‘আগামী বিশ্বকাপে’ বিশ্বাস করেন না ফারুক 

স্পোর্টস ডেস্ক
  ০৯ মার্চ ২০২৫, ২৩:১৬

গেল বছরের আগস্টে বিসিবির সভাপতির পদে বসেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ। তার আগে দীর্ঘ এক যুগ ধরে এই চেয়ারে ছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। বাংলাদেশ জাতীয় দল যখনই কোনো বৈশ্বিক টর্নামেন্টে ব্যর্থ হতো, তখনই পরবর্তী বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট নিয়ে স্বপ্নের কথা শোনাতেন পাপন। বিভিন্ন অঙ্গনে পাপনের নামে ট্রোল করা হতো, পরের বিশ্বকাপে আমরা ভালো করব কিংবা আগামী বিশ্বকাপে দল ভালো করবে। তবে এই আগামী বিশ্বকাপে বিশ্বাস করেন না বর্তমান সভাপতি ফারুক। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভরাডুবির পরে এবার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে আগাতে চায় বিসিবি। তেমনটিই জানিয়েছেন বর্তমান বিসিবি বস। 
গতকাল মিরপুরে তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ের উদ্বোধন করেন ফারুক আহমেদ। সে সময়ে জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, 'আমি আগামী বিশ্বকাপে বিশ্বাস করি না। আমি যখন ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে নির্বাচক ছিলাম তখন তামিম-সাকিব-মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক তারা লাইমলাইটে এসেছিল। বোর্ড থেকে একটা পলিসি দেওয়া হবে। আমরা বলে দেব যে, আমরা কী চাই। এটি নিয়ে ক্রিকেট অপারেশন্সের সঙ্গে আলাপ করে চিন্তা করবো আমাদের ক্রিকেটটাকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। আর আগের ১২ বছরের সঙ্গে তুলনা করে যদি বলি, আমি এসেছি ছয় মাসও হয়নি। অনেক কিছুই এই সময়ে করতে পারি না। তবে এই বিষয়টি আমরা করার চেষ্টা করবো, ঐদিকেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।' 
মুশফিকুর রহিমকে সংবর্ধনা দেওয়া নিয়ে তিনি বলেন, 'এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। মুশফিক তো দেশের একজন কিংবদন্তি। তার দীর্ঘ ১৯ বছরের পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশ দল আজ এই অবস্থানে ভাসছে। তিনি অন্যতম এক জন নাবিক। তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে পথ দেখিয়েছেন। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফর থেকে শুরু করে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ থেকে এখন পর্যন্ত দেশের ক্রিকেটকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তিনি যে পথ দেখিয়ে গেছেন সেটি তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক হবে, বিসিবি সেটি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছে আমরা পরিকল্পনা করছি তাকে যথাযথভাবে সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়টি।' 
এ দিকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে ফারুক দেশে ফেরার পরে গুঞ্জন ওঠে, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এই বিষয়ে তিনি বলেছেন, 'ত্রিদেশীয় সিরিজ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছি। আইসিসির আমন্ত্রণ পেয়ে প্রতিটি দেশ থেকে পরিচালকরা আসেন, একসঙ্গে খেলা দেখেন। আর এই খেলাটা ছয়-সাত ঘণ্টা দীর্ঘ হয়। এই সময়ে বিভিন্ন বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দারুণ সুযোগ তৈরি হয়। আমি ফাইনাল ম্যাচ না দেখেই দেশে ফিরেছি। তবে এর আগে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠকগুলোতে অংশ নিয়েছি। ভারত, পাকিস্তান এমনকি শ্রীলঙ্কা বোর্ডের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। সঙ্গে আমিরাত বোর্ড ছিল। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নটা খুব জরুরি। তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হলে একটা জিনিস পেতে সুবিধা হবে, যে কোনো পর্যায়ে এটি আমি বিশ্বাস করি। আমি চেষ্টা চালিয়েছি।' 
ফারুকের চেষ্টায় একটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের সিদ্ধান্ত হয়েছে। 'পাকিস্তান এরই মধ্যে আমাদের জানিয়েছে, তারা এফটিপির বাইরে একটি সফর করবে এবং বাংলাদেশে খেলতে আসবে। এটি বেশ ব্যস্ত সূচির মধ্যেই আয়োজন করা হতে পারে, সম্ভবত জুলাইয়ের দিকে আমরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছি, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে আর ত্রিদেশীয় এই মুহূর্তে হচ্ছে না। তবে ভবিষ্যতে যখন বিরতি পাওয়া যাবে, আমরা আলোচনা করেছি, যদি সুযোগ আসে। সেটি যেই দেশে হোক আমরা যেন অংশগ্রহণ করতে পারি। বাংলাদেশ সেখানে অংশগ্রহণ করবে, এটি নিয়ে আলোচনা করেছি।' 
এ দিকে তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ের নিয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, 'এখানে কিছু ট্যালেন্ট (উদীয়মান তারকা) আসবে। এখান থেকে যে ক্রিকেটার সবসময় পাবো সেটি মুখ্য বিষয় নয়। তবে আগে যে ট্যালেন্ট হান্টিং হতো, ওরকম একটা ব্যাপার হবে কিছু তরুণ তারকা থাকবে যাদের উদীয়মান মনে হবে, বিসিবির লোকজন খেলা দেখতে যাবে, তারা কিছু ক্রিকেটারদের বাছাই করবেন এবং তাদের যেন আগামীতে পরিচর্যা করতে পারি, সেই লক্ষ্য থাকবে। এখানে সংখ্যা কোনো ব্যাপার না যারা এখানে খেলবে তারা ট্যালেন্ট, তাদের পরিচর্যা করতে হবে। কিংবা একটা প্রক্রিয়ায় নিতে হবে। এখন এই ট্যালেন্ট বের করার জন্য এই ধরনের টুর্নামেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ।'