ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সারাদেশে গণপিটুনির নামে বেশ কিছু নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ‘মব জাস্টিস’ বা ‘উন্মত্ত জনতার বিচার’ হিসেবে অনেকে সেগুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেছেন। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীলরা বরাবরই দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিয়ে আসছেন। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাও দিয়েছে সরকার। তারপরও থামছে না উন্মত্ততা।
জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে দেশের শীর্ষ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত তিনটি নৃশংস হত্যা। রাজশাহী বিশ্ববিদালয়ে (রাবি) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা এবং সবশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
রাবির আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও জাবির শামীম আহমেদের রাজনৈতিক পরিচয় থাকায় পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত দেখা যায়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পরিচয় যাই হোক তাকে এভাবে হত্যা করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। তবে ঢাবির তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডকে সেই ফ্রেমে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। তোফাজ্জল নিজ ইউনিয়নে ছাত্রলীগ করলেও ঢাবিতে তার সেই পরিচয় ছিল না। শুধু মোবাইল চুরির অভিযোগে যেভাবে এ যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তাতে লজ্জায় মুখ ঢাকতে বাধ্য হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মব জাস্টিস বলে কিছু নেই। এগুলো মব সাইকোলজি। বিশ্বাসভিত্তিক সমাজে দুই পক্ষের বিশ্বাসের মধ্যে যখন বড় পার্থক্য তৈরি হয়, পারস্পরিক পার্থক্যের জায়গাটি যখন আমরা সম্মান করতে শিখি না, তখন অন্যের ওপর আক্রমণ করি।- জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দীন আহমদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, হিরোইজম দেখাতে শিক্ষার্থীরা বোধ-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলছেন। তাদের যারা নিয়ন্ত্রণ করবেন, তারাই পদ-পদবি বাঁচাতে উল্টো নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেন। এভাবে ভয়ের সংস্কৃতিতে ডুবে থাকায় থামছে না ‘মব জাস্টিস’। দ্রুত কঠোর হাতে এদের দমন করা জরুরি। আবার এটাকে ‘মব জাস্টিস’ না বলে ‘মব সাইকোলজি’ বলতে চান তারা।
শিক্ষাবিদ ও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত, মানবিকবোধ শেখানোর অন্যতম দায়িত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। সেখানেই যদি এমন উন্মত্ততা ও নৃশংসতা ঘটতে থাকে, তাহলে সবার আগে শিক্ষায় সংস্কার আনা জরুরি। পাশাপাশি পারিবারিক মূল্যবোধ সৃষ্টিতে সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই।
মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে দেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের একদল শিক্ষার্থী। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে তাকে ধরেন শিক্ষার্থীরা। হলটির নামে ফেসবুকে খোলা গ্রুপে এ নিয়ে পোস্ট দেওয়া হয়। তা দেখে হলের গেস্ট রুমে চোর দেখতে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেখানে হালকা মারধরের পর তাকে এক্সটেনশন বিল্ডিংয়ে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঘটনার সময় ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকলেও তাকে মারধর করেছেন মূলত তিন-চারজন। দ্বিতীয় দফায় মারধরের পর তাকে মেইন বিল্ডিংয়ের গেস্ট রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থাকা আবাসিক শিক্ষকরা তোফাজ্জলকে প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যদের ডেকে তাদের হাতে তুলে দিতে বলেন। কিন্তু তাদের কথা না শুনেই বরং শিক্ষকদেরই সেখান থেকে বের করে দেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বিষয়টি নিয়ে জানতে হলটির আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. শেখ জহির রায়হান ও সহকারী আবাসিক শিক্ষক ড. আ স ম মনজুর আল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। ঢাবির প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর হলগুলোসহ ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছি। তার