মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্মার্টফোন ও কম্পিউটারকে শুল্ক নীতির বাইরে রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সেই সিদ্ধান্ত বোধহয় দীর্ঘস্থায়ী হতে যাচ্ছে না। রবিবার (১৩ এপ্রিল) মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সেমিকন্ডাক্টর আমদানিতে শিগগিরই শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার নিজের ওয়েস্ট পাম বিচের বাড়ি থেকে ওয়াশিংটন ফিরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ট্রাম্প। প্রেসিডেনশিয়াল বাহন এয়ার ফোর্স ওয়ানের বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠান এই সিদ্ধান্তের বাইরে থাকতে পারে। কারণ আমরা চাই, দেশেই সেমিকন্ডাক্টর ও চিপ তৈরি হোক।
সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন যন্ত্রের মূল্যও বৃদ্ধি পেতে পারে। এক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে স্পষ্ট উত্তর দেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, দেখুন, কিছুক্ষেত্রে তো একটু নমনীয়তা দেখাতে হবে। কারোরই এতোটা কঠোর হওয়া উচিত নয়।
ওইদিনই আবার সেমিকন্ডাক্টর খাতে জাতীয় নিরাপত্তা বাণিজ্যের তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তিনি বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নিরাপত্তা শুল্ক তদন্তে আমরা সেমিকন্ডাক্টর ও পুরো ইলেক্ট্রনিক্স সরবরাহ শৃঙ্খল (সাপ্লাই চেইন) যাচাই করে দেখব।
গত শুক্রবার এক ঘোষণায় প্রযুক্তিখাতকে নতুন শুল্ক নীতির আওতার বাইরে রাখার ঘোষণা দিয়েছিল হোয়াইট হাউজ। তবে রবিবার ট্রাম্পের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছেন, চীন থেকে সেমিকন্ডাক্টর ও গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিপণ্যের আমদানিতে আগামী দুমাসের মধ্যে পৃথকভাবে শুল্ক আরোপ করা হবে।
এদিকে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে একেকবার একেক সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ছে শেয়ারবাজারে। ২০২০ সালের কোভিড মহামারির পর ওয়াল স্ট্রিটে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে গত কয়েক সপ্তাহে। স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুউরস ৫০০ এর সূচক গত ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের টালবাহানায় অস্বস্তি দেখা দিয়েছে তার দাতাগোষ্ঠী ও রিপাবলিকান শিবিরেও। যেমন ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণায় সমর্থনকারী ধনকুবের বিল অ্যাকম্যান তার শুল্ক নীতির সমালোচনা করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তিনি বলেছেন, অন্যান্য সব দেশের মতো চীনের ওপরেও আরোপিত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখা উচিত।
ট্রাম্পের দাবি, এইসব শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তিনি উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনতে চান। চীনের ওপর শুল্ক স্থগিত করেও সে উদ্দেশ্য হাসিল করা সম্ভব উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকম্যান লিখেছেন, ট্রাম্পের প্রধান উদ্দেশ্য তো ব্যবসা বাণিজ্য এবং সরবরাহ শৃঙ্খল চীন থেকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা। চীনের ওপর আরোপিত চড়া শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে সাময়িকভাবে ১০ শতাংশে নিয়ে আসলেও কোনও ঝুঁকি ছাড়াই একই উদ্দেশ্য পূরণ করা যাবে।