টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনটা নিজেদের করে নিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮১ ওভার খেলে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান তুলে দিন শেষ করেছে তারা। আর সেটা সম্ভব হয়েছে টনি ডি জর্জি ও ট্রিস্টান স্টাবসের সেঞ্চুরিতে ভর করে।
স্টাবস ১০৬ রান করে আউট হলেও জর্জি অপরাজিত আছেন ২১১ বলে ১০টি চার ও ৩ ছক্কায় ১৪১ রানে। তার সঙ্গে ২ ছক্কায় ১৮ রানে অপরাজিত আছেন ডেভিড বেডিংহ্যাম। তারা দুজন আগামীকাল বুধবার দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামবেন।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জর্জি ও স্টাবস ২০১ রানের জুটি গড়ে দলীয় সংগ্রহকে ৬৯ থেকে ২৭০ এ নিয়ে যান। এরপর স্টাবস ফিরেন সাজঘরে। তার আগে ৬৯ রানের মাথায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এইডেন মার্করাম ২ চারে ৩৩ রান করে আউট হন। দক্ষিণ আফ্রিকার দুটি উইকেটই নিয়েছেন বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
জর্জির ব্যাটে ৩০০ রান পেরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা:
টনি ডি জর্জির ব্যাটে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৩০০ পেরিয়ে গেছে। তাইজুলের করা ৮০তম ওভারের শেষ বলে বেডিংহ্যাম ছক্কা হাঁকালে তাদের রান ২৯৮ থেকে ৩০৪ হয়। জর্জি ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১৩৯ ও বেডিংহ্যাম ২ ছক্কায় ১৭ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।
জর্জি-স্টাবসের ২০১ রানের জুটি ভাঙলেন তাইজুল:
৬৯ রানের এইডেন মার্করামকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছিলেন তাইজুল ইসলাম। এরপর টনি ডি জর্জি ও ট্রিস্টান স্টাবস বাংলাদেশের বোলারদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ৫৬.৩ ওভার ব্যাটিং করেন। দ্বিতীয় উইকেটে ২০১ রানের জুটি গড়ে দলীয় সংগ্রহকে নিয়ে যান ২৭০ পর্যন্ত। এই রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। তার স্কিড করা বলে বোল্ড হয়ে যান স্টাবস। ১৯৮ বল খেলে ৬টি চার ও ৩ ছক্কায় ১০৬ রান করে যান। তার আগে ১৯৪ বল খেলে ৫টি চার ও ৩ ছক্কায় ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। যদিও সেটাকে খুব বেশি বড় করতে পারেননি।
জর্জি-স্টাবস জুটির দেড়শ, রান পাহাড়ের চাপায় বাংলাদেশ
টনি ডি জর্জি আর ত্রিস্টান স্টাবসের জুটি ভাঙতে পারছেন না বাংলাদেশের বোলাররা। এই জুটি দ্বিতীয় উইকেটে ইতোমধ্যে দেড়শ রান পার করে ফেলছে। তাতে ধীরে ধীরে রান পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ছে বাংলাদেশ।
এক প্রান্তে নাহিদ রানার পেস ও আরেক প্রান্তে মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ২৫৯ বলে এসেছে জুটির দেড়শ। তাতে স্টাবসের অবদান ৭৭, ডি জর্জির ৭০। এটি দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার চতুর্থ দেড়শ রানের জুটি ।
হতাশার সেশন
আরও একটি হতাশার সেশন কাটল বাংলাদেশের। দ্বিতীয় সেশনের ২৮ ওভারেও দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো উইকেট ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। রান উঠেছে ৯৬। এর মধ্যে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন জর্জি। তার সঙ্গে দাপট দেখিয়েছেন স্টাবসও। দক্ষিণ আফ্রিকার রান ১ উইকেটে ২০৫।
ডি জর্জির সেঞ্চুরি
সেঞ্চুরি করলেন ডি জর্জি। মিরাজকে চার হাঁকিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন এই ওপেনার। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। ১৪৬ বলে 8 চার ও ২ ছক্কার মারে সেঞ্চুরির ইনিংসটি সাজান জর্জি।
স্টাবসের ফিফটি
ফিফটি তুলে নিলেন স্টাবস। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ট্রিস্টান স্টাবস পা রাখলেন পঞ্চাশে। ১০৭ বলে ফিফটি পূর্ণ করলেন তিনি। পঞ্চম টেস্টে তার দ্বিতীয় ফিফটি এটি।
জুটির শতরান
টনি ডি জর্জি ও স্টাবসের জুটি এগিয়ে নিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এই পথচলায় দুজনের জুটি পৌঁছে গেল শতরানে। ১৮৮ বলে এলো দুজনের জুটির সেঞ্চুরি। এতে ডি জর্জি ও স্টাবসের অবদান সমান ৪৯ রান করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার দেড়শ
দারুণ ব্যাটিংয়ে ইনিংস গড়ে নিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্পিন কিংবা পেস আক্রমণ করেও জর্জির আর স্টাবসের জুটি ভাঙতে পারছে না বাংলাদেশের বোলাররা।
