যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটন বা ব্যবসায়িক ভিসা নিয়ে লুকিয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে অহরহ। তবে এসব ভিসার অপব্যবহার কমাতে কঠোর হতে যাচ্ছেন মার্কিন সরকার।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে, যার আওতায় কিছু নির্দিষ্ট দেশের পর্যটক ও ব্যবসায়িক ভিসার আবেদনকারীদের জন্য ১৫,০০০ ডলার (প্রায় ১৮ লাখ টাকা) পর্যন্ত বন্ড জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।
এ প্রস্তাবিত নিয়মটি মূলত সেইসব দেশের নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য হবে যারা পর্যটন ও ব্যবসায়িক ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অতিরিক্ত সময় অবস্থান করার প্রবণতা বেশি।
নতুন নিয়ম ও এর উদ্দেশ্য
সংবাদমাধ্যম সিএনএন সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই পরিকল্পানি মূলত এমন একটি ব্যবস্থা, যা ভিসা আবেদনকারীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশ ত্যাগ করা নিশ্চিত করবে। যদি কোনো ব্যক্তি তার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে, তাহলে তার জমা রাখা বন্ডের সম্পূর্ণ বা আংশিক অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হবে।
এর মাধ্যমে ভিসা আবেদনকারীদের মধ্যে ভিসার শর্ত মেনে চলার ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা এবং অতিরিক্ত সময় অবস্থানের প্রবণতা কমানো যাবে বলে মনে করছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এই পরীক্ষামূলক প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে ১২ মাসের জন্য চালু করা হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমে অভিবাসন নীতির কার্যকারিতা বাড়াতে চাইছে। যেসব দেশের নাগরিকরা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে থেকে যায়, তাদের জন্য এই নতুন নিয়ম চাপ তৈরি করবে।
প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব
এই প্রস্তাবটি যদি চূড়ান্তভাবে কার্যকর হয়, তবে এটি কিছু দেশের নাগরিকদের জন্য মার্কিন ভিসা প্রাপ্তি আরও কঠিন করে তুলবে। বিশেষ করে যারা উচ্চ আর্থিক সক্ষমতা সম্পন্ন নন, তাদের জন্য এই পরিমাণ অর্থ বন্ড হিসেবে জমা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হতে পারে। ফলে, বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের সুযোগ সীমিত হয়ে আসতে পারে।
এই প্রস্তাবের পক্ষে এবং বিপক্ষে নানা মহলে আলোচনা চলছে। সমর্থকরা বলছেন, এটি মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, বিরোধীরা বলছেন, এটি একটি বৈষম্যমূলক নীতি এবং এর মাধ্যমে দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত দেশগুলোর নাগরিকদের প্রতি অবিচার করা হবে। তাদের মতে, এটি ভিসা নীতিকে আরও কঠোর ও অমানবিক করে তুলবে।
বর্তমানে এই প্রস্তাবটি পর্যালোচনা ও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনও কোনো চূড়ান্ত ঘোষণা আসেনি। তবে এটি কার্যকর হলে তা আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও অভিবাসন নীতির ওপর একটি বড় প্রভাব ফেলবে।