১২তম ওভার শেষ না হতেই বাংলাদেশের ছয় নম্বর ব্যাটারকে নামতে হলো। ব্যাটিং অর্ডারের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের বিদায়ের পর ক্রিজে মাহমুদউল্লাহ। দলের ৪২ রানে চতুর্থ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম থামলেন বদলি ফিল্ডার ফেলুকোয়ায়োকে ক্যাচ দিয়ে। ১৭ বলে ৮ রান করে জেরাল্ড কোয়েটজের শিকার তিনি।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ হতাশ করলো। ১০ ওভারে তারা সংগ্রহ করেছে ৩৫ রান, তাও তিন উইকেট হারিয়ে। ৮ বলের মধ্যে তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান পেছনে হাইনরিখ ক্লাসেনের গ্লাভসে ধরা পড়েন। বিনা উইকেটে ৩০ রান করা বাংলাদেশ ৩১ রান করে ৩ উইকেটের বিনিময়ে। পরপর তানজিদ ও শান্তকে আউট করেন মার্কো ইয়ানসেন। লিজাড উইলিয়ামস সাকিবকে ফেরান।
১ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট হারালো বাংলাদেশ
সপ্তম ওভারের প্রথম বলে মার্কো ইয়ানসেনের শর্ট ডেলিভারি তানজিদ হাসান তামিমের গ্লাভস ছুঁয়ে হাইনরিখ ক্লাসেনের গ্লাভসে ধরা পড়ে। দলীয় ৩০ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ১২ রান করে ফিরে যান বাংলাদেশি ওপেনার। পরের বলেই ক্লাসেনের কাছে কট বিহাইন্ড হন নাজমুল হোসেন শান্ত। গোল্ডেন ডাক মারেন তিনি। আট বলের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয় উইকেট হারায়। পরের ওভারে লিজাড উইলিয়ামস ১ রানে সাকিব আল হাসানকে ক্লাসেনের তৃতীয় ক্যাচ বানান। চার বল খেলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। বিনা উইকেটে ৩০ রান করা বাংলাদেশ ৩১ রানে হারালো তিন উইকেট।
৩৮৩ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সতর্ক শুরু
৩৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে নেমে সতর্ক শুরু করেছে বাংলাদেশ। লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিমের উদ্বোধণী জুটি ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান তুলেছে। এই সময়ে একমাত্র বাউন্ডারি হয়েছে তৃতীয় ওভারে লিটনের ব্যাটে।
বাংলাদেশকে ৩৮৩ রানের লক্ষ্য দিলো দক্ষিণ আফ্রিকা
এই বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচের চারটিতে আগে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা সবগুলোতেই তিনশ ছাড়ালো। শুধু নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পরে ব্যাটিং করে সেই ম্যাচে হার মানে প্রোটিয়ারা। তাই বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান চাইছিলেন, তিনি যেন টসে জেতেন। তার চাওয়া পূরণ হয়ণি। টসে জিতে প্রত্যাশিতভাবে আগে ব্যটিংয়ে নেমে প্রোটিয়ারা করলো তিনশর বেশি রান। কুইন্টন ডি ককের ঝড়ো সেঞ্চুরির সঙ্গে এইডেরন মারক্রাম ও হাইনরিখ ক্লাসেনের ব্যাটিং তাণ্ডবে ৩৮২ রান করলো তারা ৫ উইকেটে।
৩৬ রানের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার ২ উইকেট তুলে নিয়ে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। মারক্রাম ও ডি কক ১৩১ রানের জুটি গড়ে ওই ধাক্কা সামাল দেন। বাংলাদেশের বোলাররা প্রোটিয়াদের ওপর চাপ তৈরি করেছিল। ৩৬তম ওভারে তারা ২০০ তে পৌঁছায়। মারক্রাম ৬০ রানে সাকিবের শিকার হওয়ার পর শুরু হয় তাণ্ডব।
