একজন দু’জন নয়, আফগানিস্তানের ৮ জন ক্রিকেটার চান্স পেয়েছেন এবারের আইপিএলে। আইপিএল ২০২৫-এর নিলামে বিক্রি হয়েছেন ৫ শ্রীলঙ্কান। এখানেই শেষ নয়। একজন জিম্বাবুইয়ানও দল পেয়েছেন এবারের আইপিএলে।
কিন্তু বাংলাদেশের কেউ নেই এবারের আইপিএলে। ১২ ক্রিকেটারের কাউকেই নিলাম থেকে কেনেনি আইপিএলের কোনো ফ্রাঞ্চাইজি। বাঁ-হাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান আর লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন নিলামে উঠলেও তাদের কেউ কেনেনি। তাই দু’জন অবিক্রিত থেকে গেছেন। সাকিব আল হাসান সহ অন্যদের নামই ওঠেনি নিলামে।
তাদের বিশ্বাস ছিল, ‘আগেরবার খেলা সাকিব ও মোস্তাফিজ হয়ত এবারও দল পাবেন; কিন্তু তাদের কেউ নেয়নি। এমনকি ফর্মের চুড়ায় থাকা পেসার তাসকিন, নাহিদ রানা আর লেগি রিশাদ হোসেনের প্রতিও কেউ আগ্রহ দেখায়নি।’
নিজ দেশের ক্রিকেটারদের কেউ আইপিএলে বিক্রি না হওয়ায় চরম হতাশ বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীরা। বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটারও আইপিএলে নেই। একজন ক্রিকেট প্রশিক্ষক, সাকিব আল হাসানের মত বড় ক্রিকেটারের গুরু এবং দেশ বরেণ্য ক্রিকেট বিশ্লেষক নাজমুল আবেদিন ফাহিম কিভাবে দেখছেন এ বিষয়টাকে?
আজ বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের কাছ থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে বর্তমান বিসিবি পরিচালক জানান, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার দুঃখ হচ্ছে।’
তবে তিনি হতাশ ও মুষড়ে পড়তে চান না। তার মনে হয়, এটাকে দুঃখবোধের চেয়ে ব্যর্থতা বলাই শ্রেয়। ফাহিম মনে করেন, আইপিএলে কোন দলে চান্স না পাওয়ার অর্থ মানের দিক থেকে পিছিয়ে থাকা। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন, মানের দিক থেকে পিছিয়ে থাকার কারণেই আইপিএলে কোন দলেই নেই বাংলাদেশের কেউ।
তাই মুখে এমন কথা, আমি কিন্তু সোজাসুজিভাবে আমাদের মানটাকে বিচার করি। তার মূল্যায়ন, ‘বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটার পৃথিবীর অন্য দেশের অন্য কোন মঞ্চে যখন জায়গা পাবেন, তখন বুঝতে হবে তার অবস্থা ভালো। আর পৃথিবীর অন্য মঞ্চে আমি যদি জায়গা না পাই, তার মানে হচ্ছে আমার অবস্থাটা ভালো না।’
ফাহিম আরও যোগ করেন, ‘এই দেশে বলি, ওই দেশে বলি, এই ফ্র্যাঞ্চাইজি বলি, জোর করে কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ঢোকাতে পারবো না । যোগ্যতা থাকলে ঢুকতে পারবে।
ফাহিমের ধারনা, বাংলাদেশের পেসাররা নিজেরাই সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন; কিন্তু নিজেরাই আবার পিছিয়ে পড়েছেন। তার অনুভব, ‘চেষ্টায়ও ঘাটতি ছিল পেসারদের।’
‘আমাদের জন্য সুযোগ ছিল, গত বছর বা তার আগের বছর কয়েকজন পেস বোলারের জায়গা হচ্ছিল বা হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। সেটাকে আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। আমার মনে হয় আমাদের চেষ্টা থাকা উচিত আন্তর্জাতিক এই সুযোগগুলোকে কাজে লাগানোর। আমাদের জন্য খুব ভালো উদাহরণ হচ্ছে আফগানিস্তান। আফগানরা শুধু এই করেই কিন্তু ওদের খেলোয়াড়দের ধীরে ধীরে এ জায়গায় নিয়ে এসেছে। আস্তে আস্তে ওদের খেলোয়াড়ের সংখ্যা বাড়ছে এ জায়গায়, আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আমাদেরকে এই জায়গাটা কাজে লাগানো উচিত। অদূর ভবিষ্যতে আমরা সেই চেষ্টা করবো।’