ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এখনো টেস্ট জয় অধরা রয়েছে বাংলাদেশের। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পরে এবার সুযোগ এসেছে ভারতের বিপক্ষেও জয় খরা ঘোচানোর। সেজন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে টাইগার শিবিরে। বসে নেই ভারতীয়রাও। নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করছেন রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিরা। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে এগিয়ে থাকলে এই সিরিজেও ইতিহাস গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন উঠতি তারকা জাকের আলি অনিক। সেক্ষেত্রে দলীয় শক্তির ওপরে বিশ্বাস রেখেছেন বাংলাদেশের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
গতকাল গণমাধ্যমের আসেন জাকের আলি অনিক বলেছেন, 'যেহেতু সবশেষ সিরিজটি ভালো গিয়েছে ভারত সিরিজেও সেই আত্মবিশ্বাসটা অবশ্যই থাকবে। এ বছর চেষ্টা থাকবে যা আগে কখনো দল হিসেবে আমরা করতে পারিনি, সেটা করার চেষ্টা করব।' প্রতিপক্ষ টেস্টের বড় দলল। সেটিও জানেন তিনি। সেজন্য বলেছেন, 'চ্যালেঞ্জ তো সবদিক থেকেই থাকবে। তাদের ব্যাটিং অনেক ভালো। আমরা যদি ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারি। সবশেষ দুই টেস্টে আমরা ভালো করেছি, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে ভালো করেছি। আমরা ভুগেতে থাকি ব্যাটিং নিয়েই, ব্যাটিং যখন খারাপ হয় তখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আমরা হারিয়ে ফেলি। বোলাররা বেশির ভাগ সময়ই সাপোর্ট করে। ব্যাটিং ভালো করতে পারলে আমাদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যাবে।'
এই প্রথম জাতীয় দলের সাদা পোশাকের সংস্করণে ডাক পেয়েছেন জাকের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, 'অবশ্যই ভালো একটা অনুভূতি। টেস্ট ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন থাকে সবারই। সেই ক্রিকেটের জন্য নির্বাচিত হয়ে অবশ্যই ভালো লাগছে। আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমি ২০১৭ সাল থেকে খেলছি। ঘরোয়া কিংবা যে সংস্করণই হোক আমি ভালো করার চেষ্টা করি। ওরকম প্রক্রিয়াতেই আগাই। স্কোয়াডে নির্বাচিত যেহেতু হয়েছি, নির্বাচকরা প্রস্তুত মনে করেছেন বলেই নির্বাচন করেছেন। এখন আমার দায়িত্ব, নিজের সেরা পারফরম্যান্স করব। ভারতীয় বোলার নিয়ে অবশ্যই পরিকল্পনা হচ্ছে, যারা যারা খেলবে। নিম্নের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব। অবশ্যই চ্যালেঞ্জ থাকবে। তবে এই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যদি রান করা যায়, তাহলে আমার মনে হয় অনেক ভালো কিছু হবে।'
জাকের বলেছেন, 'আমি কয়েক দিন আগেও বললাম, আমরা যে সিরিজটা জিতে এলাম যেখানে আধিপত্য দেখিয়ে দুইটা ম্যাচ জিতলাম, জিতে আসা, এটা তো অবশ্যই সংস্কৃতি বদলানোর একটা আভাস। আর হ্যাঁ, দলে সুযোগ পেয়ে ভালো লাগছে। চেষ্টা করব সেরাটা দেওয়ার।'
তিনি আরও বলেছেন, 'প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার খুব কষ্ট লাগে, অনেকে বলে যে, পিকনিক ক্রিকেট। এই জিনিসটা খুব কষ্ট লাগে। আমরা জানি, আমরা কতটা কষ্ট করে খেলি একজন ক্রিকেটার হিসেবে। তাই দয়া করে এই কথাগুলো বলবেন না। আমি এই কথায় খুব দুঃখ পাই। আমি ২০১৭ সাল থেকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলি। আমি জানি, আমার কতটা কষ্ট হয়। একেকটা রান করতে কতটা কষ্ট হয়েছে। তাই সবার কাছে অনুরোধ থাকবে। ক্রিকেটার হিসেবে আমরা অনেক কষ্ট করি। আরও কষ্ট করব। আমাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট দিনদিন উন্নতি হচ্ছে, আরো হবে।'
দেশীয় কোচদের নিয়ে জাকের বলেছেন, 'সবশেষ কয়েকটা দিন যে আমরা অনুশীলন করলাম সেখানে সোহেল স্যার, বাবুল স্যার উনারা অনেক পরিশ্রম করেছেন। দুই শিফটেও কাজ করেছেন। সকল বেলা আমাদের লাল বলের ক্রিকেট দেখেছেন। বিকলে আবার সাদা বলের ক্রিকেট দেখেছেন। উনারা কী পরিমাণ কষ্ট করছেন, আপনারা বোঝেন। ঘরোয়া কোচদের অবদান থ্যাংকলেস বলা যায়। উনাদের সেভাবে হাইলাইট করা হয় না। কারো নাম ধরে বলতে চাই না। সবারই অবদান আছে। প্রত্যেক কোচের সঙ্গে আমার কাজ করা হয়েছে। সবাইকে ছোটবেলা থেকে চিনি। উনারা আমাদের খুঁটিনাটি সব জানেন। উনাদের সঙ্গে যুক্তভাবে কাজ করা যায়।'