আর মাত্র ৪ দিন পরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। গোটা বিশ্বের চোখ এখন ওই নির্বাচনের দিকে। আগামী ৫ নভেম্বর এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এদিনই জানা যাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি কমলা হ্যারিস- কে হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট। এরই মধ্যে দেশটির তারকা ব্যক্তিত্বরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এবার নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে ভোট দেওয়ার কথা জানালেন ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও বিখ্যাত হলিউড অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দীর্ঘ একটি লেখায় এই তারকা লিখেছেন, আমি সত্যিই কারও পক্ষে ঢালাও সমর্থন দিচ্ছি না। তবে আমি আমার মতামত তুলে ধরতে লজ্জা পাই না, যদিও রাজনীতিকে ঘৃণা করি ও বেশিরভাগ রাজনীতিবিদদেরই বিশ্বাস করি না। আর, একজন রিপাবলিকান হওয়ার আগে, আমি সবসময়ই একজন আমেরিকান। আর তাই এবারের নির্বাচনে আমি কমলা হ্যারিস ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম ওয়ালজকে ভোট দিচ্ছি।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির হয়ে দীর্ঘ ৮ বছর ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন শোয়ার্জনেগার। সেসময়ে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি এটাও বুঝি যে লোকজন আমার কাছ থেকে শুনতে চায়, কারণ আমি শুধু একজন তারকা-ই নই, আমি একজন সাবেক রিপাবলিকান গভর্নর। গভর্নর থাকাকালীন আমি নিজস্ব কর্মপন্থা অনুসরণ করতে ও রাজনীতিকে উপেক্ষা করতে শিখেছিলাম।
‘বাতাস দূষণমুক্ত করা, চাকরির নতুন ক্ষেত্র তৈরি, বাজেটে ভারসাম্য বজায় রাখা, রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবকাঠামোগত বিনিয়োগ ও রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য যেসব কাজ করেছিলাম, সেজন্য আমি গর্বিত।’
শোয়ার্জনেগার বলেন, সৎভাবে বলতে গেলে, আমি এখন কোনো দলকেই পছন্দ করি না। আমার দল মুক্ত বাজারের সৌন্দর্য ভুলে গেছে, ঘাটতি তৈরি করেছে ও নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে, ডেমোক্রেটরা ঘাটতি মোকাবিলায় ভালো নয় ও আমি তাদের স্থানীয় নীতিগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন, যা আমাদের শহরগুলোতে অপরাধ বাড়িয়ে দিয়েছে।
এরপরেই তিনি ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে ভোট দেওয়ার কথা জানান। সেই সঙ্গে বিগত সময়ের বিভিন্ন নীতিমালার সমালোচনা করে বলেন, কয়েক দশক ধরেই আমরা জাতীয় ঋণ, ব্যাপক অভিবাসন সংস্কার, ত্রুটিপূর্ণ অভিবাসন ব্যবস্থার সংস্কার ও সীমান্তকে সুরক্ষা করার কথা বলে আসছি। অথচ কোনো দলই তেমন কিছুই করেনি।
পরোক্ষভাবে ট্রাম্পের সমালোচনা করে শোয়ার্জনেগার বলেন, এমন একজন প্রার্থী, যিনি তার পক্ষে না গেলে আপনার ভোটকে সম্মান করবেন না। একজন প্রার্থী, যিনি তার সমর্থকদের ক্যাপিটল ভাঙচুরের জন্য পাঠাবেন ও ডায়েট কোক পান করতে করতে তিনি সেই দৃশ্য উপভোগ করবেন! এমন একজন প্রার্থী ,যিনি অন্য কোনো নীতি পাস করার সক্ষমতা দেখাননি।
‘ট্যাক্স ছাড়, যা তার দাতাদের ও আমার মতো অন্যান্য ধনী ব্যক্তিদের সাহায্য করেছিল, কিন্তু সাধারণ মানুষের তেমন কাজে লাগেনি। একজন প্রার্থী, যিনি মনে করেন যেসিব আমেরিকানরা তার সঙ্গে একমত নন, তারা চীন, রাশিয়া বা উত্তর কোরিয়ার চেয়েও বড় শত্রু। এমন চিন্তা-ভাবনা আমাদের কোনো সমস্যার সমাধান করবে না।’