সৌম্যের ‘নট আউট’ নিয়ে সিলেটে বিতর্ক

৮ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক
  ০৭ মার্চ ২০২৪, ১৩:৫০

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ মানেই উত্তাপ, সেই ঝাঁজ দেখলো এবার সিলেটের মাঠ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আজ বুধবার (৬ মার্চ) সৌম্য সরকারের একটি আউট নিয়ে ম্যাচের মাঝপথে বাধে ঝামেলা। 
ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের ইনিংসে চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে। বিনুরা ফার্নান্ডোর শর্ট লেংথের বলে পুল করেন সৌম্য। লঙ্কান বোলারের আবেদনে সাড়া দিয়ে সৌম্যকে আউট দেন আম্পায়ার গাজী সোহেল। আউটের বিপক্ষে রিভিউ করেছিলেন সৌম্য। আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখা গেলেও হালকা ফাঁকা দেখা গেছে। যেটির কারণে টেলিভিশন আম্পায়ার মাসুদুর রহমান ‘নট আউট’ ঘোষণা দেন। আউট ভেবে প্রায় বাউন্ডারির কাছে পৌঁছে যাওয়া সৌম্য ফিরে এসেছেন আবার।
টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে পারেনি শ্রীলঙ্কা দল। আম্পায়ার শরফুদ্দৌলাকে ঘিরে ধরেন তারা। শুধু ক্রিকেটাররাই নন, এসময় লঙ্কান কোচ ক্রিস সিলভারউড গিয়েছিলেন চতুর্থ আম্পায়ার তানভীর আহমেদের কাছেও। যদিও তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে, নটআউট থাকেন সৌম্য। এ সময় লঙ্কানরা খেলা বন্ধ রেখে বেশ কিছুক্ষণ মাঠে দাঁড়িয়ে থাকেন।
জীবন পেয়ে সৌম্য খুব একটা ভালো করতে পারেননি। রিভিউ বিতর্কের সময় ১৪ রানে থাকা এই ওপেনার শেষ পর্যন্ত ২২ বলে ২৬ রান করে আউট হন। মাথিশা পাথিরানার বলে মিডউইকেটে স্পষ্ট ক্যাচ নেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। এবার আর দেননি কোনো বিতর্কের সুযোগ।
মাঠের এই পরিস্থিতি নিয়ে উত্তপ্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও। ফেসবুক, টুইটারের মতো প্লাটফর্মে থার্ড আম্পায়ার মুকুলের সমালোচনায় মেতেছেন লঙ্কান সমর্থকরা। এমনকি অনেক বাংলাদেশি সমর্থকও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এই সিদ্ধান্তে।
টুইটার ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, নানাভাবে ব্যাঙ্গ করা হচ্ছে মুকুলকে। কেউ লিখেছেন ইলিটারেট, কেউ জানতে চেয়েছেন আল্ট্রাএজের এই স্পাইকটা তাহলে কোত্থেকে এলো? ক্ষিপ্ত লঙ্কানদের কেউ কেউ এমনও বলছেন, কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নাকি এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন মুকুল। তার সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে কেউ কেউ আইসিসিরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

৮ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৬৫ রানের সংগ্রহ গড়ে লঙ্কানরা। জবাবে শান্তর ছক্কায় ১১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিক শিবির। আর অধিনায়ক পেলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ পঞ্চাশের দেখা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরে ব্যাটিং করে এটিই সবচেয়ে বড় জয়। আগামী শনিবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে লড়বে দুই দল।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ মানেই উত্তাপ, সেই রেশ দেখলো এবার সিলেটের মাঠ। লঙ্কানদের দেওয়া লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন ও সৌম্য। ভালো শুরুর পর চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ভাঙতে বসেছিল বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। বিনুরা ফার্নান্ডোর শর্ট লেংথের বলে পুল করেন সৌম্য। লঙ্কান বোলারের আবেদনে সাড়া দিয়ে সৌম্যকে আউট দেন আম্পায়ার গাজী সোহেল। আউটের বিপক্ষে রিভিউ করেছিলেন সৌম্য। আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখা গেলেও হালকা ফাঁকা দেখা গেছে। যেটির কারণে টেলিভিশন আম্পায়ার মাসুদুর রহমান ‘নট আউট’ ঘোষণা দেন। আউট ভেবে প্রায় বাউন্ডারির কাছে পৌঁছে যাওয়া সৌম্য ফিরে আসেন আবার।
টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে পারেনি শ্রীলঙ্কা দল। চোখেমুখে বিস্ময় নিয়ে আম্পায়ারকে ঘিরে ধরেন চারিথ আসালাঙ্কারা। মিনিটখানেক যুক্তিতর্কের পর তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে, নটআউট থাকেন সৌম্য। বিতর্কিত রিভিউয়ে বেঁচে যাওয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সৌম্য সরকার। দলীয় ৬৮ রানে পাথিরানার বলে ম্যাথুসের ক্যাচ হয়ে ফেরেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৫ চারে ২২ বলে ২৬ করে ফেরেন সৌম্য। এরপর লিটন দাসকেও ফেরালেন পাথিরানা। ২৪ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৬ রানে থামলেন ডানহাতি ব্যাটার।
লিটন-সৌম্যের শক্ত ভিত গড়ার পর শান্ত ও হৃদয়ের ব্যাটে জয়ের পথে ছুটতে থাকে বাংলাদেশ। ৫৫ বলে ৮৭ রানের জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তারা। ছক্কায় জয়ের রান করে হাফ সেঞ্চুরিও পূর্ণ করেন শান্ত। ৩৮ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি, ২৫ বলে ৩২ রান করেন হৃদয়।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। আভিষ্কা ফার্নান্দোকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ৭ বল খেলে শূন্য রানে ফেরেন এই ওপেনার। ১ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে দলকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস ও কামিন্দু মেন্ডিস। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই জুটিকে থামান সৌম্য সরকার। ২২ বলে ৩৬ রান করেন কুশল মেন্ডিস। তার বিদায়ে ভাঙে ৬৬ রানের জুটি।
কুশল মেন্ডিসের বিদায়ের পর রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন কামিন্দু মেন্ডিসও। আউট হওয়ার আগে করেন ২৭ বলে ৩৭ রান। তার বিদায়ে ৭৭ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দলীয় ৯২ রানে মুস্তাফিজের শিকার হন সাদিরা সামারাবিক্রমা। আগের ম্যাচে ৬১ রান করেছিলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটার। এবার ১১ বল খেলে মাত্র ৭ রান করেছেন সাদিরা।
৪ উইকেট হারানোর পর ঝড় তুলেছিলেন আসালাঙ্কা। তাকে থামান শেখ মেহেদী। বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ১৪ বলে ২৮ রান করেন তিনি। এরপর দলের হাল ধরেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দাসুন শানাকা। পঞ্চম উইকেটে এই জুটির ৫২ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তুলতে সক্ষম শ্রীলঙ্কা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ২১ বলে ৩২ ও দাসুন শানাকা ১৮ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন।
উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান খরচ করেন শরিফুল। ৪ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন শেখ মেহেদী। মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৪২ এবং তাসকিন ৩৮ রান দিয়ে নেন একটি করে উইকেট। সৌম্য সরকার ১ ওভারে ৫ রানে নেন এক উইকেট।
বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস (উইকেটরক্ষক), সৌম্য সরকার, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলী, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: আভিষ্কা ফার্নান্ডো, কুশল মেন্ডিস, কামিন্দু মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দাসুন শানাকা, মাহিশ থিকশানা, দিলশান মাদুশঙ্কা, বিনুরা ফার্নান্ডো, মাথিশা পাথিরানা।