হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত সাকিব আল হাসানকে বাংলাদেশ দলে খেলাতে চায় বিসিবি। আজ এ কথা জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
৫ আগস্ট আদাবরে পোশাক কারখানার কর্মী মো. রুবেল হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা রফিকুল ইসলামের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও অনেকের সঙ্গে আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিবকে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরে সরকার পতনের দাবিতে সংঘর্ষের সময় ৫ আগস্ট পোশাক কারখানার কর্মী রুবেল গুলিবিদ্ধ হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুর অনেক আগে থেকেই দেশের বাইরে সাকিব। আন্দোলন যখন দানা বাঁধতে শুরু করে, তখন সাকিব খেলছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলসি)। আর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময় তিনি ব্যস্ত ছিলেন কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ নিয়ে।
হত্যা মামলার আসামি সাকিবকে জাতীয় দল থেকে বাদ দিয়ে মামলার তদন্তের স্বার্থে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বিসিবি বরাবর একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয় গত ২৪ আগস্ট। বিসিবি সভাপতি এর আগে বলেছিলেন, সাকিবের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করে প্রথম টেস্টের পরে সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড।
সাকিবের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের সমর্থন করি না : মুশফিক
পাকিস্তান-বাংলাদেশের রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের মধ্যেই ঢাকায় এক হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এ মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৫৬ জনকে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে সাকিবের সতীর্থ মুশফিকুর রহিম এ মামলাকে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ বলেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাকিবকে নিয়ে এক পোস্টে মুশফিক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘সাকিবকে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে সর্বাধিক উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়ার জন্য অভিনন্দন। আমি অনেকবার বলেছি এবং আবার বলছি যে সাকিবের মতো একজন চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে খেলতে পেরে আমি গর্বিত।’
মুশফিক এই পোস্টে যোগ করেছেন, ‘একজন টিমমেট এবং ভাই হিসেবে, আমি সাকিবের কঠিন সময়গুলোর সঙ্গী এবং আমি তার বিরুদ্ধে তোলা মিথ্যা অভিযোগের সমর্থন করি না; কারণ, আমি জানি সে কখনোই অমানবিক কাজে লিপ্ত হবে না। আমরা সব সময় তোমার পাশে আছি, বন্ধু।’
গতকাল টেস্ট দলের আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুমিনুল হকও সাকিবকে সমর্থন জানিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘প্রায় ১৮ বছর দেশের ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করছেন সাকিব আল হাসান। দেশের ক্রিকেটে তাঁর হাত ধরে এসেছে কত জয়! সেই মানুষটা এখন মিথ্যা মামলার আসামি!’
মুমিনুল এ কথাও বলেছেন, ‘গার্মেন্টস কর্মী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত সাকিব ভাই তখন কানাডায় খেলছিলেন। দেশেও ছিলেন না লম্বা সময়। সাকিব ভাইয়ের নামে এমন মামলা অপ্রত্যাশিত। এমন ঘটনা দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। যে ছাত্র-জনতার রক্তে নতুন বাংলাদেশ দেখলাম, সেই বাংলাদেশে প্রশ্নবিদ্ধ মামলা করে হয়রানি অপ্রত্যাশিত। আমরা চাই নতুন বাংলাদেশে সবাই ন্যায়বিচার পাবে। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের প্রতি সব সময়ই সমর্থন ছিল, আছে এবং থাকবে। সংকট কাটিয়ে নিশ্চয়ই ভক্তদের ভালোবাসায় আগের মতোই সিক্ত হবে সাকিব ভাই।’