নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে তুষারপাত। নিউইয়র্ক সিটিতে গত ২১ ডিসেম্বর শনিবার তুষারপাত হয়। সঙ্গে ছিল বৃষ্টিপাত। হাঁড়কাপানো এই শীতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসে। আবহাওয়ার এই বৈরিতা চলতে পারে সপ্তাহজুড়ে। তীব্র বাতাসের মারাত্মক অবস্থা তৈরি হয় নিউইয়র্কের আপস্টেটের বিভিন্ন অংশ। এলাকাগুলো হচ্ছে- অ্যালগ্যানি, চাত্তারাউগান, কেউগা, চাউতাউকুয়া, এরি, গেনেসি, জেফারসন, লুইস, লিভিংস্টোন, মনরো, নায়াগ্রা, ওনটারিও, অরলিনস, অসওয়েগো ও অয়োমিং। তীব্র শীতের মধ্যেও বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭০ মাইল পর্যন্ত। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসব এলাকায় এক ফুট উচ্চতায় তুষারপাত হয়েছে।
নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর ক্যাথি হোকুল বলেছেন, আমি ও আমার প্রশাসন আবহাওয়ার পূর্বাভাসের দিকে নজর রাখছি। এই সময় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে আমাদের বন্ধু বা পরিবারের সদস্যরা যাতে উষ্ণতায় অবস্থান করতে পারে। চলতি সপ্তাহের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহ শীতের তীব্রতা থাকবে। ২৩ ডিসেম্বর সোমবার নিউইয়র্ক সিটিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা মাইনাস ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার তুষারপাতের আশঙ্কা রয়েছে ৮০ শতাংশ। আগামী ২৮ ডিসেম্বর শনিবারও তুষারপাত হতে পারে। পরদিন ২৯ ডিসেম্বর রোববার বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সপ্তাহের শেষ দিতে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
এদিকে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঠাণ্ডাজনিত রোগ বাড়তে শুরু করেছে। তীব্র এই শীতে বৃদ্ধ এবং শিশুদের উষ্ণতায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
তারা বলছেন, যাদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ আছে, তাদের ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই সময়টা বেশ জটিলতা তৈরি করে। সাধারণত শীতকালে ঠান্ডা, সর্দি-কাশিসহ অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব একটু বেশি দেখা যায়। ভাইরাসজনিত রোগ শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেকগুণ। তাই শীতে শিশু ও বয়স্কদের যত্ন নিতে তাদের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হয়। একটু অসাবধানতা ডেকে আনতে পারে অনেক বড় সমস্যা। শীতকালের অসুখের মূল কারণ বায়ুবাহিত বিভিন্ন রোগ-জীবাণু যা সহজেই ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশেষ করে শিশুদের সহজেই আক্রমণ করে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, শীতের এই সময়টা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়, যেমন কাশি, অ্যাজমা, সাময়িক জ্বর, কোল্ড অ্যালার্জি। এসময় বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকায় অনেকের অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষের কাশি কোল্ড এলার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক সময় শনাক্ত করা না গেলে সেটা অনেক সময় নিউমোনিয়াতে রূপ নিতে পারে। আর মাত্রাতিরিক্ত দূষিত ধোঁয়া ও ধুলা শিশুদের নিউমোনিয়া কিংবা ব্রঙ্কাইটিসের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ভালোভাবে হাত না ধুলে এর মাধ্যমে অনেক ব্যাধি ছড়ায়। এ সময় শিশুদের ভালোভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। কেননা, ঠাণ্ডা লাগার ভয়ে শিশু ভালোভাবে হাত না ধুলে সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ার জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়াার ভয় থাকে। অন্যদিকে বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায়, অল্প ঠাণ্ডায় তাদের নানা সমস্যা দেখা দেয়। বয়স্ক মানুষের কমন সমস্যা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা বা শ্বাসনালীর প্রদাহ। যা ঠাণ্ডা আবহাওয়াতে বাড়তে পারে। এজন্য ঠাণ্ডা থেকে তাদের দূরে থাকতে হবে।