মাত্র ৪৯ বলে দুইশ থেকে তিনশতে পৌঁছায় দলীয় স্কোর। ডি কক ১৪০ বলে ১৫ চার ও ৭ ছয়ে ১৭৪ রান করে ডেথ ওভারের মাঝের দিকে থামেন। শেষ ১০ ওভারের মধ্যে সাকিব, শরিফুল ও মোস্তাফিজুর রহমানের ওপর চড়াও হন দুই ব্যাটার। ক্লাসেন শেষ ওভারে সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হন। ৪৯ বলে ২ চার ও ৮ ছয়ে ৯০ রান করেন তিনি। শেষ দিকে ডেভিড মিলারের ১৫ বলে ১ চার ও ৪ ছয়ে ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দুটি উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার হাসান মাহমুদ, অবশ্য ৬ ওভারে ৬৭ রান দিয়ে সবচেয়ে ইকোনমি রেট তার, ১১.১৬। রানের হিসাবে সবচেয়ে বেশি খরুচে ছিলেন শরিফুল ও মোস্তাফিজ। দুজনেই ৯ ওভার বোলিং করেন, দেন ৭৬ রান করে।
শেষ ওভারে ছক্কা মেরে ৯০ রানে পৌঁছান হাইনরিখ ক্লাসেন। সেঞ্চুরি করতে আর ১০ রান লাগতো। দ্বিতীয় বলেও ছয় মারতে চেয়েছিলেন। কভারে তিনি মাহমুদউল্লাহর হাতে ধরা পড়েন। উইকেটটি নেন হাসান মাহমুদ। ৪৯ বলে ২ চার ও ৮ ছয়ে সাজানো ছিল ক্লাসেনের ইনিংস।
১৭৪ রানে ডি কককে থামালেন হাসান
কুইন্টন ডি ককের ঝড় থামলো। মুম্বাইয়ে তাণ্ডব চালিয়ে ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস থেকে ৪ রান দূরে থাকতে আউট হলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার। ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে তাকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে নাসুম আহমেদের ক্যাচ বানান হাসান মাহমুদ। ১৪০ বলে ১৫ চার ও ৭ ছয়ে ১৭৪ রান করেন ডি কক।
ডি কক-ক্লাসেনের তাণ্ডবে তিনশ ছাড়ালো দক্ষিণ আফ্রিকা
কুইন্টন ডি ককের সেঞ্চুরির পর ৩৬তম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা করে ২০০ রান। তাদের দলীয় স্কোর তিনশতে পৌঁছালো ৪৪তম ওভারেই। ২০০ থেকে তিনশতে যেতে প্রোটিয়ারা খেলেছে মাত্র ৪৯ বল।
৪৩তম ওভারে সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে ২২ রান আদায় করেন ডি কক। পরের ওভারে শরিফুল ইসলাম দেন ১৭ রান। তাতে তিনশতে পৌঁছায় স্কোর। ১২৯ বলে ১১ চার ও ৭ ছয়ে দেড়শ রান অতিক্রম করে এই বিশ্বকাপে সেরা ইনিংস খেলে ফেলেছেন ডি কক। ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন হাইনরিখ ক্লাসেনও।
এনিয়ে ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করে টানা সাত ম্যাচে তিনশ ছাড়ানোর স্কোরের রেকর্ডে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভাগ বসালো দক্ষিণ আফ্রিকা।
ডি ককের সেঞ্চুরির পর দু্ইশ ছাড়ালো দক্ষিণ আফ্রিকা
এই বিশ্বকাপে উড়ন্ত ফর্মে আছেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্রুত ২ উইকেট পতনের পর তার ব্যাটেই স্কোরবোর্ডের চেহারা দ্রুত বদলেছে। মারক্রাম ছিলেন ধীরস্থির। কিন্তু কুইন্টন ডি কক আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বোলারদের হতাশা বাড়িয়েছেন। মারক্রামের আউটের পর তিনি তুলে নিয়েছেন টুর্নামেন্টের তৃতীয় সেঞ্চুরি। প্রোটিয়া ওপেনার ১০১ বলে দেখা পেয়েছেন ম্যাজিক ফিগারের। তাতে এক বিশ্বকাপে তিন সেঞ্চুরি পাওয়া প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান তিনি।
১৩১ রানের জুটি ভাঙলেন সাকিব
৩৬ রানে দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের ম্যাচে ফেরাতে ভূমিকা রাখে কুইন্টন ডি কক ও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক এইডেন মারক্রামের জুটি। এই জুটিতে তারা শুরুর চাপটা কাটিয়ে গড়ে দেয় দারুণ ভিত। ডি কক আগ্রাসী থাকলেও ধীর স্থিরভাবে খেলেছেন মারক্রাম। ১৩১ রান যোগ করা জুটিটি ভাঙে এইডেন মারক্রামের বিদায়ে। ততক্ষণে অবশ্য স্কোর ১৬৭ হয়ে গেছে। ৩০.৪ ওভারে জুটি ভেঙেছেন অধিনায়ক সাকিব। মারক্রাম সাকিবকে উঠিয়ে মারতে গিয়ে ৬০ বলে ক্যাচ আউট হয়েছেন। প্রোটিয়া ব্যাটারের ৬৯ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার।