রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ মাঠে গড়ানোর আগে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল পাকিস্তান। বাংলাদেশকে হারাতে তারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিল যে স্বাগতিকরা প্রথম টেস্টে দল সাজাবে অল পেস অ্যাটাক নিয়ে। এমন খবরের পর দেশটির সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলি বলেছিলেন, বাংলাদেশকে এই ম্যাচে একমাত্র বাঁচাতে পারে বৃষ্টি। অর্থাৎ তারা টাইগারদের বিপক্ষে জয় একপ্রকার নিশ্চিত করেই রেখেছিলেন।
আর এটা হওয়াটাও স্বাভাবিক কারণ বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচ খেলার স্বীকৃতি পাওয়ার পর এই সিরিজের আগ অবদি সাদা পোশাকে জয়ের দেখা পায়নি। তবে তাদের এই আত্মবিশ্বাস ভেঙে শান্তরা প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় তুলে নেন। আর টাইগারদের কাছে এমন হার মেনে নিতে পারছে না পাকিস্তানের ক্রিকেট মহল। ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন তা, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে জানাচ্ছে নিদেরে প্রতিক্রিয়া।
এই জয়ের আগে ১৩টি টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। তার মধ্যে ১২টিতেই জয় পেয়েছিল পাকিস্তান আর একটি হয়েছিল ড্র। তবে ইতিহাস গড়ে গেল পরশু টাইগাররা প্রথম জয় পান। শান্তদের জন্য যেমন এই জয় ঐতিহাসিক, তেমনি পাকিস্তানের জন্যও এটিকে ঐতিহাসিক পরাজয়। আর এমন হারের পর সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক ও সাবেক বোর্ড প্রধান রামিজ রাজা কাঠগড়ায় তুলেছেন অধিনায়ক শান মাসুদকে। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় অধিনায়কের নিজের পারফরম্যান্স ও দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন।
তিনি বলেন, 'শান মাসুদ এখন পরাজয়ের ধারাতেই আছে। অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনে ব্যাপারটি কঠিন ছিল, পাকিস্তানের জন্য সেখানে সিরিজ জয় ছিল অসম্ভব। তবে এখন তো দেশের কন্ডিশনে বাংলাদেশের মতো দলের কাছে হারতে হচ্ছে! ব্যাটসম্যানরা নিবেদন দেখাতে পারেননি, বোলাররা ছিল ভয়াবহ। মাসুদের নিজের ব্যাটিংয়ের উন্নতি দরকার এবং তাকে দেখাতে হবে যে, ক্রিকেটের কিছু বোধ তার আছে। সে অভিজ্ঞ অধিনায়ক, পিএসএল ও কাউন্টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছে। তবে জানি না, এই অগাস্ট মাসে কোন ভাবনা থেকে সে চার পেসার নিল একাদশে।'
এছাড়া সাবেক পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক-ব্যাটস্যান কামরান আকমল মনে করেন খেলোয়াড়দের মধ্যে ম্যাচের সিরিয়াসনেস নেই। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, 'ক্রিকেটাররা আগের পাঁচ বছরে কিছুই শেখেনি। আমাদের ব্যাটাররা ক্লাব ক্রিকেটারদের মতো খেলেছেন। আসলে তারাও এইভাবে খেলেন না। তাদের খেলার অ্যাপ্রোচ খারাপ ছিল। তারপরও তারা ড্রেসিং রুমে হাস্যোজ্জ্বল ছিল। কোনো সিরিয়াসনেস ছিল না আর এটা নিয়ে তাদের কেউ প্রশ্নও করেনি। দেখে মনে হচ্ছিল তারা সময় কাটিয়ে বিনোদন নিতে খেলতে এসেছে।'
এদিকে এমন দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আরেক সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি। পাশাপাশি অধিনায়ক সান মাসুদেরও সমালোচনা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়ে লেখেন, '১০ উইকেটের এমন হারের পর প্রশ্ন তুলতেই হয় ঘরের মাঠে এমন উইকেট তৈরি করা এবং কোনো স্পিনার না নিয়ে চার পেসারকো খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে। এটি আমার কাছে হোম কন্ডিশন সম্পর্কে সচেতনতার অভাব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।' তবে বাংলাদেশেরও প্রশংসা করেন তিনি। বলেন, 'তবে পুরো পাঁচ দিন বাংলাদেশ যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলেছে, তার কৃতিত্ব তাদের দিতেই হবে।'