যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েই ভিসা নীতি কড়া করার বার্তা শাবানার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:১৪
শাবানা মাহমুদ ও মার্কিন হোমল্যান্ড সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম


যুক্তরাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ দায়িত্ব নিয়েই ভিসা নীতিতে কড়াকড়ির বার্তা দিয়ে বলেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত নেওয়ার জন্য যেসব দেশ চুক্তি করতে রাজি না, সেই দেশগুলোর নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত করা হতে পারে।
সোমবার লন্ডনে ‘ফাইভ আইজ’ গোয়েন্দা সহযোগিতা জোটের সভায় মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি প্রধান ক্রিস্টি নোয়েম এবং অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
ব্রিটিশ সরকার ছোট ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আসা লোকজনের ঢল কমানোর জন্য প্রতিনিয়তই চাপের মুখে থাকার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘোষণা দিলেন।
গত সপ্তাহে উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনার পদত্যাগের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তার মন্ত্রিসভায় রদবদল করেন। এর আওতায়ই ইতিহাস গড়ে নতুন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত শাবানা মাহমুদ।
১৯৮০ সালে বার্মিংহামে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পরিবারে শাবানার জন্ম। যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি শৈশবের একাংশ কেটেছে সৌদি আরবে। স্টারমার সরকারের অভিবাসন, পুলিশ এবং জাতীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তার নিয়ন্ত্রণে আছে।
কাজের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বক্তব্যে শাবানা মাহমুদ বলেন, তার প্রধান অগ্রাধিকার হল, যুক্তরাজ্যের সীমান্ত সুরক্ষিত করা। গত শনিবার তার প্রথম পূর্ণ কর্মদিবসে, ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে পৌঁছানো অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৭ জন, যা মানুষের এই চ্যানেল পাড়ির অন্যতম সর্বোচ্চ রেকর্ড।
মাহমুদ বলেন, যেসব দেশ তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতে সহযোগিতা করে না, তাদের ব্যাপারে ফাইভ আইজ দেশগুলো সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে পারে। ভবিষ্যতে সেই দেশগুলোর ভিসা স্থগিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
তবে তিনি কোনও নির্দিষ্ট দেশের নাম উল্লেখ করেননি। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার আগেই বলেছিলেন, ভিসার বিষয়ে তিনি আরও ‘লেনদেনমূলক’ নীতি চান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যুক্তরাজ্যের ভিসা নির্ভর করবে কোন দেশ কতটা সহযোগিতা করছে তার উপর—বিশেষ করে প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে।
সরকারের তথ্যমতে, চলতি বছর ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে পৌঁছানো অভিবাসীর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেশি। শাবানা মাহমুদ এটিকে “সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য” বলে মন্তব্য করেছেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন অবজারভেটরির পরিচালক ম্যাডেলিন সাম্পশন বলেছেন, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপালের মতো দেশগুলোতে প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর হার কম হলেও ব্রিটিশ ভিসার চাহিদা বেশি। তাই ভিসা সীমিত করার হুমকির প্রতিক্রিয়া দেশভেদে ভিন্ন হতে পারে।