যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মগত নাগরিত্ব আইন বাতিলের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ১৭টি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল। একই বিষয়ে মামলা করতে ওই অ্যাটর্নি জেনারেলদের সাথে যোগ দিয়েছেন মিশিগানের অ্যাটর্নি জেনারেল ডানা ন্যাসেলও।
ডানা ন্যাসেলের অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ আইন ১৪তম সংশোধনীর লঙ্ঘন। এ আইনে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যে কাউকে তাদের পিতা-মাতার অবস্থান, নির্বিশেষে নাগরিত্ব দেওয়া হয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে, ওয়াশিংটন ডিসি, সান ফ্রান্সিসকো সিটি, ম্যাসাচুসেটস, মিশিগানসহ ১৭টি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা মার্কিন জেলা আদালতে ট্রাম্পের জন্মগত নাগরিত্ব আইন বাতিলের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
রাজ্যগুলো একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ ও একটি প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আদেশটি কার্যকর হওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ চাইছে। ট্রাম্পের এই আদেশের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইনি অভিবাসন স্থিতি নেই এমন বাবা-মাসহ শিশুদের নাগরিকত্বের নথি প্রদান বা স্বীকৃতি দিবে না ফেডারেল সংস্থাগুলো।
অ্যাটর্নি জেনারেল ন্যাসেল বলেন, "জন্মগত নাগরিকত্ব হলো একটি মৌলিক অধিকার, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্মগ্রহণকারী সমস্ত আমেরিকানদের জন্য প্রদত্ত ঐতিহাসিক শিকড়। এতে রাষ্ট্র ও তাদের বাসিন্দাদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রয়েছে।"
নাগরিকত্ব ধারাটি ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই দেশে সাংবিধানিক আইন হিসাবে দাঁড়িয়েছে এবং দুইবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা বহাল রয়েছে। এটা হতাশাজনক যে এই সদ্য আগত প্রশাসনের প্রথম ঘন্টায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মার্কিন সংবিধানের বিরুদ্ধে আঘাত করছেন।
ন্যাসেলের অফিস থেকে প্রকাশিত বিবৃতি অনুসারে, এই ব্যক্তিরা সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর (সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর) পাওয়ার ক্ষমতাসহ বেশ কয়েকটি ফেডারেল প্রোগ্রামের যোগ্যতা হারাবেন। তারা আইনগতভাবে কাজ করার ক্ষমতা, ভোট দেওয়ার অধিকার, জুরিতে কাজ করা ও বিভিন্ন অফিসে কাজ করার ক্ষমতা হারাবে।
নাগরিকত্বের সংবিধানের গ্যারান্টি থাকা সত্ত্বেও হাজার হাজার শিশু প্রথমবারের মতো সকল সুযোগ সুবিধাসহ নাগরিক হিসাবে আমেরিকান সমাজের সম্পূর্ণ এবং ন্যায্য অংশ হওয়ার ক্ষমতা হারাবে। ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশ আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারী থেকে কার্যকর হবে।
এ আদেশে ফেডারেল এজেন্সিগুলোকে জানানো হয়েছে যে, তারা যেন মা-বাবার আমেরিকায় অভিবাসনের স্থিতি না থাকলে তাদের সন্তানদের যেন নাগরিকত্বের নথি ইস্যু না করেন। অভিবাসী অ্যাডভোকেসি সংস্থাগুলোর পক্ষে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন একই ধরনের নিউ হ্যাম্পশায়ারে আরেকটি পৃথক আইনি চ্যালেঞ্জ দায়ের করেছে বলে জানা গেছে। এপ্রিল মাসে প্রকাশিত হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের একটি প্রতিবেদন অনুমান করেছে যে, ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ লোক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসন স্থিতি ছাড়াই বসবাস করছে।