে নামার ঘোষণাও দিয়েছেন। তবে কিছু পরীক্ষার্থীর এ দাবি অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করা অভিভাবকদের সংগঠন ‘অভিভাবক ঐক্য ফোরাম’।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু ও সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।
বিবৃতিতে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের নেতারা বলেন, সরকার ঘোষিত ১০ এপ্রিলের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী আয়োজন করতে হবে। কারণ বারবার পরীক্ষার তারিখ ও রুটিন পরিবর্তন করলে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এর ফলে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তারা বলেন, কতিপয় শিক্ষার্থী পরীক্ষা পেছানোর অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক দাবি নিয়ে তথাকথিত অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। আমরা তাদের এ ঘোষণা প্রত্যাহার করে পরীক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফিরে গিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের নেতারা আরও বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ও ফ্যাসিস্ট সরকার উৎখাতের আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই লেখাপড়ার ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার জন্য কোনো ব্যবস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয় নেয়নি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি শিক্ষা উপযোগী হওয়ায় দ্রুত সময়ে সিলেবাস শেষ করে পূর্বের নির্ধারিত তারিখে পরবর্তী সব এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। প্রকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া আর কখনোই যাতে কোনো পাবলিক পরীক্ষা পেছানো না হয়, সে বিষয়ে শিক্ষাবোর্ডের পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পরীক্ষা যতবার পেছনো হয়, অভিভাবকদের তত আর্থিক কষ্ট হয় উল্লেখ করে তারা বলেন, এটা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপলব্ধি করতে হবে। খোঁড়া যুক্তিতে কোনোভাবেই এসএসসি পরীক্ষা পেছানো যাবে না।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকালে ‘এসএসসি পরীক্ষার্থী ২০২৫’-এর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা একমাস পেছানো এবং প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষার মাঝে ৩-৪ দিন বিরতি রাখার দাবি তুলে ধরেন পরীক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে ১৯ লাখ ২৮ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীর ভালোভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। ঈদের পরপরই পরীক্ষা হওয়ায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে ফল বিপর্যয় হতে পারে। তাই একমাস সময় দিলে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবেন তারা।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা আরও উল্লেখ করেন, এপ্রিল ও মে মাসে প্রচণ্ড গরম পড়ে। গরমে একটানা পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। গরমের মধ্যে টানা পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়বে। এছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার কেন্দ্রও দূরে। তাই প্রত্যেক পরীক্ষায় তিন থেকে চারদিন বন্ধ দিয়ে নতুন রুটিন করতে হবে।
শিক্ষাবোর্ডগুলোর প্রকাশিত সময়সূচি অনুযায়ী- আগামী ১০ এপ্রিল থেকে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৯ লাখ ২৮ হাজার ২৮১ জন পরীক্ষার্থী।
৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষার লিখিত বা তত্ত্বীয় অংশ শেষ হবে ১৩ মে। আর মাদরাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলের লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১৫ মে। এরপর ২২ মে পর্যন্ত চলবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।