‘শেষ হতে কতক্ষণ?’ প্রেস বক্সে ঢুকতেই প্রশ্নটা করলেন তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা। প্রশ্নের উত্তরটা স্বাভাবিকভাবেই ইতিবাচক ছিল না। বাংলাদেশ দলও চেন্নাই টেস্টের চতুর্থ দিন সকালের সেশনে ইতিবাচক কিছু করে দেখাতে পারেনি। লাঞ্চের আগেই ২৩৪ রানে অলআউট বাংলাদেশ।
আগের দিন ভারতের ৫১৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ১৫৮ রান করে দিন শেষ করেছিল। ক্রিজে ছিলেন নাজমুল হোসেন ও সাকিব আল হাসান। আজ দুজন মিলে যা করেছেন, বাংলাদেশের স্কোরটা শুধু দুই শর ওপারে গেছে।
আগের দিন ৫১ রানে অপরাজিত থাকা নাজমুল সেঞ্চুরির সুবাস ছড়িয়েও আউট হয়েছেন ৮২ রানে। আর লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ দ্রুত আউট হওয়ায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৩৪ রানই করতে পারে। ভারতের ২৮০ রানের বিশাল জয়ে বড় অবদান ঘরের ছেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে ধস নামান তিনি। আরেক স্পিনার জাদেজার শিকার ৩ উইকেট।
রোববার বলেই সম্ভবত চেন্নাই টেস্টের চার দিনের খেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর্শক হলো আজই। সকাল থেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে অবশ্য খুব বেশি ক্রিকেট দেখার সৌভাগ্য হয়নি দর্শকদের। দিনের শুরুতে বুমরা ও সিরাজ বরাবরের মতোই আগুনে বোলিং করেছেন। বারবার সাকিব ও নাজমুলের ব্যাট ঘেঁষে গেছে তাদের বল। কয়েক ওভারের জন্য নাজমুজলের সঙ্গে সিরাজের স্লেজিং–যুদ্ধটাও মাঠে আসা দর্শকদের বিনোদন দিয়েছে।
তবে দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানই ছিলেন আক্রমণাত্মক মানসিকতায়। তাই দুজন রানের দেখাও পেয়েছেন। পেসারদের স্পেল শেষ হওয়ার পর অশ্বিন ও জাদেজার বলে সুইপ ও রিভার্স সুইপ করে বেশ কয়েকবার বাউন্ডারি খুঁজে নেন। দুজনের জুটির রানও বাড়তে থাকে। কিন্তু অশ্বিনের বলে সাকিব শর্ট লেগে ক্যাচ দিলে ৪৮ রানে থামে জুটি। এরপর লিটন (১) ও মিরাজও (৮) নাজমুলকে সঙ্গ দিতে পারেননি। জাদেজার বলে কট বিহাইন্ড হয়েছেন লিটন।
মিরাজ অশ্বিনকে মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ আউট হন। টিকে থাকেননি নাজমুলও। অশ্বিনের বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করার পর জাদেজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ তোলেন তিনি। ১২৭ বলে ৮২ রানে থামে নাজমুলের ইনিংস। ৮টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের ইনিংসে। এরপর তাসকিন, হাসান দ্রুত আউট হলে লাঞ্চের প্রায় ২০ মিনিট আগেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ৩৭৬ ও ৬৪ ওভারে ২৮৭/৪ ডিক্লে.।
বাংলাদেশ: ১৪৯ ও ৬২. ১ ওভারে ২৩৪ (নাজমুল ৮২, সাদমান ৩৫, জাকির ৩৩, সাকিব ২৫; অশ্বিন ৬/৮৮, জাদেজা ৩/৫৮, বুমরা ১/২৪)।
ফল: ভারত ২৮০ রানে জয়ী।
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ভারত ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রবীচন্দ্রন অশ্বিন।