সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকা,ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিদায়

স্পোর্টস ডেস্ক
  ২৪ জুন ২০২৪, ১১:৫১
আপডেট  : ২৪ জুন ২০২৪, ১৪:৩৫

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডিএলএস পদ্ধতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর এরই সঙ্গে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অপরাজিত তারা। গ্রুপ পর্বের ৪ এবং সুপার এইটের ৩ ম্যাচ। টানা ৭ জয়ে বিশ্বকাপ দারুন কাটাচ্ছে চোকার্সখ্যাত প্রোটিয়াসরা।যে কোনো বিশ্বকাপে ভালো খেললেও সেমিফাইনালে এসে পা হড়কে যায় প্রোটিয়াদের। এবার কি তারা তাদের এই দুর্নাম ঘুচাতে পারবে? এরজন্য অপেক্ষা করতে হবে সেমিফাইনালের ম্যাচের জন্য। তবে আইসিসির অদ্ভুদ সময়সূচির জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনালের ম্যাচ কবে কোন মাঠে অনুষ্ঠিত কবে তা জানা যাবে কাল।এই হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচের আগে জয়ের বিকল্প ছিল তাদের। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলেছিল ১৩৫ রান। সেটি যে খুব বড় নয়, তা বোঝা যাচ্ছিল আগে থেকেই। তবে আন্দ্রে রাসেলের পর রোস্টন চেজের বোলিং ম্যাচে রেখেছিল স্বাগতিকদের। শেষ পর্যন্ত ১৪ বলে অপরাজিত ২১ রানের ইনিংসে ২০১৪ সালের পর প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমিফাইনালে তোলেন ইয়ানসেন।টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার পর আগের ম্যাচে অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংস খেলা শাই হোপকে প্রথম ওভারে ফেরান মার্কো ইয়ানসেন, দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসে নিকোলাস পুরানের উইকেট নেন এইডেন মার্করাম। ৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ধাক্কা খায় শুরুতেই। রোস্টন চেজ ও কাইল মায়ার্সের জুটির সময়ে পড়ে সহজ তিনটি ক্যাচ। চতুর্থ সুযোগটিকে অবশ্য সরাসরি ক্যাচ মিস বলা যাবে না, তবে সেটি নিতে গিয়ে সংঘর্ষ হয়ে যায় দুই পেসার মার্কো ইয়ানসেন ও কাগিসো রাবাদার।সুযোগ কাজে লাগিয়ে ক্যারিবিয়ানদের বেশ নাজুক অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন মায়ার্স ও চেজ, তবে দুজনই আউট হন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গিয়ে। ব্র্যান্ডন কিংয়ের চোটে বিশ্বকাপ দলে আসা মায়ার্সের এটিই ছিল প্রথম ম্যাচ, তবে অনেকটা সময় ক্রিজে থাকলেও সুবিধা করতে পারেননি। তাব্রেইজ শামসির দ্বিতীয় ওভারে ডিপ কাভার পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন ৩৪ বলে ৩৫ রান করে।

কেশব মহারাজের ফ্লাইটে পরাস্ত হয়ে স্টাম্পিং ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল, শামসির বলে স্লিপে মার্করামের হাতে শেরফান রাদারফোর্ড ধরা পড়ার পর লং অনে ক্যাচ দেন চেজ। ৪২ বলে ৫২ রান করে থামেন চেজ।আনরিখ নর্কিয়া ও কাগিসো রাবাদার পেস একেবারে শেষের জন্য জমা রেখেছিলেন মার্করাম। তবে নর্কিয়ার গতির জবাব টানা দুই ছক্কায় দিয়েছিলেন রাসেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন শেষের লাফের আশায়। কিন্তু ১৮তম ওভারে ইনিংসে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আসা রাবাদার বলে নর্কিয়ার সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে থামতে হয় রাসেলকে। ইনিংসে তখনো বাকি ছিল ১৭ বল, রাসেলের জন্য যেটি হতে পারত আদর্শ মঞ্চ। রাবাদার ওই ওভারে আকিল হোসেনও থামেন, আসে মাত্র ১ রান। শেষ ২ ওভারে ১৭ রান তুললেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ থামে ১৫০ রানের বেশ আগেই।রান তাড়ায় আকিলের করা প্রথম ওভারে ৩ চারে শুরু করেন ফর্মে থাকা ডি কক। তবে রাসেলের করা জোড়া উইকেটের দ্বিতীয় ওভারে যেন প্রাণ ফেরে স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে। ফর্ম খুঁজে ফেরা রিজা হেনড্রিকসের পর রাসেলের শিকার ডি ককও। এরপরই নামে বৃষ্টি।প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকার পর ১৭ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৩ রান, পাওয়ারপ্লেও কমে আসে ১ ওভার। ষষ্ঠ ও অষ্টম ওভারে মার্করাম ও হাইনরিখ ক্লাসেনকে ফিরিয়ে আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আশা জোগান আলজারি জোসেফ। যদিও মাঝে সপ্তম ওভারে গুড়াকেশ মোতির ওপর চড়াও হয়েছিলেন ক্লাসেন, ২০ রানের ওই ওভারটিই দক্ষিণ আফ্রিকাকে এগিয়ে দেয় অনেকটা।

ডেভিড মিলার চেষ্টা করছিলেন উইকেট ধরে রাখতে, ১২তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসা চেজকে ব্যাকফুটে গিয়ে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। ১৪ বলে ৪ রানে বোল্ড তিনি, দক্ষিণ আফ্রিকার তখন দরকার ৩২ বলে ৩০ রান। মাঝে রাসেলের ওভার পেরিয়ে আবার আসেন চেজ, তাঁকে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন ট্রিস্টান স্টাবস। চেজের ওপর চড়াও হওয়ার মাশুল দিতে হয় কেশব মহারাজকেও। তবে চেজের ওই ওভারে পুরানের মিসফিল্ডে ডাবলস আর শেষে রাবাদার মারা চারে চাপ অনেকটাই কমে আসে দক্ষিণ আফ্রিকার। শেষ ওভারে ওবেদ ম্যাকয়ের প্রথম বলে ছক্কা মেরে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় নিশ্চিত করেন ইয়ানসেন।