যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যা ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এক কিশোরের বিরুদ্ধে তার বাবা–মাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
উইসকনসিনের হাইস্কুল পড়ুয়া ১৭ বছর বয়সী এই কিশোরের নাম নিকিতা কাসাপ বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।কাসাপের বিরুদ্ধে তার মা তাতিয়ানা কাসাপ (৩৫) এবং সৎ বাবা ডনাল্ড মেয়ারকে (৫১) খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদেরকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ওই সময় নিকিতা বাড়িতে ছিলেন না। নব্য-নাৎসি ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ও নেটওয়ার্কের সদস্য ছিলেন এই কিশোর।
নতুন প্রকাশিত একটি তল্লাশি পরোয়ানায় বলা হয়েছে, তার ফোনে অর্ডার অব নাইন অ্যাঞ্জেলস নামের একটি নব্য-নাৎসি গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু পাওয়া গেছে এবং অ্যাডলফ হিটলারের প্রসংশাও রয়েছে।
তদন্তকারীরা ওই কিশোরের ইহুদিবিদ্বেষী কিছু লেখা এবং সরকারকে উৎখাতের বৃহত্তর লক্ষ্যের অংশ হিসাবে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার পরিকল্পনার বিস্তারিত বর্ণনাও পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে আদালতের নথিতে।
নিকিতার বিরুদ্ধে দুটি প্রথম শ্রেণির হত্যার অভিযোগ এবং অন্য আরও ৭ টি গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে আছে মৃরদেহ লুকানো এবং পরিচয় চুরির অভিযোগ।
তদন্তকারীরা বলছেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারিতে বাবা-মাকে খুনের পর দুজনের দেহ বাড়িতেই রেখে দিয়েছিলেন নিকিতা কাসাপ। স্থানীয় কর্মকর্তারা মিলওয়াকির কাছে ওয়াউকেসা গ্রামের কাসাপদের বাড়িতে গিয়ে মৃতদেহ খুঁজে পায়।
এই হত্যাকাণ্ডের দু’সপ্তাহ আগে থেকে নিকিতা স্কুলে যাননি। বাবা মেয়ারের মৃত্যু হয়েছিল মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে। আর মা তাতিয়ানা মারা গিয়েছিলেন কয়েকটি গুলিবিদ্ধ হয়ে।
মৃতদেহ পাওয়া যাওয়ার দিনই কানসাসে নিকিতাকে তার বাবা মেয়ারের ভক্সওয়াগেন অ্যাটলাস গাড়ি চালানোর সময় আটক করা হয়।
গাড়িতে মেয়ারের কেনা পয়েন্ট ৩৫৭ ম্যাগনাম পিস্তল, দম্পতির চারটি ক্রেডিট কার্ড, গয়না, একটি সিন্দুক এবং ১৪ হাজার ডলার ছিল বলে ফৌজদারি অভিযোগনামায় জানানো হয়েছে।
তদন্তকারীরা বলছেন, ট্রাম্পকে হত্যা ও তার সরকার ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা জোগাড়ের চেষ্টাতেই নিকিতা তার বাবা ও মা কে খুন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফেডারেল তদন্তকারীরা তিনটি অভিযোগের তদন্ত করছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, নিকিতার ফোনে প্রেসিডেন্টকে হত্যা, বোমা তৈরি এবং সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে বর্ণিত একটি ইস্তেহার সম্পর্কিত বিভিন্ন ছবি ও মেসেজ খুঁজে পাওয়া গেছে।
এফবিআই আরও জানায়, নিকিতার ফোনে একটি ছবি এবং বার্তা ছিল, যাতে ড্রোনকে কীভাবে আক্রমণাত্মক ড্রোন হিসেবে ব্যবহার করা যায়, সে তথ্য ছিল।
নিকিতা হামলা করার জন্য ড্রোন এবং বিস্ফোরক কিনতে কিছু অর্থ দিয়েছিল। তদন্তকারীরা আরও জানান, তারা মেয়ারের ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ডের সামনের এবং পিছনের ছবি এবং একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীর নাম ও পাসওয়ার্ডও পেয়েছেন।
আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, নিকিতা কাসাপ তার সহপাঠীকে জানিয়েছিলেন, তিনি রাশিয়ার একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং তারা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে উৎখাত এবং ট্রাম্পকে হত্যার পরিকল্পনা করছে।
ওয়াউকেশা কাউন্টির অভিযোগে বলা হয়েছে, তদন্তকারীরা নিকিতার ফোনে এমন মেজেস পেয়েছে যা ইঙ্গিত দেয়, এই কিশোর ইউক্রেইন চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।