শিক্ষার্থীর আত্মহত্যায় অভিযুক্ত শিক্ষক-ছাত্র সাময়িক বরখাস্ত

কমপ্লেইনের রেকর্ড আমাকে দেওয়া হয়নি: জবি উপাচার্য

জবি সংবাদদাতা
  ১৬ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৯
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম

আত্মহত্যার ঘটনায় উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের আশ্বাসের পর ক্যাম্পাস ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৬ মার্চ) মধ্যরাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করার আশ্বাস দেন উপাচার্য। এ সময় আত্মপক্ষ সমর্থন করে উপাচার্য জানান, অবন্তিকা উপাচার্য বরাবর যে অভিযোগ দেওয়ার কথা ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন, সেই অভিযোগপত্র তাকে (ভিসি) দেওয়া হয়নি।
উপাচার্য বলেন, ‘ফাইরুজ যে রিপোর্টের (অভিযোগপত্র) কথা বলেছে, সেটা আমাকে দেওয়া হয়নি। সে বলেছে— তাকে হিউমিলিয়েটেড করা হয়েছে। সেই কমপ্লেইনের রেকর্ড আমাকে দেওয়া হয়নি। সেই সহকারী প্রক্টরকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছি। তদন্ত রিপোর্ট আসার আগ পর্যন্ত তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কাজে যুক্ত হতে পারবেন না।’
মাত্র ৩ মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির দায়িত্ব পেয়েছেন উল্লেখ করে ড. সাদেকা হালিম আরও বলেন, ‘এই অল্প সময়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য যা যা করার, চেষ্টা করছি। প্রক্টরিয়াল বডির প্রধানসহ পাঁচ জন সদস্য নতুন। যে কয়টি যৌন হয়রানি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন শেষ হয়েছে আগামী সিন্ডিকেটে প্রত্যেকটির সুরাহা করা হবে। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ফাইরুজ তার সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেন, ‘অভিযুক্ত আম্মান তাকে থ্রেট করতো, সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি।’
ফাইরুজের অভিযোগপত্র উপাচার্যকে না দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘অভিযোগপত্রটি খুঁজে পাওয়া গেছে। সেটি অনেক পুরনো ফাইল। এ কারণে খুঁজে পেতে সময় লেগেছে। বিষয়টি উপাচার্যকে জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর আগের ঘটনা নিয়ে অবগত ছিলাম না। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সে যদি আসতো তাহলে ভিসি ম্যামের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নিতাম। বিষয়টি নিয়ে আমি অত্যন্ত দুঃখিত।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার পর উপাচার্য সাদেকা হালিম নিজ কার্যালয়ে অবস্থান নেন। উপাচার্য কার্যালয়ে যাওয়ার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ করেন। পরে তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। আজ বিকাল ৩টায় মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কার ও সহযোগী অধ্যাপক ড. দ্বীন ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দায়িত্ব থেকে সাময়িক বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ড. মাসুম বিল্লাহকে আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।