রাষ্ট্র সৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ ভূমিকা পালনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা সর্বজনীন হওয়া আবশ্যক বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘পরবর্তী প্রজন্মকে ভালো রাখার জন্য পূর্বপুরুষেরা নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। ৩০ লাখ শহীদ লাফিয়ে লাফিয়ে বুলেটের সামনে জীবনকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন। দু’লাখ মা-বোন নির্যাতন সয়ে সয়ে মানচিত্র এঁকেছেন। আজকের তরুণ প্রজন্মকে এটি অনুধাবন করতে হবে। তাদের বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যেকোনো অধিকার আদায়ের আন্দোলন বা কোনো সংগ্রামে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না, যাতে মুক্তিযোদ্ধারা কষ্ট পায়। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন হবে সর্বজনীন, যেটা এই সমাজের জন্য অপরিহার্য।
মঙ্গলবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) আয়োজিত সিইডিপির ৫টি ব্যাচের শিক্ষকদের নিয়ে প্যাডাগোজি বিষয়ে প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।
গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে সিনেট হলে অধিভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি কলেজের ২০০ শিক্ষক এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের তরুণদের জানা দরকার মুক্তিসংগ্রামের আন্দোলনে পূর্বপুরুষদের সুযোগ ছিল ভালো থাকার। নিজের জীবন উৎসর্গ না করে বেঁচে থাকার। কিন্তু তারা সেটি করেনি শুধু এই প্রজন্মের ভালো থাকার জন্য। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা যা যা পাওয়ার তা পাচ্ছি। তাদের প্রতি সম্মান দেখাতে যদি আমি দ্বিধান্বিত হই, কুণ্ঠিত হই, কৌশলে অপমান করার জন্য রাস্তায় নামি, তাহলে আত্মজিজ্ঞাসা হওয়া উচিত আমি কী তাকে যথার্থভাবে শিখাতে পেরেছিলাম? যদি উত্তর না হয় তাহলে আরও শিকড়ে যেতে হবে। মুক্তির সংগ্রাম রচয়িতাদের বিরোধিতা করা অন্ধকারের পথ, না জানার পথ।’
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্বব্যবস্থায় নীতি-নির্ধারণী বিষয় শুধু ধনিক শ্রেণিরা ভূমিকা রাখবে সেটি নয়। তরুণ প্রজন্মের সামনে বিশ্বব্যবস্থাকে তুলে ধরতে হবে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কেমন পৃথিবী তারা দেখতে চায়। মনে হতে পারে এটি আমাদের অনেক বড় স্বপ্ন কী না। আমি আস্থার সঙ্গে বলতে পারি, আমাদের সন্তানরাই নির্ধারণ করবে কেমন করে পৃথিবী পরিচালিত হবে। আজকে যারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন সেটির উদ্দেশ্য এই নয় যে- আপনারা শুধু নতুন নতুন কৌশল শিখবেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এই বাংলাদেশ আত্মশক্তিতে বলীয়ান হবে, সেই লক্ষ্যে কাজ করা।’