২০ জানুয়ারি শপথ 

গণ ডিপোর্টেশন শুরু প্রথম দিনেই ডজনখানেক নির্বাহী আদেশ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:১৬

আর মাত্র কয়েকদিন পরে ২০ জানুয়ারি শপথ নিতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্যমতে ধারণা করা হচ্ছে শপথের পরদিনই ২১ জানুয়ারি প্রায় ডজন খানেক নির্বাহী আদেশ জারি করতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ট্রাম্প ও তাঁর ট্রানজেশন টিমের একাধিক সদস্যদের সাক্ষাৎকারে শপথের পর নির্বাহী আদেশ জারি ও বিল পাশের কথা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের গণ ডিপোর্টেশন, জন্ম সূত্রে নাগরিকত্ব বন্ধ, আইসিই’র গ্রেপ্তারী ক্ষমতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিদেশী পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি, ট্র্যাক্সসহ বিভিন্ন আইনে সংযোজন এবং সংশোধনে এসব নির্বাহী আদেশ জারী করা হবে। যার সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে।
ইতিমধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের গণ ডিপোর্টেশনে একাধিক পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বর্ডার জার খ্যাত টম হোম্যানকে সংযুক্ত করেছেন তিনি। আইসিই পরিচালকসহ ডিপোর্টেশনের কার্যক্রমের ডিপার্টমেন্টগুলো ঢেলে সাজিয়েছেন। নির্বাহী আদেশ জারীর প্রথম দিনেই ডিপোর্টেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নে অপরাধে যুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করে বিতাড়ন করা হবে। রোববার গণমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বর্ডার জার টম হোম্যান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সিবিএস নিউজকে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার হুমকি অবৈধ অভিবাসী অপরাধীদের বিতাড়নে প্রথম দিন থেকেই কাজ শুরু করবেন। অবৈধ অভিবাসী অপরাধীদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে পরে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে আমাদের দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যা আমরা দেখেছি গত ৪ বছর। এখন আমাদের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে এসব অপরাধীর যারা কারাগারে আছেন আর যারা জেলের বাহিরে আছে তাদের ডিটেক্ট করে গ্রেপ্তার করা। পরে ডিটেনশনের মাধ্যমে তাদের ডিপোর্টেশন করা হবে। এজন্য স্যাঙ্কচুয়ারি সিটির মেয়র ও কর্মকর্তাদের সাথে আমরা বৈঠক করেছি। যাতে অবৈধদের তথ্য পেতে ও গ্রেপ্তার করতে আইসিই’র কোন প্রতিবন্ধকতা না হয়।
টম হোম্যান আরো বলেন, ২০ লাখ অবৈধ অভিবাসী অপরাধী কোন গ্রেপ্তার, ফিঙ্গার প্রিন্ট ও তথ্য ছাড়া সীমান্ত দিয়ে আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে। এ ২০ লাখ অবৈধ অভিবাসী অপরাধীর অনেকেই গ্যাং তৈরী করে স্যাংঙ্কচুয়ারি (অভয়ারণ্য) সিটিতে বসে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের নেতৃত্ব দিচ্ছে। আইসিই তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছেনা, কারণ স্যাংঙ্কচুয়ারি সিটির অভয়ারণ্য আইনের কারণে অবৈধ অপরাধীদের আইসিই’র গ্রেপ্তারী ক্ষমতাকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছিলো। অথচ অবৈধ অভিবাসী অপরাধীরা এরাই রাষ্ট্রের জন্য হুমকি।  আমাদের কাছে তাদের তথ্য আছে। তালিকাও তৈরী হয়ে গেছে। প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণে প্রথম দিনেই তাদের গ্রেপ্তার করতে ঝাড় অভিযান চালাবে আইসিই। তাদের সহযোগিতা করতে প্রশাসনের সকল বিভাগ কাজ করবে। স্যাংঙ্কচুয়ারি সিটির প্রশাসন ও পুলিশ এ কার্যক্রমে আমাদের সাথে একমত রয়েছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নয় এমন অভিবাসীদের সন্তানদের জন্ম সূত্রে নাগরিকত্বের বিধান বাতিল করবেন নির্বাহী আদেশে। এ ছাড়া অবৈধ অভিবাসী যারা সন্তানদের নাগরিকত্বের সূত্রে বসবাস করছেন তাদেরকে ডিপোর্টেশন করা হবে এবং প্রয়োজনে তাদের সিটিজেন সন্তানদেরও অভিভাবকের সাথে পাঠানো হবে। এজন্য প্রয়োজনে আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর আইসিই তাদের কার্যক্রম দ্বিগুণ সক্রিয় করেছে। লোকবল সংকট এবং ডিটেনশন সেন্টার বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট সকল বিষয় প্রস্তুতি নিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও টম হোম্যানসহ ডিপোর্টেশন কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়েছেন। যার প্রভাব ইতোমধ্যেই দেখা গেছে। সম্প্রতি ১.৪ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসী অপরাধীকে ডিপোর্টেশনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন টম হোম্যান এবং গত বছরে আইসিই কর্তৃক অপরাধে অভিযুক্ত ও দন্ডপ্রাপ্ত অভিবাসী প্রায় ৭৪ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপরদিকে, অবৈধ অভিবাসী অভিভাবক ও তাদের কলেজ পড়ুয়া সিটিজেন সন্তানেরা নিজেদের শিক্ষা সহায়তা ফরমে তথ্য প্রকাশে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আছেন। কারণ তাদের তথ্য যদি ডিপোর্টেশন সংক্রান্ত দপ্তর ও আইসিই’র কাছে চলে যায় তাহলে তাদের অভিভাবকদের বিতাড়ন করা হতে পারে।