লা লিগার চলতি মৌসুমে উড়ছিল বার্সেলোনা। টানা সাত জয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করেছিল তারা। এ নিয়ে দলের সবচেয়ে তরুণ তারকা ইয়ামাল রিয়াল মাদ্রিদকে খোঁচাও মেরেছিলেন। কিন্তু কাতালান ক্লাবটিকে হারের তিতো স্বাদ ভোগ করিয়েছে দুর্বল ওসাসুনা। ঘরের মাঠে বার্সেলোনাকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে উজ্জীবিত ওসাসুনা। ২৮ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দিবাগত রাতে ঘরের মাঠে প্রথমার্ধের আন্তে বুদিমির ও ব্রায়ান সারাগোসার গোলে এগিয়ে যায় ওসাসুনা। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান কমান পাউ ভিক্তর। পরে পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন বুদিমির। এরপর আবেল ব্রেতোনেসের গোলে ব্যবধান বাড়ায় স্বাগতিকরা। শেষ দিকে ইয়ামালের গোল করলেও ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারে বার্সেলোনা।
এই আট ম্যাচে প্রথমবার কোনোটিতে তারা একাধিক গোল হজম করল। সেই সঙ্গে বার্সেলোনার বিপক্ষে তৃতীয়বার অন্তত চার গোল করল ওসাসুনা। আগের দুবার ছিল ১৯৩৬ সালের জুনে (স্প্যানিশ কাপে ৪-২) ও ১৯৮৪ সালের জানুয়ারিতে (লা লিগায় ৪-২)।
এদিন ম্যাচের শুরুতেই এলোমেলো ফুটবল খেলতে থাকে বার্সেলোনা। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ১৮তম মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বাঁ দিক থেকে সারাগোসার ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ক্রোয়াট স্ট্রাইকার বুদিমির।
১০ মিনিট পর দ্বিতীয় গোল হজম করে বার্সেলোনা। মাঝমাঠে আলগা বল পেয়ে পাস দেন পাবলো ইবানেস। দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল ধরে বক্সে ঢুকে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে অসাধারণ বডি ডজে ফাঁকি দিয়ে গোলটি করেন স্প্যানিশ উইঙ্গার সারাগোসা। ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে গোল শোধ করতে নেমে মরিয়া হয়ে ওঠে কাতালানরা। ৫৩তম মিনিটে ব্যবধান কমায় তারা। বক্সের ভেতর থেকে রবের্ত লেভানদোভস্কির শট দারুণভাবে ফিরিয়ে জাল অক্ষত রাখেন এররেরা। পরক্ষণে তার ভুলেই ব্যবধান কমায় সফরকারীরা।
এররেরা বক্সে বল ধরে একটু এগিয়ে এসে পাস দেন নিজেদের এক খেলোয়াড়ের উদ্দেশ্যে; কিন্তু পাসটা ছিল লক্ষ্যহীন। বার্সেলোনার জেরার্দ মার্তিন বল ধরে পাস দেন পাউ ভিক্তরকে। বক্সের বাইরে থেকে এই তরুণ ফরোয়ার্ডের নেওয়া শটে খুব বেশি জোর ছিল না, এররেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও জালে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি।
৭২তম মিনিটে সফল স্পট কিকে নিজের দ্বিতীয় গোলে ব্যবধান আবার বাড়ান বুদিমির। বক্সে তাকেই বার্সেলোনার তরুণ ডিফেন্ডার সের্গি দোমিঙ্গেস ফাউল করলে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। ৮৫তম মিনিটে স্কোরলাইন ৪-১ করেন ব্রেতোনেস। বক্সের বাইরে আলগা বল পেয়ে বাঁ পায়ের দারুণ শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।
নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে চমৎকার গোলে ব্যবধান কমান ইয়ামাল। বক্সের বাইরে থেকে তরুণ স্প্যানিশ উইঙ্গারের বাঁ পায়ের শট ওপরের কোণা দিয়ে জালে জড়ায়। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইয়ামালের গোল হলো ৫টি, অ্যাসিস্টও ৫টি।
সাত মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ দিকে দুটি সুযোগ পায় বার্সেলোনা। ইয়ামালের দুর্দান্ত ক্রসে দূরের পোস্টে ফেররান তরেসের হেড পোস্টে লাগে। আর কাছ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রাফিনিয়া। শেষ পর্যন্ত ৪-২ গোলের ব্যবধানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।
৮ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদ ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। অন্যদিকে ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে উঠেছে ওসাসুনা।