যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে শহরে ৫ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হতে পারে। আবহাওয়াবিষয়ক ওয়েবসাইট আকুওয়েদারের হিসাবে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিস্তীর্ণ এলাকা। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে হাজারো বাড়ি-গাড়ি। এখন পর্যন্ত অন্তত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধ হয়েছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল হতে যাচ্ছে এটি।
লস অ্যাঞ্জেলেসের পাঁচটি কাউন্টিতে জ্বলতে থাকা এ দাবানল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। দমকা বাতাসে আগুন নেভানোর চেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে। বাতাসে আগুন আরও বেড়ে যাচ্ছে। দাবানল এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে যে, যতটুকু নেভানো সম্ভব হচ্ছে, একই সময়ে তার চেয়ে অনেক বড় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।
এর মধ্যে দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ২৭ হাজার একর জায়গা। এই এলাকার একটি জিনিসও রক্ষা পায়নি। বুধবার (৮ জানুয়ারি) হলিউড হিলসে শুরু হওয়া এই দাবানলের শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে হলিউডের নামী-দামী তারকারাও।
জেনিফার অ্যানিস্টন, ব্র্যাডলি কুপার, টম হ্যাঙ্কস, বেন অ্যাফ্লেক, মাইকেল কিটন, অ্যাডাম স্যান্ডলারসহ অনেক সেলিব্রিটির বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন ঘরহারা। অভিনেত্রী ও মডেল প্যারিস হিলটনও দাবানলের জেরে গৃহহারা হয়েছেন।
এরই মধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার মানুষকে। তারা এখন ঘরছাড়া। আরও বাড়িঘর পুড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ঘটনাস্থলগুলোতে প্রবল বাতাস অগ্নিনির্বাপণের চেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করছে। প্যাসিফিক পালিসেডস এলাকায় পানির অভাবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস পানি ও বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, তিনটি বড় পানির ট্যাংকের মজুত শেষ হওয়ায় অনেক হাইড্র্যান্ট শুকিয়ে গেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, এই সংকট মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সময় লাগবে।
লস অ্যাঞ্জেলেস সিটি ফায়ার চিফ ক্রিস্টিন ক্রাউলি জানিয়েছেন, বাতাসের তীব্রতা পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক করে তুলছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্রুত সরিয়ে নিতে কাজ করছে উদ্ধারকারী দলগুলো।