যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে অবাধ বাণিজ্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং শুল্কমুক্ত একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পক্ষে মত দিয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মাস্ক শনিবার (৫ এপ্রিল) ইতালির কট্টর-ডানপন্থি লীগ পার্টি আয়োজিত একটি সম্মেলনে ভিডিওর মাধ্যমে অংশ নিয়ে বাণিজ্য বাধা সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে কথা বলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর একগুচ্ছ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণার কয়েকদিন পর এমন মন্তব্য করলেন মাস্ক। ট্রাম্পের ঘোষণার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর, বিশেষ করে ইতালির আমদানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনাও রয়েছে।
মাস্ক বলেন, আদর্শগতভাবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েরই শূন্য শুল্ক ব্যবস্থার দিকে এগোনো উচিত, যা কার্যত ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তুলবে।
ইতালির লীগ নেতা মাত্তেও সালভিনির সঙ্গে আলাপকালে মাস্ক আরও বলেন, এই দুটি অঞ্চলের মধ্যে আরও বেশি মুক্ত চলাচলের সুযোগ থাকা উচিত।
তিনি বলেন, যদি কেউ ইউরোপে কাজ করতে চায় বা উত্তর আমেরিকায় কাজ করতে চায়, তাহলে তা করার অনুমতি দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। মাস্ক উল্লেখ করেন, এই মত তিনি ট্রাম্পের সঙ্গেও ভাগ করে নিয়েছেন।
মাস্ক এর আগেও ইউরোপের ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে সালভিনির লীগ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির দল ব্রাদার্স অব ইতালি এবং জার্মানির অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)। এর আগে শনিবার ইতালির অর্থমন্ত্রী জিয়ানকার্লো জর্জেত্তি, যিনি লীগ পার্টির সদস্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শুল্ক বিরোধের নিরসনের আহ্বান জানান এবং পালটা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফচোভিচ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের জবাবে ইইউ শান্তভাবে, সুপরিকল্পিত এবং ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।
ট্রাম্প তার সর্বশেষ শুল্ক পরিকল্পনাকে একটি ‘অর্থনৈতিক বিপ্লব’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, এই পদক্ষেপ শিল্প খাত এবং কর্মসংস্থানকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনবে।
এই শুল্ক ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার করোনাকালীন সময়ের পর সবচেয়ে খারাপ পতনের মুখে পড়ে এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেয়।
এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশ পালটা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে পাল্টা-পাল্টি শুল্কে বিশ্বব্যাপী একটি বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।