স্ত্রীদের বয়স ৩৩ হলেই কেন টম ক্রুজের সংসার ভাঙে?

বিনোদন ডেস্ক
  ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৩:৪৮

হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজের চতুর্থ বিয়ে নিয়ে কয়েক দিন আগেও উত্তপ্ত ছিল বিশ্ব মিডিয়া। কথা ছিল—তাদের বিয়ে হবে মহাকাশে। প্রেমিকা কিউবান-স্প্যানিশ অভিনেত্রী আনা দে আরমাসের সঙ্গে মহাকাশে বিয়ে সারবেন অভিনেতা। কিন্তু টম হয়ে গেলেন একা। কে জানত— মাত্র ৯ মাসের মধ্যেই এই সম্পর্কের পরিণয় শেষ হবে। অতঃপর আকাশে ক্ষণিকের উল্কার মতোই নিভে যাবে টম ক্রুজের সেই স্বপ্নের ‘স্পেস ওয়েডিং’।
টম ক্রুজ আর আনার মাঝে এখন আর সেই সম্পর্ক নেই। দিনে দিনে কমতে থাকে একে অপরের প্রতি আকর্ষণ। ফলে দুজনের সিদ্ধান্তেই ঘটল এ পরিণতি। এ ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এর মধ্যে টম ক্রুজের আরেকটি ঘটনা ভাইরাল— ৩৩ বছর বয়সে তিন স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছেদ। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটছে অভিনেতার জীবনে?
অভিনেতা টম ক্রুজ এবার পর্দার জীবনের মতো ব্যক্তিজীবনটাও তার দারুণ রোমাঞ্চে ভরপুর। তার প্রেমজীবন সবসময়ই আলোচনায় থাকে। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে তার তিন সাবেক স্ত্রীকে ঘিরে এক অদ্ভুত কাকতালীয় তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভক্ত-অনুরাগীরা খেয়াল করেছেন— মিমি রজার্স, নিকোল কিডম্যান ও কেটি হোমস তিনজনই ৩৩ বছর বয়সে টম ক্রুজের সঙ্গে তাদের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন। বিষয়টি কি কাকতালীয়; নাকি টম ক্রুজের অলিখিত সিদ্ধান্ত—কেন এমন মুহূর্ত?
শক্তিমান অভিনেতা টম ক্রুজ ১৯৮৭ সালের মে মাসে প্রথম বিয়ে করেন অভিনেত্রী মিমি রজার্সকে। তিন বছরের সংসার ১৯৯০ সালে বিচ্ছেদ হয়। একই বছর ডিসেম্বর মাসে ক্রুজ বিয়ে করেন অভিনেত্রী নিকোল কিডম্যানকে। টানা ১১ বছর সংসার করার পর ২০০১ সালে তাদের সম্পর্কের ইতি ঘটে। নিকোল ও টম তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তান দত্তক নিয়েছিলেন। তারা হলেন ইসাবেলা (৩২) ও কনর (৩০)। পরে কিডম্যান গায়ক কিথ আরবানকে বিয়ে করেন। তার সঙ্গে সংসারে দুই কন্যা সানডে রোজ (১৭) ও ফেইথ মার্গারেট (১৪) এর জননী তিনি।
বিচ্ছেদের পর ২০০১ সালে ডেভিড লেটারম্যান শোতে হাজির হয়ে নিকোল কিডম্যানকে জিজ্ঞেস করা হয়— কেমন লাগছে এখন? তিনি হাসতে হাসতে বলেন, এখন আমি অবশেষে হাই হিল পরতে পারব। তার এই মন্তব্যে সূক্ষ্মভাবে ইঙ্গিত ছিল টম ক্রুজের উচ্চতার দিকে (যার উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি)। পরে আবার তিনি বলেন, সবকিছু পেরিয়ে এসেছি। এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়।
এরপর ২০০৬ সালে তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী কেটি হোমসকে। তার সঙ্গে কন্যা সুরি জন্ম নেয়। তবে এই সম্পর্কও টেকেনি টমের। ছয় বছর পর ২০১২ সালে বিচ্ছেদ ঘটে তাদের। অন্যদিকে কেটি হোমস ও টম ক্রুজের মেয়ে সুরি জন্ম নেয় ২০০৬ সালে বিয়ের সাত মাস পর। ২০১২ সালে কেটি হঠাৎ করেই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই সেটি সম্পন্ন হয়। 
সব মিলিয়ে, টম ক্রুজের তিন বিয়ে, তিন বিচ্ছেদ আর তিন নারীর একই বয়সে বিবাহবিচ্ছেদের বয়সও ৩৩ বছর, যা কাকতালীয় তথ্য অবাক করছে বিশ্বজুড়ে ভক্তদের।
সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা লক্ষ্য করেন, তিনজন নারীই বিবাহবিচ্ছেদের সময় বয়স ছিল ৩৩ বছর। উবার ফ্যাক্টস নামের একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়, ‘টম ক্রুজ তার তিন স্ত্রীর সঙ্গেই বিচ্ছেদ করেছেন, যখন তাদের বয়স ছিল ৩৩ বছর। সিনেমার পর্দায় দুর্দান্ত সব ইম্পসিবল মিশনে সফল হলেও স্ত্রীদের ৩৩ বছর বয়সের ভয়টা কাটিয়ে উঠতে পারেননি টম ক্রুজ। এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা এবং নানা রকম রহস্যময় তত্ত্বের জন্ম।
আলোচনায় আরও রঙ চড়ায় এ তথ্যটি যে, ৩৩ সংখ্যাটি সায়েন্টোলজি ধর্মে (যার অনুসারী টম ক্রুজ) একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ সংখ্যা হিসেবে বিবেচিত। শিনোজ নামে এক প্রকাশনায় বলা হয়েছে, সায়েন্টোলজির প্রতিষ্ঠাতা এল রন হববার্ড ৩৩-কে বর্ণনা করেছেন ‘মানুষকে আলোকিত করার এবং তাদের ভাগ্যের পথে পরিচালিত করার প্রতীক’ হিসেবে।
এই সূত্র ধরেই অনেকে ধারণা করছেন, হয়তো এ সংখ্যার সঙ্গে টম ক্রুজের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের কোনো যোগ আছে। যদিও বিষয়টি সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর।