বিষয়টি কিছুটা অবাক করার মতোই। মাত্র তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা কোনো বোলারকে ফাইনালে ভয় পাচ্ছে প্রতিপক্ষ! গতকাল দুবাইয়ের ‘মেয়দান’ হোটেলে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে ভারতীয় স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীকে নিয়ে উদ্বেগটা লুকাননি নিউজিল্যান্ড কোচ গ্যারি স্টিড। দুবাইয়ের মন্থর পিচে ভারতীয় চার স্পিনারের মধ্যে তাঁকেই হুমকি মনে করছেন তিনি।
বরুণকে হুমকি মনে করলেও খুব বেশি চিন্তিত নয় কিউই শিবির। ৩৩ বছর বয়সী এ রহস্য স্পিনারকে সামলাতে বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন কিউই কোচ। মোদ্দাকথা, রোববারের ফাইনালের প্রস্তুতিতে কোনো ফাঁকফোকর রাখছেন না তারা। বরুণকে নিয়ে উদ্বেগের কারণ আছে। গ্রুপ পর্বে কর্নাটকের এ স্পিনার ৪২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিয়েছিলেন তাদের। অথচ আসরে সেটাই ছিল বরুণের প্রথম ম্যাচ এবং পুরো ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ওয়ানডে। তাঁকে একাদশে নেওয়ায় ভারতের পরিকল্পনায়ও পরিবর্তন আসে। তারা চার স্পিনারে বোলিং আক্রমণ সাজায়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিতে ৪৯ রানে ২ উইকেট নেন তিনি।
ফাইনালেও ভারতীয় শিবিরের অন্যতম ভরসা এই বরুণ। কিউই শিবিরও জানে যে তাদের সমস্যায় ফেলতে পারেন এ লেগি। যে কারণে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার ও কেন উইলিয়ামসন তাঁকে নিয়ে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন। এবার কোচ গ্যারি স্টিডও গুরুত্ব দিলেন বরুণকে, ‘আমাদের বিপক্ষে গ্রুপ ম্যাচে ৪২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিল বরুণ। আশা করছি, ফাইনালেও সে খেলবে। বরুণ খুব ভালো বোলার। আমাদের বিপক্ষে সে এরই মধ্যে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছে। নিশ্চিতভাবেই তাকে নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। তার বল সামলানোর উপায় বের করতে হবে। তার বিপক্ষে রান করার কৌশল ঠিক করতে হবে।’ বরুণের বোলিংয়ের চুলচেরা বিশ্লেষণ যে কিউইরা করছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মূলত তাঁর বোলিংয়ের বৈচিত্র্যের রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করছে তারা।
এই টুর্নামেন্টের ভ্রমণ পরিকল্পনা নিয়ে কিছুটা অসন্তুষ্ট গ্যারি স্টিড, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) পুরো দিন ভ্রমণ করে লাহোর থেকে এখানে এসেছি আমরা। এতে আমরা যে ক্লান্ত, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।’
এই ক্লান্তির কারণেই ফাইনালের মাত্র দু’দিন আগে গতকাল শুক্রবার অনুশীলন করেনি কিউইরা। তবে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি, ‘আমাদের হাতে এখনও কয়েক দিন রয়েছে। ছেলেরা কিছুটা তরতাজা হয়ে উঠুক, কিছু পরিকল্পনা করতে হবে এবং ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনও করব। আমরা এখন আসরের শেষ দিকে আছি। টুর্নামেন্টের এই পর্যায়ে এসে খুব বেশি অনুশীলন দরকার হয় না। শরীর ও মনকে ফাইনালের জন্য প্রস্তুত করাই এখন মূল বিষয়। আগামী দুই দিন এটাই আমাদের মূল ফোকাস।’
একই সঙ্গে দুবাইয়ে ভারতের সব ম্যাচ খেলা নিয়েও অভিযোগ নেই তাঁর। তবে এত বাধাবিপত্তির পরও ভারতকে হারাতে চান তিনি, ‘আট দলের টুর্নামেন্টে এখন আমরা দুটি দল টিকে আছি। আসরের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর সময় এখন। রোববার ভারতকে হারানোর চেয়ে খুশির কিছু আর হতে পারে না আমাদের জন্য। তবে জিততে হলে আমাদের দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলতে হবে।’