ভারতীয় চলচ্চিত্রের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত এনে দিলেন দীপিকা পাড়ুকোন। প্রথমবারের মতো কোনো ভারতীয় তারকার নাম উঠল হলিউডের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চ ‘ওয়াক অফ ফেম’-এ। ২০২৬ সালের জন্য ঘোষিত তালিকায় ‘মোশন পিকচার’ বিভাগে জায়গা পেয়েছেন এই বলিউড অভিনেত্রী। দীপিকার সঙ্গে এই সম্মান অর্জন করেছেন ডেমি মুর, এমিলি ব্লান্ট, র্যাচেল ম্যাক অ্যাডামস, তিমোথে চালামেট, ফ্রাঙ্কো নিরো এবং গর্ডন র্যামসের মতো বিশ্ববিখ্যাত তারকারা।
গত ২০ জুন (শুক্রবার) হলিউড ওয়াক অফ ফেম সিলেকশন প্যানেল বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে নির্বাচিত ১০০ প্রার্থীর মধ্য থেকে ৩৫ জনের নাম বাছাই করে। পরে এই তালিকা অনুমোদন করে হলিউড চেম্বার অফ কমার্সের বোর্ড। এই তালিকায় দীপিকার নাম যুক্ত হওয়া শুধু তার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং দক্ষিণ এশীয় শিল্প-সংস্কৃতির জন্য এক গৌরবময় অধ্যায়।
২০১৭ সালে ‘ট্রিপল এক্স: রিটার্ন অব জেন্ডার কেজ’ ছবির মাধ্যমে দীপিকার হলিউড যাত্রা শুরু হয়, যেখানে তিনি অভিনয় করেছিলেন ভিন ডিজেলের বিপরীতে। যদিও এরপর আর হলিউড ছবিতে দেখা না গেলেও, আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার উপস্থিতি—বিশেষ করে ফ্যাশন শো, চলচ্চিত্র উৎসব ও নানা আন্তর্জাতিক আয়োজন—তাকে গ্লোবাল আইকনে পরিণত করেছে।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ ভারতের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সময়সীমা নিয়ে তাঁর মন্তব্য কিছু বিতর্ক তৈরি করলেও, বর্তমানে তিনি ব্যস্ত অ্যাটলির পরিচালনায় ৬০০ কোটির একটি মেগা প্রজেক্ট নিয়ে, যেখানে তিনি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন।
বলিউডে খান ও কাপুরদের ছায়া থেকে নিজেকে আলাদা করে দীপিকা গড়ে তুলেছেন এক স্বতন্ত্র পরিচয়। তিনি শুধু একজন অভিনেত্রী নন, বরং ভারতীয় সংস্কৃতির একজন আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি। হলিউড ওয়াক অফ ফেমে তার নাম উঠা সেই পরিচয়েরই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
এই সম্মান প্রমাণ করে, ভারতীয় চলচ্চিত্র এখন আর শুধু দেশীয় গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়। দীপিকার এই অর্জনের মধ্য দিয়ে আবারও দেখা গেল, দেশীয় সিনেমা বিশ্বমঞ্চে কীভাবে শক্ত অবস্থান তৈরি করছে।