সময়ের পালাক্রমে মানুষের বয়স বাড়ে, খেলোয়াড়দেরও। বিদায় বলতে হয় প্রিয় মাঠকে। রূপান্তর ঘটে দায়িত্বের। তেমনই এ বছর ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন বেশ কজন তারকা। ২০২৪ সালে বুটজোড়া তুলে রেখেছেন এমন ফুটবারদের নিয়ে একটি একাদশ তৈরি করলে তার চেহারা কেমন হতো, চলুন দেখে নেওয়া যাক।
গোলরক্ষক: ক্লদিও ব্রাভো
৪১ বছর বয়সে এসে নিজের রঙিন ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ব্রাভো। চিলির হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার কীর্তি রয়েছে তার। ২০১৫ সালে তার অধীনেই প্রথমবারের মতো কোপা আমেরিকা জয়ের স্বাদ পায় চিলি। রিয়াল সোসিয়েদাদ, বার্সেলোনা ও রিয়াল বেতিসে মতো ক্লাবের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন এ কীর্তিমান।
রাইট ব্যাক: জেসুস নাভাস
সেভিয়ার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় নাভাস অবসরে যাবেন আজ। সেভিয়ার হয়ে ৪টি ইউরোপিয়ান কাপ, ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগ ও লিগ কাপ জিতেছেন। স্পেনের হয়ে নাভাস ২০১২ ও ২০১৪ ইউরো এবং ২০১০ বিশ্বকাপ জিতেছেন ক্যারিয়ারে।
সেন্টার ব্যাক: রাফায়েল ভারান
৩১ বছর বয়সে এসে হাঁটুর ইনজুরির কাছে হার মেনে এ বছর অবসরের ঘোষণা দেন ফ্রান্সের বিখ্যাত এ ডিফেন্ডার। রিয়াল মাদ্রিদে রক্ষণের এ সেনা জিতেছেন ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। ফ্রান্সের জার্সিতে ২০১৮ বিশ্বকাপও জেতেন ভারান।
সেন্টার ব্যাক: লিওনার্দো বোনুচ্চি
ফেনারবাখের হয়ে অবসরে গেলেও বোনুচ্চিকে তার ভক্তরা মনে রাখবেন জুভেন্তাসের একজন হিসেবে। ওল্ড লেডিদের হয়ে ৫ বার সিরি আ শিরোপাসহ ১৯টি ট্রফি জিতেছেন তিনি। ২০২০ সালে ইতালির হয়ে জেতেন ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ।
সেন্টার ব্যাক: পেপে
গরম মেজাজের জন্য বৈশ্বিকভাবে সুপরিচিত মুখ পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনটি করে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। ২০১৬ ইউরো ও ২০১৯ নেশনস লিগ জেতেন পর্তুগালের হয়ে। ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সী ফুটবলার হিসেবে ৪১ বছর বয়সে এ বছর ইতি টানেন ক্যারিয়ারের।
লেফট ব্যাক: রায়ান বারট্রান্ড
২০১২ সালে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে চেলসিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানো দলের সদস্য রায়ান। ক্যারিয়ারে জিতেছেন ১৯টি মেজর ট্রফি। গত গ্রীষ্মে বুটজোড়া তুলে রেখে নতুন প্রতিভা সন্ধানে মনোনিবেশ করেন রায়ান।
মিডফিল্ড: থিয়াগো আলকানতারা
কয়েক বছর ইনজুরির সঙ্গে টানাপোড়েনের ফল হিসেবে ৩৩ বছর বয়সেই অবসরের সিদ্ধান্ত নেন থিয়াগো। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারদের গোল্ডেন জেনারেশনের একজন তিনি। বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ ও লিভারপুলের হয়ে হয়ে ১১টি লিগ শিরোপা, বেশ কিছু ঘরোয়া কাপ ও ২টি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন তিনি।
মিডফিল্ড: টনি ক্রুস
ক্যারিয়ারে ফর্মের তুঙ্গে থাকাবস্থায় এ বছর ইউরো শেষে অবসরের ঘোষণা দেন জার্মান মিডফিল্ডার ক্রুস। বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়ালের হয়ে ৭টি লিগ শিরোপা ও রেকর্ড ৬ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা হয়েছে তার। জার্মানির ফুটবল ইতিহাসে সেরা খেলোয়াড়দের একজন মনে করা হয় তাকে।
রাইট উইং: নানি
বিশ বছরের ক্যারিয়ারে বিশ্বের নানা প্রান্তে দর্শকদের বিনোদন উপহার দিয়েছেন নানি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ৪টি প্রিমিয়ার লিগ ও একটি করে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। ১০টির মতো ক্লাবে খেলেছেন। পর্তুগালকে জিতিয়েছেন ২০১৬ ইউরো।
লেফট উইং: আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা
ফুটবলের সর্বকালের সেরাদের একজন হলেন ইনিয়েস্তা। ছাড়ছি ছাড়ছি করে খেলা চালিয়ে যাবার পর অবশেষে এবার ৪০ বছর বয়সে ইতি টানেন ক্যারিয়ারের। স্পেন ও বার্সেলোনার স্বর্ণযুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তিনি। বার্সা হয়ে জেতেন ৩৫টি শিরোপা। ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত স্পেনকে দুটি ইউরো ও একমাত্র বিশ্বকাপ জেতানোর কারিগরদের একজন তিনি।
ফরোয়ার্ড: মারোয়ানে ফেলাইনি
দুই যুগের ক্যারিয়ারে প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে নিজেকে ত্রাস হিসেবে পরিচিত করেন ফেলাইনি। বেলজিয়ামের গোল্ডেন জেনারেশনের এ ফরোয়ার্ড প্রিমিয়ার লিগে ছয় মৌসুমে ৪ ট্রফি জেতার পর পাড়ি জমান চীনে। ওখান থেকেই ইতি টানেন ক্যারিয়ারের।