সংক্ষিপ্ত স্কোর: দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ৬৪ ওভারে ২৮৭/৪ ডি., লিড ৫১৪ (রাহুল ২২*, গিল ১১৯*: রোহিত ৫, জয়সওয়াল ১০, কোহলি ১৭, পান্ত ১০৯)
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৪৭.১ ওভারে ১৪৯/১০ ( মিরাজ ২৭*; সাদমান ২, জাকির ৩, মুমিনুল ০, শান্ত ২০, মুশফিক ৮, লিটন ২২, সাকিব ৩২, হাসান ৯, তাসকিন ১১, নাহিদ ১১)
প্রথম ইনিংসে ভারত ৯১.২ ওভারে ৩৭৬/১০ (সিরাজ ০*; রোহিত ৬, গিল ০, কোহলি ৬, পান্ত ৩৯, জয়সওয়াল ৫৬, রাহুল ১৬, জাদেজা ৮৬, আকাশ ১৭, অশ্বিন ১১৩, বুমরা ৭)
তৃতীয় দিন বাংলাদেশকে দ্রুত গুটিয়ে দেওয়ার মিশনে সফল হয়নি বাংলাদেশ। বরং তাদের হতাশ করে স্বাগতিক ভারত রানের পাহাড় গড়েছে। ৫১৪ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছে তারা। তাতে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ৫১৫ রানের।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৭ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের সামনে প্রতিরোধ গড়ে খেলেন পান্ত-গিল জুটি। গতকাল থেকে এই জুটিই ভারতের স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করে। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে দাপট দেখানো জুটি ভাঙে দ্বিতীয় সেশনে। তাদের প্রতিরোধে প্রথম সেশনে কোনও উইকেট ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ।তাদের ১৬৭ রানের জুটি ভাঙার পর গিল-রাহুল মিলে ৪ উইকেটে ২৮৭ রান পর্যন্ত গেলে ইনিংস ঘোষণা করেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এদিন পান্ত, গিল দুজনেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। পান্ত ১০৯ রানে আউট হলেও গিল অপরাজিত ছিলেন ১১৯ রানে। সঙ্গে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন লোকেশ রাহুল।
দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ১০৩ রানে সর্বোচ্চ দুই উইকেট মেহেদী হাসান মিরাজের। একটি করে নিয়েছেন তাসকিন ও নাহিদ রানা।
পান্তের বিদায়ের পর গিলের সেঞ্চুরি
একটা সময় আক্রমণাত্মক ছিলেন শুবমান গিল। তার পর ধীরে সুস্থে ব্যাট করেছেন। পান্তের বিদায়ের পর সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনিও। গিল তার ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিতে খেলেছেন ১৬১ বল।
সেঞ্চুরির পর ফিরলেন পান্ত, ভাঙলো ১৬৭ রানের জুটি
লাঞ্চের আগেই ফিরতে পারতেন ঋষভ পান্ত। কিন্তু জীবন পেয়ে দ্বিতীয় সেশনে ফিরেই দ্রুত গতিতে খেলে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। পান্ত সেঞ্চুরি পান ১২৪ বলে। সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ওভারেই অবশ্য তাকে বিদায় দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ভারতের উইকেটকিপার ব্যাটার ১০৯ রানে ফিরেছেন। তার ১২৮ বলের ইনিংসে ছিল ১৩টি চার ও ৪টি ছয়ের মার।
পান্তের বিদায়ে ভেঙেছে ১৬৭ রানের বড় জুটি। তাতে প্রথম সেশন পর উইকেটের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। ততক্ষণে ভারতের লিড সাড়ে চারশ ছাড়িয়েছে।
এই টেস্ট সেঞ্চুরিটা অবশ্যই পান্তের জন্য বিশেষ। ২০২২ সালে বাংলাদেশ সফর শেষে ভারতে ফিরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। কঠিন লড়াই শেষে ২১ মাস পর টেস্টে প্রত্যাবর্তন করে পেয়েছেন সেঞ্চুরির স্বাদ। মিরপুরে সর্বশেষ টেস্টেও খেলেছিলেন ৯৩ রানের ইনিংস।
বাংলাদেশের উইকেটহীন সেশন, ভারতের লিড ৪৩২
