মাদক কার্টেলের ২৬ সদস্যকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠালো মেক্সিকো

আন্তর্জাতিক
  ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮:২১

২৬ জন কারাবন্দিকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে মেক্সিকো। তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী মাদক কার্টেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক কার্টেলের সাথে সংশ্লিষ্ট কারাবন্দিদের পাঠিয়েছে প্রতিবেশী দেশটি।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রত্যর্পণ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বড় বড় মাদক চক্রের ‘মূল সদস্য’ রয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে সহিংস অপরাধ বা সংঘবদ্ধ অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মেক্সিকো জানিয়েছে, কারাবন্দিরা ‘জননিরাপত্তার জন্য স্থায়ী ঝুঁকি’ তৈরি করে। এ ঘটনার সময় হোয়াইট হাউস মাদক পাচার দমনে দক্ষিণ সীমান্তের প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকোর ওপর চাপ বাড়িয়েছে, যার মধ্যে কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপও রয়েছে।
মেক্সিকো বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বন্দিদের মধ্যে কেউ যেন মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য না হয়—এই শর্তে তারা প্রত্যর্পণে সম্মতি দিয়েছে।
মেক্সিকোতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জানিয়েছে, দেশটির সবচেয়ে বড় দুটি অপরাধী সংগঠন—জালিস্কো নিউ জেনারেশন ও সিনালোয়া কার্টেলের সদস্যরা—প্রত্যর্পণ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন।
প্রত্যর্পণ হওয়া বন্দিদের একজন, রবার্তো সালাজার, অভিযোগ রয়েছে যে তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির এক ডেপুটি শেরিফকে হত্যা করেছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট), মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় জানিয়েছিল, তারা এক নারীকে প্রত্যর্পণ করছে যিনি ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সীমান্ত পেরিয়ে মাদক পরিবহনের অভিযোগে অভিযুক্ত। নারীটির নাম প্রকাশ করা হয়নি। তিনি ২৬ জনের ওই তালিকায় আছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
ফেব্রুয়ারিতে মেক্সিকো ২৯ জন কারাবন্দিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করেছিল, যা দেশটির ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ ঘটনা। তাদের মধ্যে ছিলেন গুডালাহারা কার্টেলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কারো কুইন্টেরো, যিনি ১৯৮৫ সালে মার্কিন ডিইএ এজেন্ট এনরিক ‘কিকি’ কামারেনাকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত।
সর্বশেষ প্রত্যর্পণ হওয়া ব্যক্তিরা হয়তো ফেব্রুয়ারির দলের মতো পরিচিত নন, তবে মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে তারা গুরুত্বপূর্ণ অপরাধী হিসেবেই বিবেচিত। এদের মধ্যে রয়েছেন আবিগায়েল গনজালেজ ভ্যালেন্সিয়া, যিনি কার্টেল প্রধান নেমেসিও ‘এল মেনচো’ ওসেগুয়েরার ভগ্নিপতি এবং কার্টেলের শীর্ষ অর্থনৈতিক প্রধান হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যর্পণের এ পদক্ষেপ মেক্সিকো সরকারের জন্য হোয়াইট হাউসের দাবি পূরণের অংশ, যা মাদক কার্টেল দমনে কঠোর পদক্ষেপের প্রমাণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে, প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত সেই খবর প্রত্যাখ্যান করেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকোর ভেতরে মার্কিন এজেন্টদের কার্টেল নেতাদের টার্গেট করার অনুমতি দিয়েছিলেন।
তিনি শুক্রবার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকোতে সামরিক অভিযান চালাতে আসছে না। আমরা সহযোগিতা করি, সমন্বয় করি, কিন্তু আক্রমণ হবে না—এটি একেবারেই বাতিল।’
ফেন্টানিল পাচার মোকাবেলায় মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। শেইনবাম আশা করছেন, সীমান্তে চোরাচালান ইস্যুতে ট্রাম্প আবার শুল্ক আরোপের হুমকি দিলে, এই পদক্ষেপ তার সরকারের নিরাপত্তা অঙ্গীকারের প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে।

সূত্র: বিবিসি নিউজ।