দ্বিতীয় সেশনে একটু নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রানের গতিতে লাগাম দিলেও ধরা দিচ্ছে না উইকেট। ৪২ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান পৌঁছে গেছে দেড়শতে। জর্জি ও স্টাবসের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে যাচ্ছে প্রোটিয়ারা।
জর্জির ফিফটি, রিভিউ হারাল বাংলাদেশ
প্রথম সেশনে ৪৯ রানে অপরাজিত থেকে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান টনি ডি জর্জি। এরপর দ্বিতীয় সেশনে ফিরেই পঞ্চাশ পূর্ণ করেছেন এই ওপেনার। তার ইনিংসে চারটি চার ও এক ছক্কার মার ছিল। খেলেছেন ৭৬ বল। অষ্টম টেস্টের ক্যারিয়ারে এটি তার তৃতীয় ফিফটি।
দক্ষিণ আফ্রিকার একশ
মার্করামকে হারালেও রানের চাকা থেমে নেই দক্ষিণ আফ্রিকার। ইতোমধ্যে শতরান পেরিয়ে গেছে তারা। হাসান মাহমুদের বলে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে চার মেরে দলের রান একশতে নিয়ে গেলেন টনি ডি জর্জি। দলের শতরান এলো ২৫.৩ ওভারে।
তাইজুলের প্রথম আঘাত
দারুণ জুটি গড়ে এগোচ্ছিলেন এইডেন মার্করাম ও টনি ডি জর্জি। দুজন মিলে দলকে পঞ্চাশ রানের জুটি পার করে ফেলছিলেন। সেই জুটি ভাঙলেন তাইজুল ইসলাম।
তাইজুলের অফ-মিডলে থাকা বলটিতে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টা করেন মার্করাম। কিন্তু বল টার্ন করে তার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় মিড অনে। সহজ ক্যাচ নেন মুমিনুল হক।
৫৫ বলে ৩৩ রান করে আউট হলেন মার্করাম। প্রথম জুটি থামল ৬৯ রানে। নতুন ব্যাটসম্যান ট্রিস্টান স্টাবস।
অঙ্কনের ক্যাচ মিস
দিনের শুরু থেকেই জমিয়ে ব্যাট করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তেমন সুযোগ দিচ্ছে না বাংলাদেশের বোলারদের। এর মাঝেই দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। তবে কাজে লাগাতে পারলেন না।
হাসানের বল জর্জি ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যাচ্ছিলো অঙ্কনের পাশ দিয়ে। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়লেও ক্যাচটি নিতে পারেননি এই উইকেটরক্ষক। বল তার গ্লাভস ফসকেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ভালো শুরু
চট্টগ্রামে ভালো শুরু পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ওপেনার এইডেন মার্করাম ও টনি ডি জর্জি ওয়ানডে স্টাইলে দেখেশুনে খেলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন। বাংলাদেশের হয়ে দুই প্রান্ত থেকে বল করে যাচ্ছেন নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ।
দুই পরিবর্তন প্রোটিয়াদের
দক্ষিণ আফ্রিকার একাদশে পরিবর্তন আছে দুটি। অফ স্পিনার ডেন পিটের জায়গায় এসেছেন সেনুরান মুথুসামি। ব্যাটসম্যান ম্যাথু ব্রিটস্কির জায়গায় নেওয়া হয়েছে পেসার ডেন প্যাটারসনকে। চোটের কারণে নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার না থাকার কথা জানানো হয়েছিল আগেই।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: টনি ডি জর্জি, এইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), ট্রিস্টান স্টাবস, ডেভিড বেডিংহ্যাম, রায়ান রিকেলটন, কাইল ভেরেইনা, ভিয়ান মুল্ডার, কেশাভ মহারাজ, সেনুরান মুথুসামি, কাগিসো রাবাদা, ডেন প্যাটারসন।
তিন পরিবর্তন নিয়ে মাঠে বাংলাদেশ
চট্টগ্রামে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। অসুস্থতার কারণে নেই লিটন দাস। কানকাশনের কারণে আগের দিনই ছিটকে গিয়েছেন জাকের আলী। দল থেকে জায়গা হারিয়েছেন স্পিনার নাঈম হাসান। এদের জায়গায় দলে এসেছেন মাহিদুল ইসলাম, জাকির হাসান, নাহিদ রানা।
বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদুল হাসান জয়, সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা।
মাহিদুলের অভিষেক
চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছে উইকেটরক্ষক ব্যাটার মাহিদুল ইসলাম অংকনের। এর আগে ম্যাচের আগের দিন বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ দল। অনুশীলনে মাথায় বল লেগে কানকাশন হয়েছে জাকের আলীর। তার জায়গায় টেস্ট অভিষেক হচ্ছে মাহিদুলের।
টস
টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রেকর্ড বাংলাদেশের বিপক্ষে
দুই দল এখন পর্যন্ত ১৫ টেস্ট মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে ১৩ জয় দক্ষিণ আফ্রিকার। বাংলাদেশ কোনো ম্যাচে জয় পায়নি। তবে ড্র করেছে দুইটি। এই সিরিজে প্রথম ম্যাচ হেরে খাদের কিনারায় বাংলাদেশ। তবে ভালো ক্রিকেট খেলে জিততে চায় এই ম্যাচ। চাইলে প্রত্যাশিত জয় পাওয়া সম্ভব। এবার কী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ ভালো করতে পারবে শান্ত এন্ড কোং?