যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর জন্য পানামা ও সুয়েজ খাল বিনা মাশুলে ব্যবহার করার দাবি জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (২৬ এপ্রিল) তিনি খাল কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে আহ্বান জানান ও দ্রুত অগ্রগতির জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এদিকে, ট্রাম্পের এই নতুন দাবি এরই মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য ও কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন। এবার তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ স্পষ্ট করে বলেন, মার্কিন সামরিক ও বাণিজ্যিক জাহাজকে পানামা ও সুয়েজ খাল দিয়ে বিনা মাশুলে চলাচলের অনুমতি দেওয়া উচিত। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া এই দুটি রুটের অস্তিত্বই থাকতো না।
পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো এই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, পানামা খালের টোল ফি ও বাণিজ্যিক রুট নিয়ন্ত্রণ করে খাল কর্তৃপক্ষ, যা একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। তবে মুলিনো তার পোস্টে ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ চলতি মাসের শুরুতে পানামা সিটি সফর করেন। তিনি জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি চুক্তির চেষ্টা করছে, যাতে তাদের যুদ্ধজাহাজগুলো বিনামূল্যে পানামা খাল ব্যবহার করতে পারে।
এদিকে, সুয়েজ খালের পরিস্থিতিও জটিল। ইউরোপ ও এশিয়াকে যুক্ত করা মিশরের এই খালটিতে হামলা চালাচ্ছে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা। ইসরায়েলের গাজা হামলার পর লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে হুতিরা জাহাজে হামলা চালাতে শুরু করে। ফলে অনেক জাহাজ বাধ্য হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘুরে যাতায়াত করছে, যার ফলে সময় ও ব্যয় বেড়ে গেছে।
মিশর জানিয়েছে, হুতিদের আক্রমণের কারণে গত বছর সুয়েজ খালের রাজস্ব আয় ৬০ শতাংশ কমেছে। এতে অন্তত ৭০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
হুতি বিদ্রোহীদের প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গত জানুয়ারি থেকে অভিযান চালাচ্ছে। ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব হামলা আরও জোরদার হয়েছে। তিনি বলেছেন, হুতিদের হুমকি দূর না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সূত্র: এএফপি