বিশ্বকাপের তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের সঙ্গেও জিততে পারল না বাংলাদেশ। ডাচদের সঙ্গে ২৩০ রানের টার্গেট তাড়ায় চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে ৪২.২ ওভারে ১৪২ রানে অলআউট হয়ে ৮৭ রানে হেরে যায় টাইগাররা।
বিশ্বকাপের চলতি আসরে আফগানিস্তানকে হারিয়ে মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। এরপর টানা পাঁচ ম্যাচে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার পর আজ ডাচদের সঙ্গে হেরে সেমেফাইনালের আগেই বিদায় নিল বাংলাদেশ।
শনিবার ভারতের কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ২৩০ রানে অলআউট হয় নেদারল্যান্ডস। সহজ টার্গেট তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৪২ রানেই অলআউট হয় সাকিবরা।
শনিবার ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের ২৮তম ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে নেদারল্যান্ডস। ইনিংসের শুরুতে তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের গতির মুখে পড়ে মাত্র ৪ রানে দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় ডাচরা।
দলের এমন কঠিন পরিস্থিতিতে হাল ধরেন ওয়েসলি বারেসি ও কলিন একারম্যান। তৃতীয় উইকেটে তারা ৬৮ বলে ৫৯ রানের জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফেরান। এরপর শূণ্য রানের ব্যবধানে ফেরেন ওয়েসলি বারেসি ও কলিন একারম্যান।
কলিন একারম্যানকে ফিরিয়ে এই জুটির বিচ্ছেদ ঘটান সাকিব। দলীয় ৬৩ রানে একারম্যান ৩৩ বলে ১৫ রান করে ফেরেন। এরপর কোনো রান যোগ হওয়ার আগে ফেরেন বারেসিও। তিনি মোস্তাফিজের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৪১ বলে তিন চারে ৪১ রান করেন।
১০৭ রানে ৫ উইকেট পতনের পর ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক স্কট এডোয়ার্ডসের সঙ্গে ১০৫ বলে ৭৮ রানের জুটি গড়েন সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট।
এরপর নেদারল্যান্ডস ৪৪ রানের ব্যবধানে হারায় ৫ উইকেট। ৮৯ বলে ৬টি বাউন্ডারিতে দলীয় সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন অধিনায়ক এডোয়ার্ডস। ৩৫ রানে ফেরেন সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট। ৬ রানে রান আউট সিরাজ আহমেদ। ৯ রানে ফেরেন আরিয়ান বুট।
শেষ উইকেটে রীতিমতো ঝড় তুলেন লোগান ভেন বেক। দলীয় ২২৯ রানে পুল ভেন ম্যাকরেন আউট হলে ইনিংস শেষ হয়। তার আগে মাত্র ১৬ বলে দুই চার আর এক ছক্কায় ২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন লোগান ভেন বেক।
বাংলাদেশ দলের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান ও শেখ মেহেদি হাসান।
৩০০ বলে ২৩০ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনীতে ৪.২ ওভারে ১৯ রানের জুটি গড়ে ফেরেন লিটন কুমার দাস। ঠিক পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে ফেরেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমও।
১৯ রানে ২ ওপেনারের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। দলকে খেলায় ফেরাতে ব্যর্থ হন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসানও। লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসানরা যথাক্রমে ৩, ১৫, ৯ ও ৫ রান করে ফেরেন।
দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে ৪০ বলে ৫টি চার আর এক ছক্কায় ৩৫ রান করে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ৭০ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। তিনি ৫ বলে মাত্র ১ রানে আউট হন।
সপ্তম উইকেটে শেখ মেহেদি হাসানের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই জুটিতে আসে ৭১ বলে ৩৮ রান। এরপর মাত্র ৫ রানে ফেরেন শেখ মেহেদি ও মাহমুদউল্লাহ।
৭ উইকেটে ছিল ১০৮ রান। ৩৮ বলে ১৭ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন শেখ মেহেদি। ৪০ বলে ২০ রানে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দশ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৫ বলে দুই চার আর এক ছক্কায় ২০ রান করে হারের ব্যবধানে কিছুটা কমান পেসার মোস্তাফিজুর রহমান।