মধ্যে গতকাল রাতের ঘটনাটি… যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এখানে প্রশাসনের কারও অবহেলা থাকলে সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পিটিয়ে হত্যা করা শামীম আহমেদ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রান্তিক গেটে তাকে পেয়ে মারধর শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আহত অবস্থায় তাকে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেন তরা। প্রক্টরিয়াল বডি তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে যায়। অথচ সেখানে নেওয়ার পর তাকে আবারও গণপিটুনি দেন শিক্ষার্থীরা। অর্থাৎ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায়ই শামীমকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা শামীম আহমেদ নামে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। তার বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। প্রক্টরিয়াল বডির হাতে থাকা অবস্থায় তাকে মারধর করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। যদি এমনটি ঘটে, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এরা দুষ্কৃতকারী ও সুযোগসন্ধানী। রাষ্ট্র সংস্কার বা ইতিবাচক কিছু করার জন্য তাদের মধ্যে কোনো তাড়না নেই। শুধু ক্যাওয়াজ তৈরি করা, ঝামেলা সৃষ্টি করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।- ঢাবি শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাবের আহমেদ চৌধুরী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তা ছিলেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই কোয়ার্টারে। সদ্যজাত সন্তানের জন্য ওষুধ কিনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকে গেলে তাকে ধরে বস্তায় ভরে মারধর করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, তাকে মারধরের ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও। পরে তাকে রাজশাহীর মতিহার থানায় নেওয়া হলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। মুমূর্ষু অবস্থায়ও তাকে আরেক থানায় পাঠানো হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মাসুদের পরিবারের অভিযোগ, প্রশাসন তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিলে মাসুদ হয়তো বেঁচে যেতেন।
রাবির প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওই ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা ছিল। তাতে কোনো শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট ছিল কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন তৎপর। আশা করি, আমাদের ছাত্ররা কারও প্ররোচণায় ভুল পথে পা দেবে না।’
বিশ্বাসভিত্তিক সমাজে আষ্টেপিষ্টে ‘মব সাইকোলজি’
দেশে বড় পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন করেছেন। তারপর একের পর এক বিতর্কিত কাজে জড়িয়ে পড়ছেন তারা। সেগুলোকে ‘মব জাস্টিস’ বলছেন অনেকে। তবে ‘মব জাস্টিস’ বলে কিছু নেই বলে মনে করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দীন আহমদ।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মব জাস্টিস বলে কিছু নেই। এগুলো মব সাইকোলজি। বিশ্বাসভিত্তিক সমাজে দুই পক্ষের বিশ্বাসের মধ্যে যখন বড় পার্থক্য তৈরি হয়, পারস্পরিক পার্থক্যের জায়গাটিকে যখন আমরা সম্মান করতে শিখি না, তখন অন্যের ওপর আক্রমণ করি।’
উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন ঘটনা ঘটলে তা বাইরেও বিস্তার লাভ করার আশঙ্কা থেকে যায়। সেজন্য শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইউজিসি সহযোগিতা করবে। আশা করি, আগামী দিনে এমন একটি ঘটনাও আর ঘটবে না।- ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ
তিনি বলেন, ‘এমন নৃশংসতা কেবল সেই সমাজে হবে না, যেটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ। যারা মানুষকে মূল্যায়ন করে তার কাজ ও জ্ঞান দ্বারা। কাজ ও জ্ঞান দিয়ে মানুষকে মূল্যায়ন করলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়। আর বিশ্বাস দ্বারা পরিচালিত সমাজে একে অন্যের ওপর ঠুনকো অজুহাতে আঘাত করা, আক্রমণ চালানো, হত্যা করার ঘটনা ঘটে। যেটি এখন আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে। এটি যখন অনেক মানুষ একসঙ্গে করে সেটিকে মব সাইকোলজি বলা হয়।’
‘মব সাইকোলজি’ থেকে বের হতে করণীয় কী এবং রাষ্ট্র বা সমাজের কোন কোন প্রতিষ্ঠান এটা নিয়ে কাজ করতে পারে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখানে সুনির্দিষ্টভাবে শুধু একটি বা দুটি সংগঠন বা সংস্থা কাজ করলে তাতে ফল আসবে না। সমন্বিতভাবে এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো দমন করে বা জোর করে ইতিবাচক আচরণ করতে। টেকসইভাবে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলে মব সাইকোলজি থেকে বের হওয়া সম্ভব।’
ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দুটি জায়গার কথা যদি বলি, তাহলে তার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ তৈরি হলে এটা থেকে মুক্তি মিলবে। আরেকটি হলো পরিবার। পরিবারের বাবা-মা বা অন্য সদস্যরা কেমন আচরণ করছে বা কতটা সহিংস হয়ে উঠছে, তা দেখে সন্তানও তা শেখে। সেখানে যদি সহিষ্ণুতা থাকে, তাহলে ওই সন্তানও যেখানেই যাক, সহিষ্ণুতা দেখাবে।’
মব জাস্টিস বা উন্মত্ত জনতার বিচারকারীদের কোনো কাজকে আর অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ নেই বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাবের আহমেদ চৌধুরী।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিল, অংশ নিয়েছিল তাদের বেশিরভাগই এখন রাষ্ট্র সংস্কারে মনোযোগী। সেসময় অনেকে সাহস সঞ্চার করে আন্দোলনে নামতে পারেনি। তারা দেখছে, এ আন্দোলনে অংশ নেওয়ারা তো সমাজে নায়কের আসনে বসছেন। এটা দেখে তারা আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছে। তাদের এ আইডেন্টিটি ক্রাইসিস কাটিয়ে উঠতে তারা ‘মব জাস্টিস’ নামে সুযোগের সন্ধানে নামছে, সক্রিয় থাকছে।’
তিনি বলেন, জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এরা দুষ্কৃতকারী ও সুযোগসন্ধানী। রাষ্ট্র সংস্কার বা ইতিবাচক কিছু করার জন্য তাদের মধ্যে কোনো তাড়না নেই। শুধু ক্যাওয়াজ তৈরি করা, ঝামেলা সৃষ্টি করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।’
বিগত শাসকগোষ্ঠীর কাছের লোকজন এসব মব মুভমেন্টে সামনের সারিতে থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে বলেও মনে করেন অধ্যাপক ড. সাবের আহমেদ চৌধুরী। প্রশাসনিক দুর্বলতায় মব জাস্টিসের নামে নৃশংসতা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন পদে আসীন থেকে মব বা সংঘর্ষ সৃষ্টিকারীদের কাছে যেভাবে কর্তাব্যক্তিরা পদানত হচ্ছেন এবং শক্ত অবস্থান নিচ্ছেন না; সেটা বড় ভাবনার বিষয়। তাদের বুঝতে হবে—একটা সময় তারা আপনার-আমার সবার কাঁধে এসে পড়বে। সবাই সেটার শিকার হবে।’
‘ঢাবির ফজলুল হক হলের ঘটনায় প্রক্টর নিজে উপস্থিত ছিলেন। তিনি যদি ভুক্তভোগীকে সেখান থেকে দ্রুত সরিয়ে নিতেন, তাহলে এ ঘটনাটা ঘটতো না। জাবিতেও নিরাপত্তা শাখায় গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে। প্রক্টরিয়াল বডির সামনেই সেটা ঘটেছে। ঢাবি, জাবি কিংবা রাবির ঘটনায় প্রশাসন কিন্তু স্পষ্ট কোনো অবস্থান নিচ্ছে না। তারা কেবল চুপ থেকে অ্যালাউ (অনুমোদন) করে যাচ্ছে। এটা ভেন্টিলেশনের মতো কাজ করছে। এটা করা যাবে না। ক্যাম্পাসগুলোতে মব জাস্টিসের নামে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা এখনই শক্ত হাতে দমন করা প্রয়োজন’ উল্লেখ করেন ঢাবির শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সফল উপাচার্যদের মধ্যে অন্যতম অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। বতর্মানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান। ঢাবি, জাবি ও রাবিতে পিটিয়ে হত্যার নৃশংসতা নিয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ফায়েজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগরের ঘটনা দুটি দেখে আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। সেখানে আমাদের উপাচার্যরা আছেন, তারাও বিষয়গুলো নিয়ে গুরুত্বসহকারে কাজ করছেন বলে জেনেছি। আমি মনে করি, সবার মধ্যে সহিষ্ণুতা বজায় রাখতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের। তাদের যে এত বড় অর্জন, তা ধরে রাখা এবং তাদের প্রতি জাতির প্রত্যাশা সম্পর্কে তাদের স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।’
আগামীতে এমন নৃশংসতা একটিও ঘটবে না প্রত্যাশা জানিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন ঘটনা ঘটলে তা বাইরেও বিস্তার লাভ করার আশঙ্কা থেকে যায়। সেজন্য শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইউজিসি সহযোগিতা করবে। আশা করি, আগামী দিনে এমন একটি ঘটনা আর ঘটবে না।’