
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে এর ছাপ পড়ে—ত্বক শুকিয়ে যায়, কুঁচকে যায় এবং আগের উজ্জ্বলতা হারায়। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তরুণদের রক্তে এমন কিছু উপাদান থাকতে পারে, যা বয়স্কদের ত্বককে আবার তরুণ ও মসৃণ করে তুলতে পারে।
জার্মানির বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান বেইয়ের্সডর্ফ এজি ত্বক নিয়ে এই গবেষণা পরিচালনা করে। গবেষকরা প্রথমে মানুষের ত্বকের মতো একটি মডেল তৈরি করে তাতে তরুণদের রক্তরস (সিরাম) প্রয়োগ করেন। শুরুতে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা না গেলেও, যখন তাতে হাড়ের অস্থিমজ্জা (বোন ম্যারো) কোষ যোগ করা হয়, তখন ত্বকের কোষে আশ্চর্যজনক পরিবর্তন দেখা যায়—যেন কোষগুলোর বয়স কমে যাচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, তরুণদের রক্তরস ও অস্থিমজ্জা একসঙ্গে কাজ করে ত্বকের কোষে এমন কিছু জৈব পরিবর্তন ঘটায়, যা ত্বককে আরও টানটান, উজ্জ্বল ও তরুণ করে তোলে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই প্রক্রিয়ায় একসঙ্গে ৫৫ ধরনের প্রোটিন তৈরি হয়, যার মধ্যে অন্তত ৭টি প্রোটিন ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যদিও এসব প্রোটিন কীভাবে কাজ করে, তা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আরও গভীর গবেষণা প্রয়োজন।
গবেষক দলের মতে, ত্বক হলো মানবদেহের সবচেয়ে বড় অঙ্গ এবং বয়সের ছাপ সবার আগে এখানেই দেখা যায়। তাই ত্বককে কেন্দ্র করে বার্ধক্য রোধের সম্ভাব্য পথ খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, ত্বকের সুস্থতা আসলে পুরো শরীরের স্বাস্থ্যের প্রতিফলন।
তারা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এই গবেষণা সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে বার্ধক্য আর দুর্বলতার প্রতীক থাকবে না—বরং সেটি হয়ে উঠবে সতেজ ও সবল থাকার এক নতুন অধ্যায়।