আশরাফুলে মুগ্ধ মিকি আর্থার

‘আমি যেখানেই কাজ করবো, তুমি আমার সহকারী থাকবা’

স্পোর্টস ডেস্ক
  ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৮

রংপুর রাইডার্সের প্রধান কোচ দক্ষিণ আফ্রিকার মিকি আর্থার। তার সঙ্গে মোহাম্মদ আশরাফুল ছিলেন দলের প্রধান সহকারী কোচ। এই যুগলের হাত ধরে গ্লোবাল সুপার লিগের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রংপুর রাইডার্স।
হাইপ্রোফাইল কোচ মিকি আর্থারের সঙ্গে কাজ করে কেমন অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন আশরাফুল? তাকে কেমন কাজ করার স্বাধীনতা দিয়েছেন আর্থার? প্রধান সহকারী কোচ হিসেবে গ্লোবাল সুপার লিগে দলে আশরাফুলের ভূমিকাইবা কী ছিল? জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে এ সব কিছু খোলাখুলি বলেছেন আশরাফুল। জানিয়েছেন, আর্থার তার প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করে সামনেও কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
আশরাফুল বলেন, ‘হেড কোচ মিকি আর্থার আমাকে প্রচুর জায়গা দিয়েছেন কাজ করার। আমার প্লেয়িং ক্যারিয়ারের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে আমাকে কাজ করার স্পেস দিয়েছেন। আমার ওপর নির্ভরও করেছেন প্রচুর। আমি নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ছেলেদের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টায় ছিলাম।’
রংপুরের সহকারী কোচ যোগ করেন, ‘আমি উইকেট সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি। স্লো উইকেটে ব্যাটারদের রোল কেমন হবে, বোলারদের করণীয় কী, তাও বাতলে দিতে চেষ্টা করেছি। ছেলেরাও খুব মনোযোগ দিয়ে আমার পরামর্শ শুনেছে। আমি সৌম্য সরকারের সাথে দেশের ক্রিকেটে এক দলে খেলেছি। তার সম্পর্কে আমার ধারণা পরিষ্কার। একইভাবে কামরুল ইসলাম রাব্বিসহ আরও কজনার সাথেও খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমার। সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পরামর্শ দিয়েছি।’
‘বিদেশি ক্রিকেটাররাও আমার কথা শুনেছে। সবমিলিয়ে কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুতে আমি কাজ করে খুব আনন্দ পেয়েছি। আর সবচেয়ে বড় কথা, হেড কোচ মিকি আর্থার আমার পারফরম্যান্সে খুব খুশি। তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন-আশরাফুল আমি যেখানেই কাজ করবো, তুমি আমার প্রধান সহকারী থাকবা।’
আশরাফুল মনে করেন, মিকি আর্থারের মত বিশ্ববরেণ্য কোচের কাছ থেকে এমন প্রশংসা পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। এটা তাকে আগামীতেও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা দেবে।
কন্ডিশন এবং টুর্নামেন্টে রংপুরের পারফরম্যান্স নিয়ে আশরাফুলের মূল্যায়ন, ‘উইকেট বোলারদের দিকে ঝুঁকে ছিল। পেসার ও স্পিনার উভয়ই সহায়তা পেয়েছে। পিচে বল একটু থেমে এসেছে। আবার কোনটা একটু জোরেও আসছে। ডাবল পেসড উইকেট। পুরো টুর্নামেন্টে আমাদের বোলাররা খুব ভালো করেছে। রান করা সহজ ছিল না। তাই ব্যাটাররা হাত খুলে খেলতে পারেনি। যে কারণে গড়পড়তা ১৩০ থেকে ১৪০ রানের বেশি ওঠেনি। আমাদের ব্যাটাররা প্রথম ২ খেলায় সুবিধা করতে না পারলেও পরের ম্যাচগুলোয় বেশ ভালো খেলেছে।’
রংপুর রাইডার্সের ওপেনার সৌম্য সরকারের কথা আলাদাভাবে বলেছেন আশরাফুল। সৌম্য ফাইনালে ৫৪ বলে ৫ ছক্কা ও ৭ বাউন্ডারিতে ৮৬ রানের ইনিংস খেলেন। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এবং সিরিজসেরাও হয়েছেন তিনি।
সৌম্যকে নিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘আমি টুর্নামেন্ট শুরুর আগেও জাগো নিউজকে আলাদা করে সৌম্যর কথা বলেছিলাম। আমার বিশ্বাস ও আস্থা ছিল সৌম্য গ্লোবাল সুপার লিগে ভালো খেলবে। সত্যিই সৌম্য ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছে (২৭+৫১+২+২২+৮৬*)। তার ব্যাট থেকে রান পেয়েছি। আমাদের সাফল্যে সৌম্যর অবদান প্রচুর। ফাইনালে সৌম্যর অসাধারণ ইনিংসটিই জয়ের ভিত গড়ে দেয়। সৌম্য ভালো খেলায় আমাদের শিরোপা জয় সহজ হয়েছে।’
সৌম্যর ওপেনিং পার্টনার টেইলরও ফাইনালে ৪৯ বলে ৬৮ রান করেন। যুক্তরাষ্ট্রের এ ওপেনার সম্পর্কে আশরাফুলের মূল্যায়ন, ‘টেইলর স্ট্রাইকরেট বজায় রেখে খেলতে পেরেছে। তাতে করে সৌম্যর ফ্রি খেলা সহজ হয়েছে। সৌম্য তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে। সাথে সাইফ হাসান যখনই সুযোগ পেয়েছে, সেও রান করেছে।’
অন্যদিকে বোলিং ডিপার্টমেন্ট নিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘পেসারদের মধ্যে কামরুল ইসলাম রাব্বি চমৎকার বল করেছে। সাইফউদ্দিনও প্রথম খেলায় দারুণ বোলিং করেছে। এর বাইরে স্পিনার শেখ মেহেদি এবং বিদেশি হারদীপ সিংও ছিল চমৎকার। সব মিলে আমাদের বোলিং ইউনিটটা অনেক ভালো ছিল। তাদের পারফরম্যান্স দলকে চূড়ান্ত সাফল্য এনে দিতে রেখেছে বড় ভূমিকা। আমাদের বোলাররা মূল কাজ করে দিয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম একটি একটি ম্যাচ করে আগাবো। তাই এগিয়েছি। শেষ হাসিও হেসেছি সেভাবে এগিয়েই।’