জর্দায় কিছুটা মাদকতা আছে। অতিরিক্ত জর্দা খেলে মাথা ঘোরাতে পারে বা বমিভাব হতে পারে। কিন্তু জর্দা খেয়ে কেউ মাতাল হয় না। তাই জর্দা খাওয়ার পর নামাজ পড়তে কোনো বাঁধা নেই বা নামাজ শুদ্ধ না হওয়ারও কোনো কারণ নেই।
পান-জর্দা ইত্যাদি খাওয়ার পর নামাজ আদায়ের পূর্বে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া কর্তব্য। যেন পানের কণাগুলো বের হয়ে যায় এবং গন্ধও না থাকে।
আমাদের দেশে পান খাওয়ার প্রচলন প্রচুর। গ্রাম বাংলার বহু মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাসে পান থাকবেই। বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা অতিথি আপ্যায়নে খাওয়ার শেষে পান পরিবেশন করা ইত্যাদি আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে।
পান পাতা ক্ষতিকর নয়। বরং পানের উপকারী ভেষজ গুণ অনেক। চিকিৎসকদের মতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ক্ষত সারানো, মানসিক অবসাদ দূর করাসহ নানা ধরনের রোগের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে পান। তাই পান খাওয়া অপছন্দনীয় বা হারাম হওয়ার কোনো কারণ নেই।
তবে পানের সাথে জর্দা খাওয়া নিয়ে প্রশ্ন আছে। জর্দার মধ্যে যেহেতু মাদকতা আছে এবং এটা শরীরের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে বেশ ক্ষতিকর, তাই আলেমদের কেউ কেউ জর্দা দিয়ে পান খাওয়াকে নাজায়েজ বলেছেন।
কিন্তু অনেক আলেমের মতে জর্দা দিয়ে পান খাওয়া ক্ষতিকর হওয়ার কারণে অপছন্দনীয় হলেও হারাম নয়। তারা বলেন, জর্দা তামাক পাতা বেশ পরিশোধন করে তৈরি হওয়ায় এতে তেমন নেশাই থাকে না। এটাকে কোনোভাবেই মাদকদ্রব্য বলা যায় না। পরিমিত পরিমাণ জর্দা খেয়ে কেউ মাতালও হয় না। সুতরাং জর্দাকে মাদকদ্রব্য হিসেবে হারাম বলা যায় না।
জর্দায় স্বাস্থ্যের ক্ষতিও এতটা প্রকট বা অবশ্যম্ভাবী নয় যে কারণে কোনো খাবারকে সরাসরি হারাম বলা যায়।
এরপরও জর্দা বা তামাক খাওয়া যেহেতু শারীরিক ক্ষতির কারণ তাই যথাসম্ভব এ থেকে বিরত থাকা উচিত, মানুষকে অনুৎসাহিত করা উচিত। কারো ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে ক্ষতিকর প্রমাণিত হলে বিশেষত তার জন্য তা খাওয়া অবৈধ হবে। কিন্তু সাধারণ অবস্থায় কেউ পানের সাথে পরিমিত পরিমাণ জর্দা খেলে তা হারাম হবে না।