নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ভয়ঙ্কর মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, শিক্ষাক্রমের অংশ নয়, প্রশিক্ষণেরও অংশ নয়, এমন ভিডিওসহ বিভিন্ন বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ব্যাপকভাবে মিথ্যাচার হচ্ছে।
রোববার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস উন্নয়নে দেশের ১৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩১ লাখ নির্বাচিত বই (পাঠ্যপুস্তক ছাড়া) বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অতীতের কোনো প্রশিক্ষণে (যা মাধ্যমিকের নয়) প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে নিজেরা বিনোদনের অংশ হিসেবে যে প্রাকটিস করেছে, এমন কিছু ভিডিও সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে এগুলো প্রশিক্ষণ। এমনকি নতুন ভিডিও তৈরি করেও ছড়িয়ে দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ভয়ানক অপপ্রচার চলছে এবং সেটি হচ্ছে ব্যক্তি স্বার্থ বা গোষ্ঠী স্বার্থহানি হওয়ার ভয়ে। কিছু ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী শিক্ষাক্রমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে। এখন নির্বাচনের সময়। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকেন, তাদের উস্কানি যুক্ত হয়ে গেছে। অতিডান, অতিবামের উস্কানিও যুক্ত হয়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদসহ অন্যান্য অতিথিরা বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষাক্রম নিয়ে মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়ে অভিভাবকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বাচ্চা কত নম্বর পেল, জিপিএ-৫ পেল কি-না, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় হল কি-না, অন্যের বাচ্চার চেয়ে আমার বাচ্চা বেশি নম্বর পেল কি-না; এই বিষয়গুলো নিয়ে বাবা-মায়েরা অতিমাত্রায় ব্যস্ত ছিলেন। সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা তৈরিতে বর্তমান শিক্ষাক্রম প্রনয়ণ করা হয়েছে। এ বিষয়গুলোর জন্য বাবা-মায়ের কিছু সংশয় কাজ করছে। আর সেগুলোকে এই গোষ্ঠী (মিথ্যাচারকারী) কাজে লাগাচ্ছে।
দীপু মনি বলেন, আমি অভিভাবকদের বলবো— একটু দেখুন। আপনার সন্তানদের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আপনার বাচ্চা যদি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে থাকে তাহলে তার আচার-আচরণ পরিবর্তন হয়েছে কি-না। সে কত নম্বর পেয়েছে, সেদিকে নজর না দিয়ে সে শিখলো কি-না, সেদিকে নজর দিন। একটু ধৈর্য্য ধরুন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের ৮শ’র বেশি বিশেষজ্ঞ নতুন কারিকুলাম প্রনয়ণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সবাইকে কোনো না কোনোভাবে এর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওয়েবসাইটে রেখে জনগণের মতামত, পরামর্শ নেওয়া হয়েছে, সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিছু পরামর্শসহ তিনি অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা পাইলটিং করেছি। তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়েছে। সকল বইগুলোকে আমরা পরীক্ষামূলক সংস্করণ বলছি। আমরা মনে করি, এই বইগুওলা আরও পরিশীলন, পরিমার্জনের সুযোগ রয়েছে। সেজন্য সকলের পরামর্শ গ্রহণ করছি।