নেপালে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় দেশের সার্বিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ভার নিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার পরই সেনারা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানী কাঠমাণ্ডুর রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। জারি করা হয়েছে কারফিউ।
নেপালের পত্রিকা ‘কাঠমাণ্ডু পোস্ট’ জানায়, বুধবার ভোর সকাল থেকে কাঠমাণ্ডুর রাস্তা ছিল মোটামুটি জনশুন্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নেপালের বিভিন্ন স্থানে সেনা মোতায়েন করা হয়। সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
দেশে লুটপাট চালালে, ভাঙচুর করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। দেশের নাগরিকদেরও সহযোগিতা চেয়েছে তারা। নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবন নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী।
বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে সেনাবাহিনীর জেনারেল সিগদেল অশোকরাজ আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “প্রতিবাদ কর্মসূচি ছেড়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে পেতে আলোচনায় বসুন। কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে আমাদের।”
নেপালের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব, বাসিন্দাদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে তারা অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দেশের অস্থির পরিস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। সেকারণে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
বুধবার সকাল থেকে নেপালে বড় ধরনের কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। তবে কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ছাত্র-যুব আন্দোলনে সোমবার এবং মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল নেপালে। কাঠমান্ডু থেকে বিক্ষোভ শুরু হলেও তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছিল নেপাল জুড়ে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হয়। ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা নেপালের পার্লামেন্ট ভবন, ওলি এবং তার মন্ত্রীদের বাসভবনে আগুন দেয়।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগে নেপালের জেলগুলোতেও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বন্দিদের সংঘর্ষ এবং বন্দিদের পালিয়ে যাওয়ার খবর মেলে। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তার ভার নেয় সেনাবাহিনী।