যে সাক্ষাতে মুয়ানাকা করা যায়

ধর্ম ডেস্ক
  ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২০:২৩

সাধারণ অবস্থায় মুসলমানদের পরস্পরের সাথে দেখা হলে সুন্নত হলো সালাম দেওয়া এবং মুসাফাহা করা। সাধারণ অবস্থায় কারো সাথে দেখা হলেই মুয়ানাকা করা সুন্নত নয়। আনাস (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ তার ভাইয়ের সাথে বা বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করলে তার সামনে কি মাথা নত করবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে কি তাকে জড়িয়ে ধরে চুমো খাবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে কি তার হাত ধরে তার সঙ্গে মুসাফাহা করবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (সুনানে তিরমিজি: ২৭২৮)
তবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে এমন কেউ দীর্ঘ সফর থেকে ফিরে এলে বা দীর্ঘ দিন পর দেখা হলে মুয়ানাকা বা কোলাকুলি করা যেতে পারে। হাদিসে এসেছে, জায়েদ (রা.) সফর থেকে ফিরে এলে নবিজি (সা.) তার সাথে মুয়ানাকা করেছিলেন।
আয়েশা (রা.) বলেন, জায়েদ ইবনে হারেসা মদিনায় এলেন। এ সময় আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার ঘরে ছিলেন। জায়েদ ইবনে হারেসা (রা.) এসে ঘরের দরজায় আওয়াজ করলে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খালি গায়ে চাদর টানতে টানতে তার কাছে গেলেন। (আয়েশা (রা.) বলেন) আল্লাহর কসম! আমি তাকে এর পূর্বে বা পরে কখনো খালি গায়ে (জনসমক্ষে যেতে) দেখিনি। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে জড়িয়ে ধরলেন ও চুমু খেলেন। (সুনানে তিরমিজি: ২৭৩২)
সাহাবিদের মধ্যেও মুয়ানাকার প্রচলন ছিল। আনাস (রা.) বলেন, নবিজির (সা.) সাহাবিরা পরস্পর মিলিত হলে মুসাফাহা করতেন। আর কোনো সফর থেকে ফিরলে মুয়ানাকা করতেন। (আলমু’জামুল কাবির লিততাবরানি: ৯৭)
আমাদের দেশে ঈদের নামাজের পরে, বিয়ের মজলিসে আকদের পরে বা ফরজ নামাজের পরে মুয়ানাকা করার প্রচলন আছে। এ সময়গুলোতে মুয়ানাকার প্রচলনের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায় না।
বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া সাধারণভাবে সালাম ও মুসাফাহাই সাক্ষাতের সুন্নত। নবিজি (সা.) বেশি বেশি সালাম দিতে বলেছেন। সালাম মুসলমানদের পারস্পরিক সৌহার্দ ও ভালোবাসা বাড়ায়। নবিজি (সা.) বলেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! আপনারা মুমিন না হলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না আর পরস্পরে সৌহার্দ ও ভালোবাসা না রেখে আপনারা মুমিন হতে পারবেন না। আমি আপনাদের এমন কাজের কথা বলছি যা আপনাদের পারস্পরিক সৌহার্দ বৃদ্ধি করবে, নিজেদের মধ্যে বেশি বেশি সালাম আদান-প্রদান করুন! (সহিহ মুসলিম: ২০৩)
মুসাফাহার ফজিলত সম্পর্কে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যখন দুজন মুসলিমের সাক্ষাত হয় এবং তারা পরস্পর হাত মিলায় আল্লাহ তাআলার ওপর তাদের এই হক জন্মে যে, আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করবেন এবং তাদের হাতগুলো পৃথক হওয়ার আগেই তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। (মুসনাদে আহমদ: ১২৪৫১)