চেন্নাইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্টে তৃতীয় দিন সকালে দ্রুত উইকেট নেওয়ার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু কোনও সাফল্য পায়নি সফরকারীরা। তাদের হতাশ করে প্রথম সেশনের পুরোটা সময় আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন শুবমান গিল ও ঋষভ পান্ত। চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে লাঞ্চ বিরতিতে গেছেন তারা। তাতে এই টেস্টে চালকের আসনে স্বাগতিকরাই। পান্ত-গিলের জুটিতে যোগ হয়েছে ১৩৮ রান। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে রয়েছেন। অবশ্য লাঞ্চের আগে এই জুটি ভাঙার সুযোগ ছিল। কিন্তু পান্তের ক্যাচ নিতে পারেননি সাকিব। উইকেটহীন সেশনে ২৮ ওভার খেলা হয়েছে। যোগ হয়েছে ১২৪ রান।
প্রথম ঘণ্টায় কিছুটা দেখে শুনে খেললেও পরের ঘণ্টায় গিয়ার চেঞ্জ করেন দুই ব্যাটার। ৬ ওভারেই তারা যোগ করেন পঞ্চাশ রান। বিরতিতে যাওয়ার আগে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ৫১ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৫। লিড দাঁড়িয়েছে ৪৩২।
পান্তের ক্যাচ ছাড়লেন শান্ত
পান্ত-গিলের শতরান ছাড়ানো জুটিতে চারশ ছাড়িয়েছে ভারতের লিড। লাঞ্চের আগে এই জুটি ভাঙার সুযোগ তৈরি করেন সাকিব আল হাসান। আক্রমণাত্মকভাবে খেলা পান্ত ৪৮.৬ ওভারে মেরে খেলতে চেয়েছিলেন। স্লগ সুইপ করতে গেলে বল উঠে যায় আকাশে। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্ত বল হাতে নিয়েও সেটি রাখতে পারেননি। বেঁচে যান পান্ত। ভারতীয় ব্যাটার তখন ৭২ রানে ব্যাট করছিলেন।
গিলের পর পান্তের ফিফটি
তৃতীয় দিন সকালে দারুণ জুটিতে বাংলাদেশকে হতাশ করেছেন পান্ত-গিল। শুরুতে গিল ফিফটি তুলে নিয়েছেন। তাকে সঙ্গ দেওয়া পান্তও দেখা পেয়েছেন ফিফটির। যা তার ক্যারিয়ারের ১২তম। পান্ত ফিফটি তুলে নেন ৮৮ বলে।
তৃতীয় দিন বাংলাদেশের লক্ষ্য ভারতকে দ্রুত অলআউট করার। বিপরীতে স্বাগতিকদের লক্ষ্য দ্রুত স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করার। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন শুবমান গিল ও ঋষভ পান্ত। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে আধা ঘণ্টার মধ্যেই টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি তুলে নিয়েছেন গিল। ৭৯ বলে ফিফটি তুলে নিতে মিরাজের একই ওভারে দুটি ছয় মেরেছেন। তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন পান্ত। এই জুটি পঞ্চাশও ছাড়িয়েছে।
ভারতকে দ্রুত গুটিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ
চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা ছিল বোলারদের। ১৭ উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন এদিন দুই দল। বাংলাদেশের পড়েছে ১০ উইকেট, ভারতের ৭ উইকেট। তবে ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন স্বাগতিকদের হাতেই।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ভারতকে চারশ রানের আগেই অলআউট করার। ৩৩৯ রানে ছয় উইকেটে দিন শুরু করা ভারত ৩৭৬ রানে অলআউট হয়েছে। কিন্তু নিজেরা প্রথম ইনিংসে যসপ্রীত বুমরা, আকাশ দীপ ও রবীন্দ্র জাদেজার সামনে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৪৯ রানে অলআউট হয়ে গেছে।
বাংলাদেশকে ফলোঅনে পাঠানোর সুযোগ থাকলেও ভারত ২২৭ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছে। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে বাংলাদেশ দ্রুত ফেরাতে পারলেও ম্যাচ স্বাগতিকদের হাতের মুঠোয়। ২৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৮১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে। ৩০৮ রানের লিড নিয়ে শুরু করেছে তৃতীয় দিনের খেলা।
এদিনও বাংলাদেশের লক্ষ্য স্বাগতিকদের যত দ্রুত সম্ভব অলআউট করার।